ঢাকা: ‘বিশ্বজুড়ে ডলার সংকটের কারণে বাংলাদেশ ভারতের (india bangladesh) সঙ্গে রুপিতে ব্যবসা-বাণিজ্য কোন উদ্যোগ নিয়েছে কিনা’ সংবাদ প্রতিদিনের এমন এক প্রশ্নের উত্তরে বাংলাদেশের বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুন্সি বলেছেন, আমরা এ নিয়ে চিন্তা-ভাবনা করছি।
টিপু মুন্সি জানান, ভারত বাংলাদেশের (india bangladesh) তিনটি স্পেশাল ইকোনমিক জোনে বিনিয়োগ করছে, আরও চাইলে বাংলাদেশ (bangladesh) বিবেচনা করবে।
বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা (sheikh hasina) ভারত সফরকালে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র বলেছেন,উন্নত দেশ গড়তে তাঁরা সবাইকে সঙ্গে নিয়ে চলতে চান।সেক্ষেত্রে বাংলাদেশ রয়েছে অগ্রাধিকারে। সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, শেখ হাসিনার ভারত সফর সফল হয়েছে।
ভূটান ও নেপালের সাথে সড়ক পথের ফ্রি ট্রানজিট সুবিধা দিতে সম্মত হয়েছে ভারত। ভারতের (india) সাথে সড়ক, নৌ এবং আকাশ পথে ব্যবসা বাণিজ্য বৃদ্ধির সুযোগ বাড়ছে, যোগাযোগ ব্যবস্থা অনেক উন্নত হচ্ছে, নদীর জল বন্টন সব মিরিয়ে ৭টি চুক্তি হয়েছে।
এতে করে বাংলাদেশ (bangladesh) অনেক লাভবান হবে। বাংলাদেশের সাথে ভারতের বিদ্যমান সমস্যাগুলো আলাপ আলোচনার মাধ্যমে সমাধানের প্রক্রিয়া চলছে।
উল্লেখ্য,বাংলাদেশের (bangladesh) সঙ্গে ডলারের পরিবর্তে রুপিতে বাণিজ্য করতে চায় ভারত। তবে বাংলাদেশ (bangladesh) ভারতের সাথে রুপিতে বাণিজ্যে রাজি হবে কিনা, সেটি নির্ভর করছে সরকার ও শিল্প মহলের ওপর।
এদিকে ভারতের দিক থেকে ইতিমধ্যে সব প্রস্তুতিই সম্পন্ন।ডলার বা অন্য কোনও হার্ড কারেন্সিকে এড়িয়ে দুটো দেশ যখন নিজেদের মধ্যে নিজস্ব মুদ্রায় বাণিজ্য চালায়, সেটাকে আর্থিক পরিভাষায় বলে কারেন্সি সোয়াপ অ্যারেঞ্জমেন্ট।
বাংলাদেশের (bangladesh) সঙ্গে পণ্য কেনাবেচার ক্ষেত্রে ডলারের পরিবর্তে ভারতীয় মুদ্রা রুপিতে লেনদেন করতে এই ধরণের রুপি সোয়াপের এমনই উদ্যোগ নিয়েছে ভারত।
আর এর জন্য যাবতীয় আইনি বাঁধাও দূর করে দিয়েছে রিজার্ভ ব্যাংক অব ইন্ডিয়া আরবিআই। তবে বাংলাদেশ অন্যদের বিধিনিষেধটা মাথায় রেখে এগুচ্ছে বলে জানিয়েছেন বিদেশমন্ত্রী টিপু মুন্সি।
তাই এখুনি রুপিতে এখনি ব্যবসা-বাণিজ্যের কোন সিদ্ধান্ত নেওয়া হচ্ছেন।ভারতের সাথে বাংলাদেশ সেপা চুক্তি করার জন্য কাজ করছে।
দেশের অর্থনীতির ভিত্তি শক্ত রাখার জন্য রপ্তানি বৃদ্ধির বিকল্প নেই। বাণিজ্য মন্ত্রী বলেন, গত বছর প্রায় ৬০ বিলিয়ন রপ্তানি হয়েছে।
২০২৪ সালে ৮০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার এবং ২০২৬ সালে ১০০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার রপ্তানির লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে কাজ করা হচ্ছে। বর্তমানে আমাদের তৈরী পোশাক খাতে মোট রপ্তানির প্রায় ৮২ ভাগ অবদান রাখছে।
পাশাপাশি আইসিটি, লেদার, প্লাস্টিক, লাইট ইঞ্জিনিয়ারিং, পাটসহ প্রায় ১০টি পণ্য রপ্তানি বৃদ্ধির বিশেষ উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। এগুলোর রপ্তানি দিনদিন বাড়ছে। তৈরী পোশাক রপ্তানিতে আমাদের আরও সম্ভাবনা রয়েছে।
মিয়ানমার বাংলাদেশের অন্যতম প্রতিযোগি ছিল, তাদের তৈরী পোশাক খাত প্রায় বন্ধ। চায়না তৈরী পোশাক শিল্প রিলোকেট করছে। ফলে আমাদের সম্ভাবনা আরও বেড়ে গেছে। আমাদের দক্ষ জনশক্তি রয়েছে, উৎপাদন খরচ কম।
তৈরী পোশাক শিল্পে গ্রীণ ফ্যাক্টরি এখন বাংলাদেশে সবচেয়ে বেশি। ফলে রপ্তানি বাণিজ্যে আমাদের বিপুল সম্ভাবনা রয়েছে। বাণিজ্যমন্ত্রী শনিবার ঢাকায় জাতীয় প্রেসক্লাবে ওভারসিস করেসপনডেন্ট অ্যাসোসিয়েশন অফ বাংলাদেশ (ওকাব) আয়োজিত মিট দ্য প্রেস অনুষ্ঠানে বক্তৃতা প্রদানের সময় এসব কথা বলেন।
এদিকে বাংলাদেশে ব্যাপক মূল্য বৃদ্ধির কারণে ভারত থেকে ডিম আমদানি করে বাজার স্থিতিশীল রাখার ব্যাপারে বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, আমরা বাণিজ্য মন্ত্রকের সঙ্গে এনিয়ে আলোচনা করছি।ডিম আমদানির বিষয়েটি দেশীয় শিল্পকে সুরক্ষা দিয়ে প্রয়োজনে বিবেচনা করা হবে।
গত মাসাধিককাল ধরে বাংলাদেশে (bangladesh) প্রতিটি ডিম ১১ টাকার উর্দ্ধে বিক্রি হচ্ছে। টিপু মুনশি, এমপি বলেছেন, বাংলাদেশ এলডিসি গ্রাজুয়েশন করে উন্নয়নশীল দেশে পরিনত হয়েছে। ২০২৬ সালে তা কার্যকর হবে, এরপর আরও তিন ব ছর পর অর্থাৎ ২০২৯ সাল থেকে এলডিসিভুক্ত দেশের বাণিজ্য সুবিধা আর থাকবে না বাংলাদেশের।
তখন থেকে উন্নতদেশের সাথে প্রতিযোগিতা করেই বিশ্ববাণিজ্য করতে হবে। বাংলাদেশ ইতিমধ্যে রপ্তানি বাণিজ্যের এ চ্যালেঞ্জ মোকাবেলার জন্য কাজ শুরু করে দিয়েছে।
আমরা ভূটানের সাথে অগ্রাধিকার মূলক বাণিজ্য চুক্তি করেছি। আরও বেশ কয়েকটি দেশের সাথে পিটিএ বা এফটিএ এর মতো বাণিজ্য চুক্তি সম্পাদনের জন্য গুরুত্ব দিয়ে আলোচনা চলছে। শিল্পের যন্ত্রপাতি ও কাঁচামাল আমদানির কারনে চায়না এবং ভারতের সাথে আমাদের বাণিজ্য ব্যাবধান সবচেয়ে বেশি।
চায়না বাণিজ্য ব্যাবধান কমাতে ৯৯ ভাগ পণ্য রপ্তানিতে শুল্কমুক্ত সুবিধা দিয়েছে। তিনি বলেন, বাংলাদেশ একসময় সুই, সুতা, বোতাম, কার্টুনসহ সকল এক্সরেসরিজ বিভিন্ন দেশ থেকে আমদানি করে তৈরী পোশাক বিদেশে রপ্তানি করতো,আ জ বাংলাদেশে অভ্যন্তরিন চাহিদা পূরণ করে বিদেশে গার্মেন্টস এক্সরেসরিজ রপ্তানি করছে। আমাদের সক্ষমতা আছে, এগুলোকে কাজে লাগাতে হবে।