ঢাকা: বাংলাদেশে (bangladesh) চলতি বছর ৩২ হাজার ১৬৮টি মণ্ডপে অনুষ্ঠিত হবে শারদীয় দুর্গোৎসব। গত বছর ৩২ হাজার ১১৮টি মণ্ডপে পুজো (durga puja) উদযাপন করা হয়। সে হিসাবে এবার পুজোমণ্ডপের সংখ্যা বেড়েছে ৫০টি।
ঢাকায় এ বছর পুজো (durga puja) হবে ২৪১টি মণ্ডপে। তবে ব্যতিক্রমী দুর্গাপুজো (durga puja) অনুষ্ঠিত হবে দেশের দক্ষিণের জেলা পিরোজপুর জেলার মঠবাড়িয়ার কবুতরখালীর রাজমন্দিরে ২৫১টি প্রতিমা নিয়ে।
অপরদিকে দক্ষিণের জেলা বাগেরহাট সদর উপজেলার চুলকাঠি গ্রামের বণিকপাড়া সার্বজনীন পুজোমণ্ডপে ১৫১টি প্রতিমা সাজিয়ে দুর্গাপুজো (durga puja) হচ্ছে। এই মণ্ডপে রামায়ণ- মহাভারতের (ramayan mahabharat) দেবদেবীরাও রয়েছেন।
করোনার কারণে মণ্ডপটিতে দুই বছর দুর্গাপুজো (durga puja) বন্ধ ছিল। স্থানীয়রা জানাচ্ছেন, জেলায় এত বেশি সংখ্যক প্রতিমা দিয়ে পুজো উদযাপনের নজির অবশ্য এটাই প্রথম নয়।
সদর উপজেলার খানপুর ইউনিয়নের হাকিমপুর গ্রামের সিকদার বাড়িতেও এরআগে ৮৫১টি প্রতিমা (durga puja) দিয়েও দুর্গোৎসব হয়েছে। যদিও করোনার কারণে শুরু হয়ে গত তিন বছর ধরে সেই পুজো (durga puja) বন্ধ রয়েছে।
বণিকপাড়া সার্বজনীন পুজোমণ্ডপের সভাপতি সুশান্ত দাশ বলেন, গত এক দশক ধরে এখানে ১৫১টি প্রতিমা দিয়ে দুর্গাপুজো করা হচ্ছে। রামায়ণ ও মহাভারতের (mahabharat) দেবদেবীরাও সেখানে স্থান পেয়েছেন।
করোনাভাইরাস জনিত মহামারীর কারণে গত দুই বছর দুর্গা দেবীর (durga puja) সাধারণ প্রতিমা গড়েই পুজো করা হয়েছে। এবার যেহেতু মহামারীর প্রকোপ কম তাই আবার ১৫১টি প্রতিমা দিয়ে পুজোর আয়োজন করা হয়েছে।
বণিকপাড়া সার্বজনীন পুজোমণ্ডপের প্রতিমা শিল্পী গণেশ সরকার বলেন, “১৫১টি প্রতিমার মাধ্যমে আমরা রামায়ণ ও মহাভারতের চার যুগের দেবদেবীর নানা কাহিনী ফুটিয়ে তোলার চেষ্টা করেছি।
জেলার সব থেকে বড় এই আয়োজন দেখতে দর্শনার্থীরা ভীড় করে থাকেন এটাই স্বাভাবিক। বাগেরহাট জেলা হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মিলন ব্যানার্জী বলেন, নির্বিঘ্নে পুজো উদযাপন উপলক্ষে স্থানীয় প্রশাসন সম্প্রীতিমূলক সভা করেছেন।
অপরদিকে পিরোজপুরের রাজমন্দিরে ২৫১ প্রতিমা নিয়ে ভিন্নধর্মী পুজোর আয়োজন করা হয়েছে। আয়োজকরা জানান, মন্দিরের অতীত ঐতিহ্য ধরে রাখতে এবার দুর্গোৎসবে পাঁচশ’ প্রতিমা তৈরির ইচ্ছে থাকলেও সামাজিক ও অর্থনৈতিকসহ নানা বিষয় চিন্তা করে ২৫১টি প্রতিমা দিয়ে পুজোর আয়োজন করা হয়েছে।
তবে ধারাবাহিকভাবে আগামীতে প্রতিমার সংখ্যা পাঁচশ’ এবং এক হাজার একটি প্রতিমা করার ইচ্ছা রয়েছে।এবারের আয়োজনে বিগত বছরের সঙ্গে নতুন অনেক কিছুই যুক্ত হচ্ছে। যেমন- বিগত বছরগুলোর মতো এবারেও দুর্গাপুজোয় প্রতিদিন ২/৩ হাজার লোকের জন্য প্রসাদের ব্যবস্থা রাখা হবে।
দূর-দূরান্ত থেকে আসা মানুষের জন্য খাবারের পাশাপাশি থাকার ব্যবস্থাও নিশ্চিত করা হবে। অসহায়, দুস্থ নারীদের মাঝে বস্ত্র বিতরণ এবং দরিদ্র-মেধাবী ও কন্যাদায়গ্রস্ত পিতা-মাতাকে মন্দিরের পক্ষ থেকে আর্থিক সহায়তা প্রদান করা হবে।
এবারের পুজোয় নতুন প্রজন্মের জন্য কবুতরখালীর ডাক্তার বাড়ি ও রাজমন্দির প্রাঙ্গণে অনেক কিছু সংযোজন করা হয়েছে। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ম্যুরালের পাশাপাশি বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে লেখা বিভিন্ন বই, তথ্য ও চিত্র নিয়ে বঙ্গবন্ধু কর্নার, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে নিয়ে লেখা বইয়ের সংযোজন ঘটিয়ে শেখ হাসিনা কর্নার, মুক্তিযুদ্ধের বিভিন্ন তথ্য-চিত্র নিয়ে মুক্তিযুদ্ধ কর্নার এবং শেখ রাসেল কর্নার করা হয়েছে।
এছাড়া পুরো ডাক্তার বাড়ি ও মন্দির এলাকাকে ঘিরে বিভিন্ন লেখক, মনীষী, বিখ্যাত ব্যক্তিদের বাণীসংবলিত প্ল্যাকার্ড, ছবি, ব্যানার সাঁটানো হয়েছে। একইসঙ্গে প্রতিদিন প্রজেক্টরের মাধ্যমে বঙ্গবন্ধু, মুক্তিযুদ্ধসহ পূর্বের পুজো নিয়ে তৈরি প্রদর্শন করা হবে।
রাজমন্দির কমিটির সভাপতি ডাঃ সুদীপ কুমার হালদার বলেন, প্রতিবছর রাজমন্দিরের দুর্গাপুজোর আয়োজনে কয়েক লাখ লোকের সমাগম ঘটে। আর আগতদের সেবায় ডাক্তার বাড়ির লোকজন নিজেদের নিয়োজিত করেন।
গত একমাস ধরে আমাদের ৪০ আত্মীয়-স্বজন পুজোর আয়োজনকে ঘিরে শ্রম দিয়ে যাচ্ছেন। সাতক্ষীরার শংকর পালের নেতৃত্বে ছয়জন পাল ২৫১টি প্রতিমা তৈরির কাজ করেছেন।
অপরদিকে বরিশাল জেলায় প্রথমবারের মতো ২৫টি প্রতিমা তৈরি করে পূজা শুরু করবে সদর উপজেলার জাগুয়া ইউনিয়নের আস্তাকাঠি সার্বজনীন শ্রী শ্রী হরি ও দুর্গামন্দির।