ঢাকা: বাংলাদেশ থেকে প্রতি বছর গড়ে প্রায় ১৭ লক্ষাধিক এদেশের নাগরিক ভারতে গিয়ে থাকেন। এরা মূলতঃ চিকিৎসা, শিক্ষা, ভ্রমণ ও আত্মীয় স্বজনের সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে যান।
ভিসা প্রাপ্তির দীঘসূত্রিতার কারণে ভারতে বাংলাদেশিদের ভিসামুক্ত যাতায়াত নিশ্চিতে দেশটির বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্করকে অনুরোধ করা হয়েছে বলেও জানান আবদুল মোমেন।
বাংলাদেশ-ভারতের মধ্যে ভিসামুক্ত ভ্রমণের বিষয়ে প্রস্তাব ভারতের বিদেশমন্ত্রীর কাছে তুলে ধরা হয়েছে বলে জানিয়েছেন বিদেশমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন। তিনি কলম্বোয় ইন্ডিয়ান ওশান রিম অ্যাসোসিয়েশন (আইওআরএ ) এ সম্মেলনের সাইড লাইনে ভারতের বিদেশমন্ত্রী ড. এস জয়শঙ্করের সঙ্গে আলোচনাকালে এ প্রস্তাব তুলে ধরেন।
আবদুল মোমেন জানান, এ সময় তাঁকে আমি বলেছি, আপনারা অনেক ভিসা দেন। কিন্তু ভিসা পেতে এখন দেরি হচ্ছে। মেডিক্যাল ভিসার ক্ষেত্রেও দেরি হচ্ছে। তখন তিনি বলেন, এ বিষয়ে ঢাকায় হাইকমিশনের সঙ্গে আলাপ করবেন। সিলেটে কয়েকদিন আগে বাংলাদেশ-ভারতের মধ্যে সংলাপ হয়েছে।
সেখানে দুই দেশের মধ্যে ভিসামুক্ত ভ্রমণের জন্য প্রস্তাব তোলা হয়েছে। আমরা দুই দেশের মধ্যে ভিসামুক্ত যাতায়াত চাই। এস জয়শঙ্কর বলেছেন, এটা নিয়ে পরীক্ষানিরীক্ষা করতে হবে। তিনি ‘না’ বলেননি।
বিদেশমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন বলেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র কোনো দেশেই নিষেধাজ্ঞা দিয়ে সফল হয়নি। মন্ত্রী আরও বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জ্যাক সুলিভানের সঙ্গে আমাদের সুন্দর আলোচনা হয়েছে।
যে সাংবাদিক লিখেছেন আলোচনা মাঝপথে থেমে গিয়েছিল তিনি মিথ্যাবাদী। বৃহস্পতিবার বিকালে বিদেশ মন্ত্রকে আয়োজিত সাপ্তাহিক ব্রিফিংয়ে এসব কথা বলেন মোমেন।
ব্রিফিংয়ে তিনি বলেন, অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন নিশ্চিতে বাংলাদেশ সরকার কী উদ্যোগ নিয়েছে, সে বিষয়ে জানতেই মার্কিন প্রাক-নির্বাচনি পর্যবেক্ষক দল বাংলাদেশে এসেছে। তাদের কাছে দেশের নির্বাচনি পরিস্থিতি তুলে ধরা হয়েছে, সব বিষয় তাদের ইতিবাচক মনে হয়েছে।
মোমেন আরও বলেন, ২৪ অক্টোবর ব্রাসেলসে আন্তর্জাতিক সম্মেলন গ্লোবাল গেটওয়ে ফোরামে যোগ দেবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এ সময় ইউরোপীয় কমিশনের প্রেসিডেন্টের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর বৈঠকের কথা রয়েছে।
দ্রুত ভিসাঃ সহজে ও দ্রুত সময়ের মধ্য রোগী ও তার স্বজনদের মেডিক্যাল ভিসা দেওয়ার উদ্যোগ নিয়েছে দেশের উত্তরাঞ্চলের বিভাগীয় শহর রাজশাহীর ভারতীয় সহকারী হাইকমিশন। রবিবার থেকে ভারতীয় সহকারী হাইকমিশনে আবেদনকারীর কাগজপত্র পৌঁছানোর পরের কার্যদিবসেই তাদের মেডিক্যাল ভিসা দেওয়া হবে।
সহকারী হাইকমিশনার মনোজ কুমার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, রবিবার থেকে যাদের ভিসা আবেদন পেয়েছেন, যাচাই-বাছাই শেষে তারা পরের কার্যদিবসে ভিসা পাচ্ছেন। এতে রোগীরা উপকৃত হবেন জানিয়ে মনোজ কুমার বলেন, ‘আমরা দ্রুত ভিসা দেওয়ার চেষ্টা করছি।
সবার উচিত হবে বৈধ কাগজপত্র দিয়ে সঠিকভাবে আবেদন করা। এক্ষেত্রে কোনও ধরনের অনিয়ম কিংবা জালিয়াতি করলে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’ভারতের যে কোনও ধরণের ভিসা পাওয়ার ক্ষেত্রে এখন অনলাইনে আবেদন করতে হয়। তখনই আবেদনকারীকে তার কাগজপত্র জমা দেওয়ার তারিখ দিয়ে দেওয়া হয়।
নির্ধারিত দিনে আবেদনকারীরা রাজশাহী নগরীর বর্ণালী মোড়ে ভারতীয় ভিসা আবেদন কেন্দ্রে গিয়ে কাগজপত্র জমা দেন। সেদিনই এসব কাগজপত্র রাজশাহীতেই সহকারী হাইকমিশনে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। রবিবার থেকে এ দফতরে কাগজপত্র যাওয়ার পরের কার্যদিবসেই মিলছে মেডিক্যাল ভিসা।