ঢাকাঃ বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকার উত্তরা এলাকায় একটি প্রাইভেটকারের ওপর ক্রেন থেকে গার্ডার (ভায়াডাক্ট) পড়ে পাঁচজন নিহত কাণ্ডে এবার চিনা ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান গ্যাঝুবা গ্রুপ করপোরেশনের (সিজিজিসি) সংশ্লিষ্ট আধিকারীক ও ক্রেনচালকের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে।
এর আগেও এ ধরনের একাধিক দুর্ঘটনায় বহু লোকের প্রাণহানী ঘটেছে।এদিকে ঢাকার উত্তরায় নির্মাণাধীন বাস র্যাপিড ট্রানজিট (বিআরটি) প্রকল্পের ফ্লাইওভারের গার্ডার দুর্ঘটনায় হতাহত কাণ্ডে দায়ীদের খুঁজে বের করে শাস্তির আওতায় আনতে কড়া নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
মঙ্গলবার ঢাকায় জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) বৈঠকে তিনি এ নির্দেশ দেন। সোমবার বিকেল ৪টা ২০ মিনিটে উত্তরার জসীমউদ্দীন এলাকায় আড়ংয়ের সামনে ক্রেন দুর্ঘটনা ঘটে।
অবহেলাজনিত মৃত্যুর অভিযোগে মঙ্গলবার ভোরে এ মামলা দায়ের করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন উত্তরা পশ্চিম থানার ভারপ্রাপ্ত আধিকারীক মোহাম্মদ মহসিন। এ কাণ্ডে নিহত ফাহিমা ও ঝর্নার ভাই আফরান মণ্ডল বাবু বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেছেন। মামলায় চিনা প্রতিষ্ঠানের সংশ্লিষ্ট আধিকারীকদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে।
এ অবহেলার পেছনা যারা জড়িত, তাদের চিহ্নিত করে গ্রেপ্তারের জন্য আমরা অভিযান চালাচ্ছি।’ জড়িতদের খুঁজে বের করতে ইতিমধ্যে তদন্ত শুরু হয়েছে। অবহেলার অভিযোগ এনে ক্রেনের চালক, চিনা ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি এবং নিরাপত্তা নিশ্চিতে দায়িত্বপ্রাপ্ত অজ্ঞাত ব্যক্তিদের আসামি করা হয়েছে।
মামলার বাদী আফরান মণ্ডল বাবু বলেন, বাস র্যাপিড ট্রানজিট (বিআরটি) প্রকল্পে একটি চাইনিজ ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান সিজিজিসি কাজ করছে। এই কাজের অংশ হিসেবে ঢাকা ময়মনসিংহ মহাসড়কের ঢাকা থেকে গাজীপুরগামী রাস্তায় বক্সগার্ডার একটি ক্রেনের সাহায্যে লোবেট ট্রাকে ওঠানো হচ্ছিল।
প্রয়োজনীয় নিরাপত্তা ব্যবস্থা না নিয়ে সড়কে যান চলাচলের সময় ঝুঁকিপূর্ণভাবে কাজ করা হচ্ছিল। তাঁর স্বজনদের বহনকারী গাড়িটি ঘটনাস্থলে পৌঁছালে বক্স গার্ডার গাড়িটির চালকের আসনসহ পেছনের আসনের অর্ধেকের বেশি অংশ জুড়ে আছড়ে পড়ে। ফলে ঘটনাস্থলেই গাড়িটি দুমড়ে মুচড়ে যায় এবং গাড়িতে থাকা ৭ জনের মধ্যে ৫ জন নিহত হন।
ক্রেনের চালক, সিজিসিসি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা এবং নিরাপত্তা নিশ্চিতে দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তিদের অবহেলার কারণে এ দুর্ঘটনা ঘটেছে। এ জন্য মামলায় তাঁদের আসামি করা হয়েছে।হতাহতরা ঢাকায় একটি বৌভাতের অনুষ্ঠানে অংশ নিয়ে ফিরছিলেন।
ফায়ার সার্ভিস জানায়, গাড়িটিতে মোট সাতজন যাত্রী ছিলেন। এরমধ্যে দুই শিশু, দুই নারী ও একজন পুরুষ নিহত হয়েছেন।এদিকে নগরবাসীর চলাচলে নিরাপত্তার বিষয়গুলো ঠিক না হওয়া পর্যন্ত বাস র্যাপিড ট্রানজিট (বিআরটি) প্রকল্পের সব কাজ বন্ধ থাকবে বলে জানিয়েছেন ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) মেয়র আতিকুল ইসলাম।