বাংলাদেশে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে আরও ৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে মৃত্যুর সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল ১৩১ জনে। একই সময়ে নতুন করে আক্রান্ত হয়েছেন ৫০৩ জন। এ নিয়ে সর্বমোট আক্রান্ত চার হাজার ৬৮৯ জন।
গত কয়েক দিনের তুলনায় মৃত্যু কমলেও একদিনে আক্রান্তের সংখ্যা সর্বোচ্চ এটি। এছাড়া গত ২৪ ঘণ্টায় ৪ জনসহ মোট ১১২ জন সুস্থ হয়েছেন।
শুক্রবার বিকালে স্বাস্থ্য অধিদফতরের নিয়মিত সংবাদ ব্রিফিংয়ে এসব তথ্য তুলে ধরেন অধিদফতরটির অতিরিক্ত মহাপরিচালক (প্রশাসন) অধ্যাপক ডা. নাসিমা সুলতানা। তিনি বলেন, গত ২৪ ঘণ্টায় ৩ হাজার ৬৮৬ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। এর মধ্যে ৫০৩ জনের দেহে করোনা শনাক্ত হয়েছে। মৃত্যু হয়েছে ৪ জনের। আক্রান্তদের মধ্যে সুস্থ হয়েছেন আরও ৪ জন। ডা. নাসিমা আরও বলেন, গত ২৪ ঘণ্টায় মারা যাওয়া চারজনই পুরুষ। তারা সবাই রাজধানী ঢাকার বাসিন্দা।
করোনাভাইরাসের সংক্রমণের ঝুঁকি এড়াতে সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত করার লক্ষ্যে ধর্ম মন্ত্রণালয় আসন্ন রমজানে মসজিদে এশা ও তারাবিহ নামাজ আদায়ে যে নির্দেশনা (দুই হাফেজসহ ১২ মুসল্লি নিয়ে জামাত) দিয়েছে সেটা মেনে চলার আহ্বান জানান ডা. নাসিমা সুলতানা। ইফতার মাহফিল বা এ ধরনের কোনো সামাজিক অনুষ্ঠান আয়োজন থেকেও বিরত থাকার আহ্বান জানান তিনি। ডা. নাসিমা বলেন, নিজে সুস্থ থাকবো এবং নিজের পরিবারের সদস্যকে সুস্থ রাখতে এ নির্দেশনাগুলো মেনে চলতে হবে।
গত ডিসেম্বরের শেষ দিকে চীনের উহান থেকে ছড়িয়ে পড়া করোনাভাইরাস এখন গোটা বিশ্বে তাণ্ডব চালাচ্ছে। চীন পরিস্থিতি কিছুটা সামাল দিয়ে উঠলেও এখন মারাত্মকভাবে ভুগছে ইউরোপ-আমেরিকা-এশিয়াসহ বিশ্বের অন্যান্য অঞ্চল। এ ভাইরাসে বিশ্বজুড়ে আক্রান্তের সোয়া ২৭ লাখ ছাড়িয়ে গেছে। মৃতের সংখ্যা প্রায় দুই লাখ ছুঁই ছুঁই। তবে সাড়ে সাত লাখ রোগী ইতোমধ্যে সুস্থ হয়েছেন।
গত ৮ মার্চ বাংলাদেশে প্রথম করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়। এরপর প্রথম দিকে কয়েকজন করে নতুন আক্রান্ত রোগীর খবর মিললেও এখন লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে এ সংখ্যা। বাড়ছে মৃত্যুও। প্রাণঘাতী এই ভাইরাসের বিস্তার ঠেকাতে সরকার সাধারণ ছুটি ঘোষণা করেছে। নিয়েছে আরও নানা পদক্ষেপ। এসব পদক্ষেপের মূলে রয়েছে মানুষে মানুষে সামাজিক দূরত্ব বজায়, বিশেষত ঘরে রাখা। কিন্তু সশস্ত্র বাহিনী, র্যাব ও পুলিশের টহল জোরদার করেও মানুষকে ঘরে রাখা যাচ্ছে না বিধায় করোনাভাইরাসের বিস্তার উদ্বেগজনক পর্যায়ে পৌঁছাতে পারে বলে আশঙ্কা বিশেষজ্ঞদের।