গত দু-বছরে অর্থাৎ ২০১৭ সাল থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশের রোহিঙ্গা শিবিরে শিশুর জন্মের হার অস্বাভাবিকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে।
বর্তমানে কক্সবাজারের উখিয়া টেকনাফের ৩২ টি ক্যাম্পে প্রায় ১১ লাখ রোহিঙ্গার বাস। বাংলাদেশে ২০১৭ সালের পূর্বে এবং পরবর্তী সময়ে আগত গত দু-বছরে মোট ৯১ হাজার শিশু জন্ম নিয়েছে।
জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক সংস্থা ইউএনএইচসিআর’র জনসংখ্যা বিষয়ক রিপোর্টে এ দুশ্চিন্তাজনক তথ্য উঠে এসেছে।
উল্লেখ্য, মায়ানমারে সংখ্যালঘু রোহিঙ্গাদের ওপর সেনাবাহিনীর অকথ্য নির্যাতনের হাত থেকে বাঁচার জন্যে ২০১৭ সালের ২৪ আগস্ট থেকে বাংলাদেশে তারা আশ্রয় গ্রহণ করেছে।
এর আগেও বহু রোহিঙ্গা এসেছে। কিন্তু ঝড়ের গতিতে আসা শুরু করে সে সময় থেকে।
বাংলাদেশ সরকারের সহযোগিতায় দেশি-বিদেশি উন্নয়ন সংস্থা তাদের খাবার এর ব্যবস্থা করছে।
পরিবার পরিকল্পনা অধিদফতরের কক্সবাজারের সহকারী পরিচালক ডাক্তার পিন্টু কান্তি ভট্টাচার্য্য বলেন, রোহিঙ্গাদের মধ্যে জন্ম নিয়ন্ত্রণের আগ্রহ অত্যন্ত কম। এছাড়া অধিকাংশই শিক্ষার আলো না পাওয়ার জন্যে তাদের বাস্তব বুদ্ধি কম।
ফলে দেখা যাচ্ছে, এক একটি পরিবারে সদস্য সংখ্যা গড়ে ১০ থেকে ১৫ জনের মতো!
এভাবে যদি রোহিঙ্গা শিবিরে নতুন মুখের আগমন ঘটতে থাকে তাহলে তা দেশের অর্থনীতি, স্বাস্থ্য এবং নিরাপত্তা ব্যবস্থার উপরে চরম চাপ তৈরি করবে।
সূত্রে জানা গেছে, রোহিঙ্গা শিবিরে আগত মধ্যবয়সের নারীরা প্রত্যেকে ১০/১২ টি সন্তানের মা। এর চেয়ে কমবয়সীদের নিদেনপক্ষে রয়েছে চার-পাঁচটি করে সন্তান। এর কারণ হচ্ছে তারা জন্মনিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থার সঙ্গে কখনো অভ্যস্ত নয়।
মায়ানমারে রোহিঙ্গাদের জন্ম নিয়ন্ত্রণের ব্যাপারে উৎসাহীও ছিল না। তারা সেখানে অচ্ছুত হয়েই ছিল বলা। রাষ্ট্রের কোনো দায় বা দায়িত্ব নেই তাদের ওপর।
২০১৮ সালের নভেম্বর মাসে রোহিঙ্গাদের স্বদেশে ফেরার কথা ছিল, কিন্তু তা কার্যকর না হবার পর ফের ২০১৯ সালের গত ২২শে আগস্ট মায়ানমারে যাবার জন্যে সমস্ত রকম প্রস্তুতি বাংলাদেশ থেকে নেয়া হয়ে গিয়েছিল। কিন্তু রোহিঙ্গারা কোনমতেই মায়ানমার সরকারের ওপর আস্থা রাখতে পারছে না। ফলে দ্বিতীয়বারের জন্যে বাতিল হয়ে গেল তাদের স্বদেশে ফেরা।
বাংলাদেশসহ ভারত যথেষ্ট চিন্তিত রোহিঙ্গাদের নিয়ে।
একদিকে বর্তমানেও মায়ানমার থেকে বাংলাদেশে রোহিঙ্গাদেশে রোহিঙ্গাদের ঢল, অন্যদিকে ব্যাপকহারে জন্ম!
যদিও বাংলাদেশ রোহিঙ্গা শিবিরগুলোতে সরকারি এবং বেসরকারি নানা সংস্থা জন্মনিয়ন্ত্রণের ব্যাপারে নানা পদক্ষেপ গ্রহণ করছে।