ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে কোনভাবেই বাংলাদেশে নামতে দেয়া হবেনা বলে কঠোর হুঁশিয়ারি দিয়েছেন নানাকারণে আলোচিত-বিতর্কিত সংগঠন হেফাজতে ইসলামী বাংলাদেশ এর নেতৃবৃন্দ।
যদি ১৭মার্চ মোদির আমন্ত্রণ প্রত্যাহার করা না হয় তাহলে আল্লামা শফী হুজুরের নেতৃত্বে সারাদেশ থেকে জমায়েত হয়ে লংমার্চ করে বিমান বন্দর ঘেরাও করা হবে বলে ঘোষণা করেন হেফাজতে ইসলামী বাংলাদেশ এর যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা মাঈনুদ্দিন রুহী। গত শুক্রবার(৬ মার্চ) বাদ জুম্মা আন্দরকিল্লা জামে মসজিদের সামনে কড়া পুলিশী পাহাড়ায় বাংলাদেশে মোদির আমন্ত্রণ প্রত্যাহারের দাবীতে হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ আয়োজিত এক বিক্ষোভ সমাবেশ থেকে এ ঘোষনা দেয়া হয়।
প্রসঙ্গত: ২০১৩ সালে বাংলাদেশে একাত্তরের যুদ্ধাপরাধীদের ফাঁসির দাবিতে মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের একদল ছাত্র-তরুন-সাংস্কৃতিক কর্মীরা রাজধানী ঢাকার শাহবাগে তীব্র গনআন্দোলন শুরু করেছিল। যেটি ‘ শাহবাগের জনজাগরণ আন্দোলন’ নামেই ব্যাপক পরিচিতি ও জনপ্রিয়তা লাভ বরতে সক্ষম হয়। আর এি গনজাগরণ তখন শুধু ঢাকাতেই সীমাবদ্ধ থাকেনি। তা ছড়িয়ে গিয়েছিল সারা বাংলাদেশের আনাচে কানাচে। কিন্তু যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের দাবিতে বিক্ষুব্ধ তরুন সমাজের এই আন্দোলনকে নস্যাৎ করতে যুদ্ধাপরাধীদের দল বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীসহ বিএনপি এবং অন্যান্য ডানপন্থী দলগুলো কওমী মাদ্রাসাভিত্তিক বিতর্কিত সংগঠন ‘ হেফাজতে ইসলামী বাংলাদেশ’ নামে সংগঠনটিকে সারা বাংলাদেশের বিভিণœ স্থান থেকে রাজধানী ঢাকার শাপলা চত্বরে জমায়েত করে মূলত গনজাগরণের আন্দোলনকে নস্যাৎ করার জন্য।
হেফাজতে ইসলামী বাংলাদেশ এর প্রধান কুশীলব হচ্ছেন চট্টগ্রামে হাটহাজারিতে অবস্থিত দেশের সবচেয়ে বড় কওমী মাদ্রাসার প্রধান মাওলানা আহমদ শফি। তিনি নারী স্বাধীনতার ঘোরতর বিরোধী এবং তিনি নারীদেরকে তেতুলের সঙ্গে তুলনা করে চরমভাবে বিতর্কিতও হয়েছেন। শাপলা চত্বরে হেফাজতের সমাবেশ থেকে বাংলাদেশে পুরোপুরি ইসলামী শিক্ষা ব্যাবস্থা চালু, নারীদেরকে সম্পূর্ণভাবে পর্দার অন্তরালে রাখাসহ রাষ্ট্রীয় শাসন ব্যবস্থায় ইসলামী আইন চালুসহ ১৩ টি দফা দিয়ে সরকারকে অঅল্টিমেটামও দেয়া হয়। হামলা করা হয় শাহবাগের গনজাগরনঞ্চে। এরপর বাংলাদেশের আইনশৃঙ্খলা বাহিনী অত্যন্ত কৌশলে বলপ্রয়োগ করে উগ্রপন্থী এসব কওমীপন্থীদের সরিয়ে দেয়। তবে এরই মধ্যে হেফাজতে ইসলামীর উগ্র কর্মীরা রাজধানীর পল্টন, শাহবাগ, দোয়েল চত্বর মতিঝিলসহ বিভিণ এলাকার অসংখ্য ভবন, গাড়ি, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ব্যাপক ভাংচুর, অগ্নিসংযোগ এমনকি তাদের নিজেদের ধর্মীয় গ্রন্থ কোরআন শরীফেও আগুন লাগিয়ে তা বর্তমান আওয়ামীলীগ সরকারের ওপর দোষ চাপাতে চেয়েছিল। কিন্তু তখন সরকার অত্যন্ত কঠোর ও কৌশলতা অবলম্বন করে হেফাজতীদেরকে শাপলঅ চত্বও থেকে সরিয়ে দিতে পেরেছিল।
এদিকে গত ৬ মার্চ চট্টগ্রামের আন্দরকিল্লাহ্ শাহী জামে মসজিদের প্রাঙ্গনে অনুষ্ঠিত সমাবেশে হেফাজত ইসলামের নেতা ম্ওালানা মাঈঊদ্দীন রুহি বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবাষির্কী উদযাপন করা হবে। আমি অনুরোধ জানাই বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবাষিকী যথাযথভাবে উদযাপন হোক । প্রধানমন্ত্রীর ঊদেশ্যে বলেন, ‘ আপনি বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী, আপনি মুসলমানদের প্রধানমন্ত্রী, আপনি মুসলমানদের নেতা । আপনি যদি আপনার বাবার মৃত্যুবাষির্কীতে বায়তুল্লা শরীফের ইমাম সাহেবকে দ্ওায়াত করতেন বাংলার মুসুলমানরা আপনার সাথে থাকতেন । কিন্তু আপনি একজন কসাইকে একজন উগ্রবাদী প্রধানমন্ত্রীকে আমন্ত্রণ জানিয়েছেন’।
হেফাজতে’র এই নেতা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে উদ্দেশ্য করে আরো বলেন, ‘আমি স্পষ্ট ভাষায় বলতে চাই , বাংলাদেশের স্বাধীণতায় কসাই মোদীর কোন অবদান নেই , কোন যোগ্যতায় মোদীকে দ্ওায়াত দিয়েছেন ? বাংলাদেশের স্বাধীণতায় ইন্দিরাগান্ধী ্ও গান্ধীপরিবারের অবদান আছে । শ্রীলংকা , পাকিস্তান , নেপাল , ভুটানসহ সারা পৃথিবী কসাই খুনী মোদী ও দিল্লীর হত্যার বিরুদ্ধে । যদি ১৭মার্চ মোদির আমন্ত্রণ প্রত্যাহার করা না হয় মোদীকে আমন্ত্রণ জানালে আল্লামা শফী হুজুরের নেতৃত্বে সারাদেশ থেকে জমায়েত হয়ে লংমার্চ করে বিমান বন্দর ঘেরাও করা হবে।’