ভাষা আন্দোলনের চেতনায় ঋদ্ধ এক মাসের মিলনমেলা আজ ভাঙবে। বিদায়ের সানাই বাজছে প্রাঙ্গন জুড়ে।
শনিবার, ২৯ ফেব্রুয়ারি যবনিকা পতন হচ্ছে অমর একুশে গ্রন্থমেলার।
অন্যান্য বছরের তুলনায় এবছর পাঠকের সমাগম এবং বই বিক্রিও যথেষ্ট ছিল।
তবে জাতির সত্তা, সংস্কৃতি, মিলনের মেলায় কয়েকটি করুণ ঘটনা সত্যই মুক্তচিন্তকদের কষ্ট আরো বাড়িয়ে তুলেছে।
এবার লিটিল ম্যাগাজিন স্টল কালাঞ্জলী বন্ধ করে দিয়েছে বা/এ কর্তৃপক্ষ। শুধু তাই নয় লেখক একইসাথে ব্লগার দিয়ার্ষিআরাগদিপুর ‘নানীরবাণী’ নামক একটি বই ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত হেনেছে এই অভিযোগে পুলিশ ও মেলা কর্তৃপক্ষ বাজেয়াপ্ত করেছে সেটি।
উল্লেখযোগ্য কথাটি হলো, উক্ত বইটির প্রকাশক বা পরিবেশক ‘কালাঞ্জলী’ নয়। শুধুই ছোট ছোট প্রকাশনা যারা স্টল পায় না তাদের বইও যেন মেলায় প্রদর্শন করা হয় সেদিকে লক্ষ্য রেখে তারা বইটি তাদের স্টলে রেখেছিলেন।
এদিকে, লিটিলম্যাগ চত্বরে ২১শে ফেব্রুয়ারি পুলিশ সদস্যরা শিল্পী চারু পিন্টুকে হেনস্থা করেছে।
মেলা প্রাঙ্গনে ধূমপানকে কেন্দ্র করে এই বিক্ষিপ্ত ঘটনাটি ঘটে।
সে সময় পুলিশ সদস্যরা হুমকি দিয়ে বলেন, ‘সব শালা লেখক শিল্পীকে দেখে নেবো, ওদের গাড়িতে তোল।’ তাৎক্ষণিকভাবে, লেখক, সম্পাদক, শিল্পী, প্রকাশক ও সাধারণ পাঠকরা প্রতিবাদে নামেন।
সমাজ ধ্বংস করা এমন ঘটনার প্রতিবাদ করেই আসছেন বাংলাদেশের বহু মুক্তচিন্তক, সমাজকল্যাণকামীরা। কিন্তু পরিবর্তন কতটুকু হচ্ছে, তা প্রকাশ করে দিচ্ছে ঘটনাগুলো।
মর্মান্তিক এই ঘটনাগুলো কখনোই কাম্য নয়। ঘটনাগুলো প্রত্যাশিতই যেন হয়ে গেছে বাংলাদেশে। যা সুস্থির সমাজ গঠনে বাধাদান করছে।
যদিও করুণ ঘটনাগুলো বাদ দিয়ে মেলা সুষ্ঠুভাবে এগিয়ে গেছে।
আবালবৃদ্ধবণিতা বইয়ের মাঝে নিজেদের ডুবিয়ে দিয়েছেন।
আজ তাঁদের বুকে বাজছে বেদনার সুর।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমানকে উৎসর্গ করে বইমেলা শুরু হয়েছিল ২ ফেব্রুয়ারি। মেলার শুভউদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
আজ শেষ দিন গ্রন্থমেলার দ্বার খুলেছে সকাল ১১টায়। দুপুর একটা পর্যন্ত চলবে শিশুপ্রহর। মেলা সমাপ্তি হবে রাত ৯ টায়।