টিকাটুলীতে রাজধানী সুপার মার্কেটে ভয়াবহ আগুন লাগার ঘটনা ঘটেছে। বুধবার বিকেল সোয়া ৫টার দিকে এ আগুন লাগার ঘটনা ঘটে। প্রায় দেড় ঘণ্টা পর রাজধানী সুপার মার্কেটের আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে। ফায়ার সার্ভিসের ২৫টি ইউনিটের ১৮০ জন কর্মকর্তা ও কর্মীচারীরা নিরলসভাবে কাজ করে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনেন।
জানা গেছে, টিকাটুলিতে রাজধানী সুপার মার্কেটে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। আগুন নিয়ন্ত্রণে ফায়ার সার্ভিসের ২৫টি ইউনিট কাজ করে। বুধবার সন্ধ্যা ৫টা ১৫ মিনিটে আগুনের সূত্রপাত। রাত ৬টা ৩৫ মিনিটে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনেন ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা।
তবে রাজধানীর টিকাটুলির সুপার মার্কেটে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে ৩০টি দোকান পুড়ে ছাই হয়েছে। আগুন নিয়ন্ত্রণে আসলেও রাত ৮টা পর্যন্ত ফায়ার সার্ভিসের ২৫টি ইউনিট কাজ করে। মার্কেটে আগুন লাগার পর দোকানমালিকেরা বাইরে সবাই কান্নাকাটি করতে দেখা গেছে। তারা বলছে, তাদের রুজি রুটি সব পুড়ে ছাই। প্রথমে একটি, দুটি করে পুড়তে পুড়তে ৩০টি দোকান পুড়ে ছাই হয়ে গেছে তাদের চোখের সামনে।
মার্কেটের কাপড়ের ব্যবসায়ী সাজেদা বেগম কান্না জড়িত কণ্ঠে বলেন, আমার স্বামী নেই। তিন বছর আগে মারা গেছে। দুই ছেলের পড়ালেখার খরচ এই দোকান থেকে বহন করতাম। আমার প্রায় ৪/৫ লাখ টাকার কাপড় ছিলো দোকানে। সব পুড়ে ছাই। আমি এখন খাবো কি? সংসার চালাবো কি করে, জানি না।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, প্রথমে দোতলার একটি ইউনিটে আগুন লাগার খবর পেয়ে লোকজন ছোটাছুটি শুরু করে। মার্কেটের দোতলায় যে পাশে আগুন লেগেছে সেখানে বেডশিট, কাপড়, টেইলার্সের ৩০-৩৫টি দোকান ছিল। অল্প সময়ের মধ্যে অন্য ইউনিটগুলোতে আগুন ছড়িয়ে পড়ে। রাজধানী সুপার মার্কেটে অগ্নিকাণ্ডের কারণে অভিসার সিনেমা হল সংলগ্ন রাস্তায় যান চলাচল বন্ধ করে দেয় আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা।
অপর একটি সূত্র জানায়, রাজধানী সুপার মার্কেটে আগুন লাগার কারণে টিকাটুলি এলাকায় বিদ্যুৎ ও গ্যাস সংযোগ বন্ধ করে দেয়া হয়। আগুন যাতে আশপাশে ছড়াতে না পারে সেজন্য ফায়ার সার্ভিস কাজ করে। মার্কেটের আশপাশে সালাউদ্দিন স্পেশালাইজড হাসপাতাল। আশপাশে কয়েকটি রেস্টুরেন্ট আছে, যেখানে সিলিন্ডার থাকতে পারে। তাই বিদ্যুৎ ও গ্যাস সংযোগ বন্ধ করে দেয়া হয়। মার্কেটটি টিনশেডের তাই আগুন নিয়ন্ত্রণে ফায়ার সার্ভিসের কিছুটা বেগ পেতে হয়। এছাড়া মার্কেটের দুই পাশে দোকান, মাঝে সরু গলি রয়েছে।
রাজধানী সুপার মার্কেটের দোতলার দোকানি আয়নাল হোসেন জানান, পরিবহন শ্রমিকদের ধর্মঘটের কারণে অনেক পার্টি আসতে পারেনি। মার্কেটে লোক স্বাভাবিকের চেয়ে কম ছিল। আগুনের খবর পেয়ে প্রথমে আমরা আগত ক্রেতাদের বের করার চেষ্টা করি। পরে নিজেরা বের হই। তবে আগুনকে কেন্দ্র করে এলাকায় অনেক উৎসুক জনতা ভিড় করে। তাদের সরিয়ে দেয়ার চেষ্টা করে পুলিশ।
ফায়ার সার্ভিস সদর দপ্তরের ডিউটি অফিসার পলাশ চন্দ্র মোদক জানান, প্রাথমিকভাবে আগুনের খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের ১৪টি ইউনিট পাঠানো হয়। পরে ঘটনাস্থল থেকে আরও চাওয়া হলে ৬ ও ২টি গাড়ি পাঠানো হয়। পরে আরও তিনটি ইউনিট এসে যুক্ত হয়। তবে আগুন নিয়ন্ত্রণে মোট ২৫টি ইউনিট কাজ করে ৬টা ৩৫ মিনিটে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনেন। আগুন লাগার কারণ বা ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ সম্পর্কে তাৎক্ষিণকভাবে কিছুই জানাতে পারেননি ফায়ার সার্ভিসের এই কর্মকর্তা।
ফায়ার সদর দফতরের উপ-পরিচালক দেবাশিষ বর্ধন জনান, আগুন লাগার কারণ বা ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ জানা যায়নি। মার্কেটের দ্বিতীয়তলা থেকে আগুনের সূত্রপাত বলে তিনি ধারণা করছেন।