শিক্ষিকা হত্যার ঘটনার সত্যতা প্রকাশ্যে এল। বিগত ২১শে জুলাই, চাঁদপুর শহরের ষোলঘর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষিকা জয়ন্তী চক্রবর্তীকে ডিশ লাইনম্যান জামাল হোসেন ও মহাজন আনিছুর রহমান পালাক্রমে ধর্ষণের পর ভয়ানকভাবে খুন করেছে বলে স্বীকারোক্তি দিয়েছে।
রবিবার বিকেলে শহরের ওয়্যারলেস মোড়ে পিবিআই চাঁদপুর জেলা কার্যালয়ে প্রেস ব্রিফিং করে সাংবাদিকদের এ তথ্য জানানো হয়। পিবিআই চট্টগ্রাম বিভাগের বিশেষ পুলিশ সুপার মো. ইকবাল চাঞ্চল্যকর শিক্ষিকা হত্যার রহস্য এবং তথ্য তুলে ধরেন।
গত ২১শে জুলাই অলোক গোস্বামীর স্ত্রী শিক্ষিকা জয়ন্তী চক্রবর্তী (৪৫) কে ডিস লাইনম্যান জামাল হোসেন ও মহাজন আনিছুর রহমান ধর্ষণ করে। এবং ধারালো ছুরি দিয়ে হত্যা করে।
২২শে জুলাই তারিখে স্বামী অলোক চাঁদপুর মডেল থানায় অজ্ঞাতনামাকে আসামি করে হত্যা মামলা দায়ের করেন।
এর দু-দিন পর ২৪ শে জুলাই শিক্ষিকার ধর্ষণ এবং হত্যা মামলায় জড়িত সন্দেহে চাঁদপুর মডেল থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) অনুপ চক্রবর্তী জামাল হোসেনকে শহরের ষোলঘর হোটেল আল-রাশিদা এলাকায় নিজস্ব বাড়ি থেকে এবং আনিছুর রহমানকে ষোলঘর পাকা মসজিদের বিপরীত সড়কের বাড়ি থেকে আটক করেন।
৪ আগস্ট ঘটনাটি চাঞ্চল্যকর হত্যা মামলা হিসেবে তদন্তের জন্যে পিবিআই কর্তৃক অধিগ্রহণ করা হয়। পিবিআই পরিদর্শক মো. কবির আহমেদের নেতৃত্বে পিবিআই চাঁদপুরের একটি দল গ্রেপ্তারকৃত দুজন আসামিকে আদালতের নির্দেশে দু-দিনের রিমান্ডে নেয় পুলিশ।
জিজ্ঞাসাবাদের এক পর্যায়ে গিয়ে খুনি জামাল ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, ২১শে জুলাই আনিছুর ও জামাল ঘটনা সংঘটিত করার পূর্ব মুহূর্তে ইয়াবা ট্যাবলেট খেয়ে নেয়।
এরপর জয়ন্তী চক্রবর্তীর বাড়িতে এসে নিচতলার সানশেডে উঠে জামাল ডিসের লাইন নাড়াচাড়া করা আরম্ভ করে। ফলে জয়ন্তী দেবীর টিভিতে সমস্যা দেখা দেয়। তিনি বারান্দায় এসে অভিযুক্তদের টিভি দেখতে সমস্যা হচ্ছে বলে জানালে দুই খুনি সুকৌশলে বাড়িতে প্রবেশ করার জন্য লাইন ঠিক করার কথা বলে বাড়ির নিচের গেটের চাবি উপর থেকে ফেলতে বলে।
জয়ন্তী দেবী ভেবেছিলেন, সত্যিই বোধহয় তাঁরা টিভির লাইন ঠিক করতে এসেছে। ফলে তিনি চাবি ফেলে দেন।
এই সুযোগ পরক্ষণেই কাজে লাগায় আনিছুর-জামাল। ঘরে ঢুকে উপর্যুপরি ধর্ষণ করে শিক্ষিকাকে। এরপর জয়ন্তীদেবী এই ঘটনা জানাজানি করে দেবার কথা বললে ধারালো ছুরি দিয়ে তাঁর গলা কেটে ফেলে। এবং যাবার আগে প্রমাণ লোপাটের জন্যে মরদেহের গোপনাঙ্গে জল ঢেলে যায়।
নৃশংস হত্যাকাণ্ডে জড়িত দুই আসামির পরবর্তী শাস্তির অপেক্ষায় জনতা!