ঢাকা: দেশের দক্ষিণ জনপদ জেলা গোপালগঞ্জের কাশিয়ানীতে গাছের সঙ্গে বেঁধে গায়ে আগুনে পুড়িয়ে বৃদ্ধা সুফিয়া বেগমকে (৫০) মারা হয়েছে।
দগ্ধ অবস্থায় বুধবার তাঁকে Dhaka মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের Sheikh Hasina বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক ইউনিটে ভরতি করা হয়। চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান।
কাশিয়ানী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ফিরোজ আলম সাংবাদিকদের জানান, এই ঘটনায় প্রধান অভিযুক্ত ওই বৃদ্ধার দেবর অবসরপ্রাপ্ত পুলিশ সদস্য লিয়াকত মোল্লাকে (৫০) গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
ঢাকার কদমতলা এলাকায় অভিযান চালিয়ে কাশিয়ানী থানা পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করে।এর আগে মঙ্গলবার দুপুরে ওই নারীর ভাই আখতার হোসেন বাদী হয়ে কাশিয়ানী থানায় লিয়াকতসহ দুই জনের নাম উল্লেখ ও অজ্ঞাত আরও ২-৩ জনের নামে একটি মামলা দায়ের করেন।
কাশিয়ানী থানার ওসি ফিরোজ আলম বলেন, গোপালগঞ্জের পুলিশ সুপার আয়েশা সিদ্দিকার নেতৃত্বে একদল পুলিশ কাশিয়ানী থানায় অবস্থান করে প্রযুক্তির মাধ্যমে আসামির লোকেশন ট্রাকিং করেন।
তারপর তাকে Dhakaর কদমতলী এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করে আমাদের পুলিশ সদস্যরা। লিয়াকতকে রাতেই কাশিয়ানী থানায় আনা হয়েছে।
আজ বুধবার তাকে গোপালগঞ্জের আদালতে হাজির করে রিমান্ডের আবেদন করা হয়।মঙ্গলবার সকাল ১১টার দিকে কাশিয়ানী উপজেলার সাজাইল ইউনিয়নের বাঘঝাপা গ্রামে জমি সংক্রান্ত বিরোধের জেরে বড় ভাইয়ের স্ত্রী সুফিয়া বেগমকে বাড়ির উঠানের পেয়ারা গাছের সঙ্গে বেঁধে গায়ে আগুন ধরিয়ে দেন দেবর লিয়াকত মোল্লা।
স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে কাশিয়ানী ১০০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসার পর তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।
আগুনে ওই নারীর শরীরের ৯০ ভাগ পুড়ে যায় বলে কাশিয়ানী ১০০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. আমিনুল ইসলাম জানিয়েছেন।
বাঘঝাপা গ্রামের হিরন মোল্লা ও ইয়াকুব মোল্লা বলেন, এই গ্রামের অবসরপ্রাপ্ত পুলিশ সদস্য ইউসুফ আলী মোল্লার সঙ্গে তার আপন ভাই লিয়াকত মোল্লার দীর্ঘদিন ধরে পৈত্রিক সম্পত্তি নিয়ে বিরোধ চলছিল।
অভিযুক্ত লিয়াকত মোল্লাও একজন অবসরপ্রাপ্ত পুলিশ সদস্য। লিয়াকাত মোল্লা তার পৈতৃক সম্পত্তির প্রাপ্য অংশ আগেই বিক্রি করে অন্যত্র বসবাস করছেন।
কিন্তু এখনও তিনি পৈতৃক সম্পত্তি পাবেন বলে দাবি করছেন। এই নিয়ে দুই ভাইয়ের মধ্যে বিরোধ চলছিল। এই বিরোধের জেরে মঙ্গলবার লিয়াকত তার ভাবি সুফিয়া বেগমকে ঘর থেকে বাইরে এনে উঠানে থাকা পেয়ারা গাছের সঙ্গে বেঁধে তার গোয়ে আগুন ধরিয়ে দিয়ে পালিয়ে যায়।
১ বছর আগে লিয়াকত জমিজমা নিয়ে বিরোধের জেরে তার ভাবি সুফিয়া বেগমের চুল কেটে দেয়। সেটি সালিশের মাধ্যমে মীমাংসা হয়। গতকাল ওই নারীর ওপর লোমহর্ষক ও নৃশংস এ ঘটনা ঘটে।