ঢাকা: উৎসবপ্রিয় বাঙালির প্রাণের উৎসব বাংলা বর্ষবরণ। প্রতিবছর বাংলা বছরের প্রথম দিনটিকে বরণ করে নিতে বাঙালিরা মুখিয়ে থাকে। আর এর প্রধান অনুষঙ্গ হলো মঙ্গল শোভাযাত্রা।
বছরের প্রথম দিনের প্রথম সকালে সারা বছরের মঙ্গল কামনায় মঙ্গল শোভাযাত্রা বের করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদ।
এই মঙ্গল শোভাযাত্রাকে ঘিরে চারুকলার এক প্রান্তে চলছে শিল্প কাঠামো নির্মাণের কাজ, অন্যপ্রান্তে চলছে শোভাযাত্রার ব্যয় নির্বাহের জন্য জলরঙ, সরাচিত্র, মুখোশ, পুতুল তৈরি ও বিক্রির কাজ। দিন-রাত বিরামহীন চলছে এ প্রস্তুতি।
পুরো চারুকলা এখন উৎসবমুখর। প্রতিবারের মতো এবারও প্রায় ১৫ দিন আগে শুরু হয়েছে মঙ্গল শোভাযাত্রার আয়োজন। পয়লা বৈশাখ উদযাপন করতে আর মাত্র ৩ দিন বাকি রয়েছে। তাই ছবি আঁকা, শিল্পকর্ম তৈরিতে ব্যস্ত আয়োজকরা।
তার পাশেই চলছে মঙ্গল শোভাযাত্রায় প্রদর্শনীর জন্য বিভিন্ন মুখোশ, পেঁচা, ঘোড়া, মূর্তি, ট্যাপা পুতুল, নকশি পাখি, বিভিন্ন প্রাণীর প্রতিকৃতি। এবার মঙ্গল শোভাযাত্রা চারুকলা অনুষদ থেকে সকাল ৯টায় বের করা হবে।
মঙ্গল শোভাযাত্রা শাহবাগ মোড় হয়ে পুনরায় চারুকলা অনুষদে গিয়ে শেষ হবে। এবার পহেলা বৈশাখে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে কোনো ধরনের মুখোশ পরা এবং ব্যাগ বহন করা যাবে না।
তবে চারুকলা অনুষদ কর্তৃক প্রস্তুতকৃত মুখোশ হাতে নিয়ে প্রদর্শন করা যাবে। বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে ভুভুজেলা বাঁশি বাজানো ও বিক্রি করা থেকে বিরত থাকার জন্য সকলের প্রতি অনুরোধ করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
এছাড়াও নববর্ষের দিন নিরাপত্তার স্বার্থে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে পর্যাপ্ত সিসি ক্যামেরা ও আর্চওয়ে স্থাপন করে তা মনিটরিং করার জন্য পুলিশ কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ জানিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন। উল্লেখ্য, ১৯৮৯ সালে চারুকলা অনুষদের উদ্যোগে প্রথমবারের মতো বের হয় মঙ্গল শোভাযাত্রা।
শুরুর বছরেই তা সাধারণ মানুষের দৃষ্টি আকর্ষণে সক্ষম হয়। এর পর থেকে এটা বাংলা বর্ষবরণের অপরিহার্য অনুষঙ্গ হয়ে ওঠে।
১৯৯৬ সাল থেকে চারুকলার এ আনন্দ শোভাযাত্রা ‘মঙ্গল শোভাযাত্রা’ নাম ধারণ করে। ২০১৬ সালের ৩০ নভেম্বর ইউনেস্কোর বিশ্বঐতিহ্যের স্বীকৃতি লাভ করে এ শোভাযাত্রা।