‘কখনো কখনো তোমার মুখটা বন্ধ রাখতে হবে । গর্বিত মাথাটা নত করতে হবে এবং স্বীকার করে নিতে হবে যে তুমি ভুল । এর অর্থ তুমি পরাজিত নও, এর অর্থ তুমি পরিণত এবং শেষবেলায় জয়ের হাসিটা হাসার জন্যে ত্যাগ স্বীকারে দৃঢ় প্রতিজ্ঞ ‘। হুমায়ুন আহমেদ ।
বাংলাদেশের নেত্রকোনায় জন্মগ্রহণ করা হুমায়ুন আহমেদ ছিলেন একাধারে ঔপন্যাসিক, ছোটগল্পকার, নাট্যকার, গীতিকার, চলচ্চিত্র নির্মাতা বাঙালি কথাসাহিত্যিকদের মধ্যে অন্যতম হুমায়ুন আহমেদের উপরোক্ত উক্তি আমাদের শিখিয়ে দিয়ে গেছে কঠিন বাস্তব জীবনে কিভাবে বাঁচতে হবে নিজের বলে ।
হুমায়ুন আহমেদের আজ ৭’তম মৃত্যুবার্ষিকী । তাঁকে গভীর শ্রদ্ধা এবং ভালবাসার সঙ্গে স্মরণ করছে সারা বিশ্ব ।
হুমায়ুন আহমেদ বাংলাদেশের স্বাধীনতা পরবর্তী অন্যতম শ্রেষ্ঠ লেখক । তিনি আধুনিক বাংলা বৈজ্ঞানিক কল্পকাহিনির পথিকৃৎ । তাঁর গ্রন্থ বিদ্যালয়-মহাবিদ্যালয়-বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঠ্যসূচীর অন্তর্ভুক্ত ।
তাঁর রচিত প্রথম উপন্যাস ‘নন্দিত নরকে’ । ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে পাকিস্তানি সেনাবাহিনী হুমায়ুন আহমেদকে আটক করে প্রচণ্ড নির্যাতনের পর গুলি চালনা করে । কিন্তু ‘রাখে হরি মারে কে’ ? লেখক, যোদ্ধা হুমায়ুন আহমেদ বেঁচে যান অলৌকিকভাবে ।
২০১২ সালে মাত্র ৬৪ বছর বয়সে তিনি ইহলোক ত্যাগ করেন ।
কিন্তু হুমায়ুন আহমেদ অমর হয়ে থাকবেন আপামর বাঙালি তথা বিশ্ববাসীর মনে তাঁর কর্মের দ্বারা, সোনার ধানের দ্বারা, স্বরচিত চরিত্রের দ্বারা, অনুকরণীয় উক্তির দ্বারা । যে উক্তি আমাদের বেঁচে থাকার রসদ, প্রেরণা যোগায় প্রতিনিয়ত ।
দেখে নেব এমনই কয়েকটি বিখ্যাত উক্তিঃ
# পৃথিবীতে সব নারীদের ডাক উপেক্ষা করা যায়, কিন্তু ‘মা’ এর ডাক উপেক্ষা করার ক্ষমতা প্রকৃতি আমাদের দেয়নি ।
# ভালবাসা একটা পাখি। যখন খাঁচায় থাকে তখন মানুষ তাকে মুক্ত করে দিতে চায় । আর যখন খোলা আকাশে তাকে ডানা ঝাপটাতে দেখে তখন খাঁচায় বন্দী করতে চায় ।
# দুঃসময়ে কোন অপমান গায়ে মাখতে হয় না ।
# মাঝে মাঝে আত্মার সম্পর্ক রক্তের সম্পর্ককেও অতিক্রম করে ।
# সবাই তোমাকে কষ্ট দিবে, কিন্ত তোমাকে এমন একজনকে খুজে নিতে হবে, যার দেয়া কষ্ট তুমি সহ্য করতে পারবে ।
# অধিকাংশ মানুষ কল্পনায় সুন্দর, অথবা সুন্দর দুর থেকে। কাছে এলেই আকর্ষণ কমে যায়। মানুষই একই। কারো সম্পর্কে যত কম জানা যায়, সে তত ভাল মানুষ।
# বাস্তবতা এতই কঠিন যে কখনও কখনও বুকের ভিতর গড়ে তোলা বিন্দু বিন্দু ভালবাসাও অসহায় হয়ে পড়ে।
# “যখন মানুষের খুব প্রিয় কেউ তাকে অপছন্দ, অবহেলা কিংবা ঘৃণা করে তখন প্রথম প্রথম মানুষ খুব কষ্ট পায় এবং চায় যে সব ঠিক হয়ে যাক । কিছুদিন পর সে সেই প্রিয় ব্যক্তিকে ছাড়া থাকতে শিখে যায়। আর অনেকদিন পরে সে আগের চেয়েও অনেকবেশী খুশি থাকে যখন সে বুঝতে পারে যে কারো ভালবাসায় জীবনে অনেক কিছুই আসে যায় কিন্তু কারো অবহেলায় সত্যিই কিছু আসে যায় না।”
# কিছু কিছু মানুষ ভাগ্যকে নিজের হাতে গড়ে, আবার কারো কারো কাছে ভাগ্য আপনি এসে ধরা দেয়!