ঢাকা: বাংলাদেশের (Bangladesh) উত্তর জনপদ জেলা নাটোরের সিংড়ায় এক কলেজছাত্রীকে অপহরণ করে নিয়ে গণধর্ষণের দায়ে ছয়জনের মৃত্যুদণ্ড ও চারজনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত।
একই সঙ্গে দণ্ডপ্রাপ্ত সবাইকে এক লাখ টাকা করে জরিমানাও করা হয়েছে। বুধবার দুপুরে নাটোরের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক নাটোর জেলা ও দায়রা জজ মুহাম্মদ আবদুর রহিম এ আদেশ দেন।
মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্তরা হল- মো. সাব্বির আহমেদ, মো. রেজাউনুল ওরফে রাব্বি, মো. নাজমুল হক, মো. রাজিবুল হাসান, মো. রিপন ও মো. শহিদুল ইসলাম। যাবজ্জীবন দণ্ডিতরা হল— মো. মনিরুল ইসলাম, মো. খায়রুল ইসলাম, আতাউল ইসলাম, মো. রেজাউল করিম। জরিমানার পুরো টাকা সেই কলেজছাত্রীকে দেওয়ার জন্য নিদের্শ দেওয়া হয়েছে।
মামলা সূত্রে জানা গেছে, ২০১২ সালে ওই মেয়েটি রাজশাহীর একটি সরকারি কলেজে একাদশ শ্রেণিতে পড়ত। ২০১২ সালের ১৯ অক্টোবর কলেজে জরুরি কাজের কথা বলে সে বাড়ি থেকে বের হয়ে যায়।
এ সময় পূর্ব পরিচয়ের সূত্র ধরে বড়াইগ্রাম উপজেলার ধানাইদহ গ্রামের মোস্তাফিজুর রহমানের ছেলে মো. সাব্বির আহমেদ তাকে ফুসলিয়ে অপহরণ করে সিংড়া পেট্রোবাংলা এলাকায় অবস্থিত একটি ছাত্রাবাসে নিয়ে যায়।
সেখান থেকে অন্য আসামিসহ দুটি ভ্যান গাড়িতে করে বেড়ানোর কথা বলে উপজেলার কলম মির্জাপুর গ্রামের দিকে নিয়ে যায়। পরে সবাই মিলে রাত সাড়ে ৯টার দিকে কলম মির্জাপুর গ্রামের ইদগাহ মাঠের পাশে নিয়ে দফায় দফায় গণধর্ষণ করে।
পরে অচেতন অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখে এলাকাবাসী উদ্ধার করে হাসপাতালে নেয় এবং পুলিশ ও তার পরিবারকে খবর দেয়।এ বিষয়ে অপহরণ ও গণধর্ষণের অভিযোগে ১১ জনের নামে মামলা করলে আদালত দীর্ঘ সাক্ষ্যপ্রমাণ শেষে আনিসুর রহমান নামে একজনকে খালাস এবং অপর ১০ জনকে দণ্ড প্রদান করেন। মো. সাব্বির আহমেদ, রাজিবুল হাসান খালাসপ্রাপ্ত নাসির পলাতক রয়েছে।
২১ বছর শুনানি শেষে যাবজ্জীবনঃ এদিকে একই জেলা নাটোরে এক কিশোরীকে ধর্ষণের মামলায় রাজা হোসেন (৪৩) নামে এক যুবককে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। নাটোরের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক আব্দুর রহিম এ রায় দেন।
দণ্ডপ্রাপ্ত রাজা হোসেন জেলার লালপুর উপজেলার আবদুলপুর জংশন এলাকার ধনজয়পাড়ার মজিবুর রহমানের ছেলে। নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল সূত্র জানায়, ২০০২ সালের ৩ জুলাই ওই কিশোরী রাজশাহীতে মামাতো বোনের বাড়িতে বেড়ানো শেষে ট্রেনে করে আবদুলপুর স্টেশনে নামে।
এ সময় রাজা মাধবপুর এলাকার একটি আখখেতে নিয়ে তাকে ধর্ষণ করে। এর পর বিভিন্ন স্থানে রেখে দুদিন পর ওই কিশোরীকে তার চাচার বাড়ির সামনে রেখে চলে যায়। কিশোরীর কাকী বাদী হয়ে থানায় ধর্ষণের মামলা করেন।
দীর্ঘ ২১ বছর শুনানি শেষে সাক্ষ্যপ্রমাণে বিষয়টি সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হওয়ায় আদালত রাজা হোসেনকে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড ও ২০ হাজার টাকা জরিমানা করেছেন। একই সঙ্গে জরিমানার অর্থ ভুক্তভোগী কিশোরীকে দেওয়ার নির্দেশ দেন।