করোনাভাইরাস মহামারী ঠেকানোর অদ্ভুত এক যুদ্ধে নতুন বছর উদযাপনে বাঙালির উৎসবের রঙও হারাল। আজ নতুন বছরের আগমনী বার্তা ঘোষিত হবে না ঢাকার রমনার বটমূল থেকে, বর্ণিল মঙ্গল শোভাযাত্রাও বের হবে না চারুকলা থেকে, উৎসবেও মাতবে না বাংলাদেশের প্রান্ত থেকে ওপ্রান্ত। তবুও সূর্যোদয়ের সঙ্গে সঙ্গে ঘরে ঘরে ক্যালেন্ডারের পাতা ওল্টাবে, শুরু হবে ১৪২৭ সাল। তবে এমন বর্ষবরণ আগে দেখেনি কেউ।
ফসলি সন হিসেবে মুঘল আমলে যে বর্ষগণনার সূচনা হয়েছিল, সময়ের পরিক্রমায় তা বাঙালির সার্বজনীন উৎসবে রূপ নেয়; শুধু তাই নয় অসাম্প্রদায়িক চেতনায় বলীয়ান করে বাঙালিকে লড়াইয়ের প্রেরণাও দিয়ে আসছে এই উৎসব। আনন্দের এই দিনটি নিরানন্দের করে দিয়েছে নভেল করোনাভাইরাস। যা বিশ্বে মহামারীর রূপ নেওয়ার পর বাংলাদেশেও হানা দিয়েছে। আক্রান্ত করেছে আট শতাধিককে, মৃত্যুও ঘটিয়েছে ৩৯ জনের। এই পরিস্থিতিতেও বর্ষবরণের আয়োজন নিজ নিজ ঘরেই করার আহ্বান এসেছে রাষ্ট্র ও সরকার প্রধানের কাছ থেকে; কারণ আনন্দের চেয়ে সতর্কতার উপরই এখন জোর দেওয়া হচ্ছে।
তবে আজ পহেলা বৈশাখে সকাল ৭টা থেকে অনুষ্ঠানগুলো বিটিভিসহ ছায়ানটের ওয়েবসাইট ও ফেইসবুক পেইজ এবং বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেলে সম্প্রচার করা হবে। অনুষ্ঠান শেষে ছায়ানটের সভাপতি সনজীদা খাতুন এবারের নববর্ষের পটভূমিতে বক্তব্য রাখবেন। তবে মঙ্গল শোভাযাত্রা না হলেও সময়ের প্রেক্ষিতে ভয় জয়ের আহ্বান জানিয়ে একটি পোস্টার বের করেছেন আয়োজকরা। কালো রঙের সেই পোস্টারে কালজয়ী কথাসাহিত্যিক আর্নেস্ট হেমিংওয়ের ‘দি ওল্ড ম্যান অ্যান্ড দ্য সি’ সেই কথাটি স্লোগান হিসেবে স্থান পেয়েছে-‘মানুষ ধ্বংস হতে, কিন্তু পরাজিত হয় না’।