ঢাকা: বাংলাদেশের (bangladesh) খুলনা-মোংলা (khulna-mongla) রেললাইন প্রকল্প চলতি বছরের ডিসেম্বরের মধ্যে শেষ হয়ে যান চলাচলের জন্য খুলে দেওয়া হবে বলে আশা করা হচ্ছে। খুলনা (khulna) থেকে মোংলা (mongla) পর্যন্ত ৬৪ কিলোমিটার ব্রডগেজ লাইনের নির্মাণকাজ চলছে দ্রুতগতিতে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, ইতিমধ্যে প্রকল্পের সার্বিক কাজ ৯০ শতাংশ শেষ হয়েছে। বাকি কাজ শেষে এ বছরের ডিসেম্বরে প্রধানমন্ত্রী খুলনা-মোংলা (khulna-mongla) রেলপথের উদ্বোধন করবেন বলে আশা করা হচ্ছে। আর এরমধ্য দিয়েই দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম সামুদ্রিক বন্দর মোংলা (mongla) যুক্ত হচ্ছে রেল নেটওয়ার্কে।
করোনাকালে ভারত থেকে মালামাল আসতে ও নানা সংকটে শুরুতেই নির্মাণকাজে বিলম্ব হয়। বাংলাদেশ (bangladesh) রেলওয়ের (বিআর) মহাপরিচালক (ডিজি) ধীরেন্দ্রনাথ মজুমদার বলেন, “যোগাযোগব্যবস্থার উন্নয়ন ও মোংলা (mongla) বন্দর দিয়ে আমদানি-রপ্তানি বৃদ্ধি করতে খুলনা থেকে মোংলা (mongla) বন্দর পর্যন্ত রেললাইন প্রকল্পটি ২০১০ সালের ২১ ডিসেম্বর জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় অনুমোদন পায়।”খুলনা-মোংলা (khulna-mongla) বন্দর রেল লাইন প্রকল্পের একটি অংশ রূপসা রেল সেতুর নির্মাণ কাজ চলতি বছরের ২৫ জুন সম্পন্ন হয়েছে।
খুলনা (khulna) শহরকে মোংলা (mongla) বন্দরের রেল লাইনের সঙ্গে সংযুক্ত করেছে। প্রকল্পের মোট ব্যয় ৩৮৮.৯২ মিলিয়ন মার্কিন ডলার এবং রূপসা সেতু নির্মাণের ব্যয় ১৬৯.২৬ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। ভারত সরকারের রেয়াতযোগ্য লাইন অফ ক্রেডিট (এলওসি) এর অধীনে বাস্তবায়িত হচ্ছে ।
ভারতীয় ইপিসি ঠিকাদার মেসার্স এলঅ্যান্ডটি এই ৫.১৩ কিলোমিটার দীর্ঘ ব্রড-গেজ সিঙ্গেল-ট্র্যাক রূপসা রেল সেতু নির্মাণ করেছে।
সেতুটি উত্তাল রূপসা (rupsa) নদীর ওপর নির্মিত হয়েছে, এবং প্রকৌশলগত দিক থেকে এটি একটি অনন্য কীর্তি। কারণ এটির পাইলিং-এর জন্য বেস গ্রাউটিং নামক একটি বিশেষ প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয়েছিল। ভায়াডাক্ট সেকশনে ৮৫৬টি পাইল ফাউন্ডেশন নির্মাণ করা হয়েছে।
এতে ৭২টি পাইল ফাউন্ডেশন স্টিল ব্রিজ সেকশনের জন্য নির্মাণ করা হয়েছে যার গড় পাইল দৈর্ঘ্য ৭২ মিটার। নদীতে নৌ-চলাচলের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য সেতুটির রয়েছে অতিরিক্ত বৈশিষ্ট্য।
বিশেষ করে নেভিগেশন ফেন্ডার পাইল, যা রয়েছে পায়ারের (পিআইইআর) নিচের দিকে। মূল সেতুর নেভিগেশনাল ক্লিয়ারেন্স স্ট্যান্ডার্ড হাই-ওয়াটার লেভেল (এসএইচডব্লিএল) থেকে ১৮ মিটারেরও বেশি। স্টিলের তৈরি এই সুপারস্ট্রাকচার সেতুটির নির্মাণসামগ্রী ভারত থেকে সড়ক, সমুদ্র ও আভ্যন্তরীণ নদীপথে আমদানি করা হয়।
পুরো প্রকল্পের নির্মাণকাজ সম্পন্ন হলে, রেললাইনটি বাংলাদেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম বন্দর মোংলা-র (mongla) সংযোগ বাড়াতে সাহায্য করবে এবং রেল ও সামুদ্রিক বাণিজ্যের ক্ষেত্রে একটি বিকল্প রুট সৃষ্টি করবে। এটি এই অঞ্চলের অন্যান্য দেশগুলিকেও বন্দরটি ব্যবহার করার এবং উপ-আঞ্চলিক বাণিজ্য বৃদ্ধির সুযোগ দেবে।
রূপসা (rupsa) রেলওয়ে সেতু এবং খুলনা-মোংলা বন্দর রেললাইনটি পণ্য পরিবহণে ব্যাপক সুবিধা সৃষ্টি করবে। মংলা (mongla) বন্দরের সাথে এই সহজ ও উন্নত যোগাযোগ ব্যবস্থার কারণে এই অঞ্চলের কৃষকেরা তাদের উৎপাদিত কৃষি পণ্যসহ অনায়াসেই স্থানীয় বাজারগুলোতে ব্যবসা করার সুযোগ পাবে।
এটি বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের অথনৈতিক ব্যাপক উন্নয়নসহ ওই এলাকার পর্যটন খাতে ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে।