কথায় আছে ‘ইজ্জত যায় না মলে, আর কয়লা যায় ধুলেও। মায়ানমারের রোহিঙ্গাদের বেলায় এ প্রবাদটি ষোল আনা খাঁটি। দেশে সেনা বাহিনীর হাত থেকে জীবন বাঁচাতে বাংলাদেশে এসে আশ্রয় নিয়েও জেল-হাজত উপেক্ষা করে কিছু রোহিঙ্গা দুষ্কৃতি অনবরত অপকম চালিয়েই যাচ্ছে। মায়ানমার থেকে চোরাচালানের মাধ্যমে মাদক ও অস্ত্র বাংলাদেশে আন ছে। নিজেদের শিবির থেকে রোহিঙ্গা তরুণী-যুবতীদের বিদেশে পাচার করছে।
খুন-খারাবি তো লেগেই আছে। মায়ানমারে ও বাংলাদেশে আশ্রিত রোহিঙ্গা জঙ্গিদের মদত দিচ্ছে পাকিস্তানের কুখ্যাত গুপ্তচর সংস্থা আইএসআই। মায়ানমারের জঙ্গি সংগঠন আরাকান রোহিঙ্গা সালভেশন আর্মি তথা আরসা-কে মদত দিচ্ছে তারা। আর সেই প্রভাব এসে পড়ছে বাংলাদেশের রোহিঙ্গা শিবিরগুলিতে। বিগতদিনে শরণার্থীদের মধ্যে জঙ্গিদের তৎপরতা বেড়েছে বলেও একাধিক রিপোর্টে জানিয়েছে বাংলাদেশের গোয়েন্দারা সংস্থাগুলি। এহেন পরিস্থিতিতে শরণার্থী শিবিরে ফের রোহিঙ্গা নেতা খুন হওয়ায় রীতিমতো উদ্বিগ্ন দেশের প্রশাসন ও নিরাপত্তামহল।
রবিবার রাতে টেকনাফ উপজেলার হ্নীলা ইউনিয়নের নয়াপাড়া নিবন্ধিত রোহিঙ্গা ক্যাম্প সংলগ্ন এ হত্যাকাণ্ড ঘটে। ধারণা করা হচ্ছে, আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্রে করে এটি ঘটেছে। সোমবার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ১৬ এপিবিএন এর অধিনায়ক এডিআইজি হাসান বারী নূর। নিহত ইব্রাহিম টেকনাফের নয়াপাড়া নিবন্ধিত রোহিঙ্গা শিবিরের সি-ব্লকের বাসিন্দা আব্দুর রাজ্জাকের ছেলে। এপিবিএন জানায়, ইব্রাহিম এক সময় রোহিঙ্গা সন্ত্রাসী সংগঠন ‘জকির বাহিনীর’ হয়ে কাজ করত।
স্থানীয়দের বরাতে এডিআইজি হাসান বারী নুর বলেন, ‘পাহাড়ি এলাকায় রোহিঙ্গাদের দুই সন্ত্রাসী দলের মধ্যে গোলাগুলির খবর দেয় স্থানীয় বাসিন্দারা। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছলে সন্ত্রাসীরা পালিয়ে যায়। এসময় ঘটনাস্থল থেকে একজনকে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় উদ্ধার করা হয়। পরে গুরুতর অবস্থায় তাকে টেকনাফ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখান থেকে তাকে কক্সবাজার জেলা সদর হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়। কিন্তু হাসপাতালে পৌঁছার আগেই ওই ব্যক্তি মারা যান।’ তিনি আরও বলেন, ‘ঘটনায় জড়িতদের চিহ্নিত করার কাজ শুরু করা হয়েছে। তাদের আটকে পুলিশের অভিযান অব্যাহত রয়েছে। নিহতের লাশ ময়নাতদন্তের জন্য কক্সবাজার সদর হাসপাতাল মর্গে রাখা হয়েছে।’ এ কাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে একজনকে আটক করেছে আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন (এপিবিএন)।