বাংলাদেশের বিমানবন্দরগুলো দিয়ে আন্তর্জাতিক ও অভ্যন্তরীণ রুটের বিমান চলাচলে নিষেধাজ্ঞা ৭ এপ্রিল থেকে বৃদ্ধি করে ১৪ এপ্রিল পর্যন্ত করা হয়েছে। তবে চীনের ফ্লাইটগুলো এই নিষেধাজ্ঞার বাইরে থাকবে। এছাড়াও জাপানের নাগরিকদের নিজ দেশে পৌঁছে দিয়ে দেশে ফিরে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের পাইলট, কেবিন ক্রুসহ মোট ২২ জন হোম কোয়ারেন্টিনে আছেন। তবে ঢাকা-লন্ডন-ম্যানচেস্টার, লন্ডন-সিলেট প্লেন যোগাযোগ খুলে দেওয়ার জন্য যুক্তরাজ্য তাগিদ দিচ্ছে বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন।
জানা গেছে, দেশের বিমানবন্দরগুলো দিয়ে আন্তর্জাতিক ও অভ্যন্তরীণ রুটের বিমান চলাচলে নিষেধাজ্ঞা ৭ এপ্রিল থেকে বৃদ্ধি করে ১৪ এপ্রিল পর্যন্ত করেছে বাংলাদেশ বেসরকারি বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ (বেবিচক)। এ নিয়ে দুই দফা নিষেধাজ্ঞার মেয়াদ বাড়ালো বেবিচক। গতকাল রোববার বিকেলে এ বিষয়ে একটি আদেশ জারি করে বেবিচক।
এর আগে করোনাভাইরাসের কারণে ২১ থেকে ৩১ মার্চ পর্যন্ত যুক্তরাজ্য, চীন, হংকং, থাইল্যান্ড ছাড়া সব দেশের সঙ্গে যাত্রীবাহী সব বিমান সংস্থার ফ্লাইট চলাচল বন্ধের ঘোষণা দিয়েছিল বেবিচক। এরপর আরেকটি আদেশে এই সময়সীমা আরও সাত দিন বাড়িয়ে ৭ এপ্রিল পর্যন্ত নির্ধারণ করা হয়েছিল।
এদিকে বেবিচকের আগের ঘোষণায় যুক্তরাজ্য, চীন, হংকংয়ের সঙ্গে যাত্রীবাহী ফ্লাইটগুলো সরাসরি চলবে বলে জানানো হয়েছিল। কিন্তু এই ঘোষণার সাত দিনের মধ্যে বর্তমানে চীন ছাড়া বাকি তিনটি রুট বন্ধের ঘোষণা দেয় এয়ারলাইন্সগুলো।
সর্বশেষ ২৮ মার্চ থেকে হংকংয়ে ক্যাথে-প্যাসিফিকের ফ্লাইট অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ হয়ে যায়। ৩০ মার্চ বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসও লন্ডন ও ম্যানচেস্টার রুটে ফ্লাইট চলাচল স্থগিত করে। এই দুটি রুটে বিমান প্রতি সপ্তাহে ১৪টি ফ্লাইট পরিচালনা করত। লন্ডন ও ম্যানচেস্টার রুট বন্ধের মধ্য দিয়ে বিমানের ১৭টি আন্তর্জাতিক রুটের সব ফ্লাইট বন্ধ হয়ে যায়। ১৭টি রুটে বিমান প্রতি সপ্তাহে ২১৮টি ফ্লাইট পরিচালনা করত। করোনাভাইরাসের কারণে ২৪ মার্চ রাত ১২টা থেকে দেশের অভ্যন্তরীণ রুটেও ফ্লাইট বন্ধ ঘোষণা করে বেবিচক।
এ বিষয়ে বেবিচক চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল মফিদুর রহমান বলেন, আমরা ফ্লাইট চলাচলের নিষেধাজ্ঞার মেয়াদ বৃদ্ধির পরিকল্পনা করেছি। আনুষ্ঠানিকভাবে বিকেলে তা জানিয়ে দেয়া হবে। এছাড়াও আগে ৪টি দেশের ফ্লাইট নিষেধাজ্ঞার বাইরে ছিল। এবার শুধুমাত্র চীনের ফ্লাইট এই নিষেধাজ্ঞার বাইরে থাকবে।
অপরদিকে, গত বৃহস্পতিবার সকাল সোয়া ১০টায় বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের একটি (বোয়িং-৭৭৭-৩০০ ইআর) চার্টার্ড ফ্লাইট ৩২৭ জন জাপানি নাগরিককে নিয়ে নারিতা বিমানবন্দরের উদ্দেশ্য হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ত্যাগ করে। ফিরতি ফেরি ফ্লাইটটি গত বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত ১২টা ৪০ মিনিটে ঢাকায় নিরাপদে অবতরণ করে। দেশে ফিরে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের পাইলট, কেবিন ক্রুসহ মোট ২২ জন হোম কোয়ারেন্টিনে আছেন। পূর্ব নির্দেশনা অনুযায়ী নিরাপত্তার জন্য তাদেরকে হোম কোয়ারেন্টিনে তাদের চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে।
এদিকে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন জানিয়েছে, ঢাকা-লন্ডন-ম্যানচেস্টার, লন্ডন-সিলেট প্লেন যোগাযোগ খুলে দেওয়ার জন্য যুক্তরাজ্য তাগিদ দিচ্ছে। তিনি আরো জানান, যুক্তরাজ্য প্লেন যোগাযোগ খুলে দেওয়ার জন্য পীড়াপীড়ি করছে। অর্গানাইজেশন ফর ইকোনোমিক কোঅপারেশন অ্যান্ড ডেভেলপমেন্টের (ওইসিডি) সদস্য দেশগুলোও প্লেন যোগাযোগ খুলে দেওয়ার জন্য অনুরোধ করেছে। যুক্তরাজ্য বলছে, ঢাকা-লন্ডন প্লেন যোগাযোগ চালু থাকলে ইউরোপের দেশগুলো থেকে করোনার চিকিৎসার জন্য ডাক্তার-নার্স আসতে আমাদের দেশে আসতে পারবেন। মেডিক্যাল ইক্যুপমেন্টও নিয়ে আসা সম্ভব হবে। তবে প্লেন চলাচলের বিষয়ে সরকার সিদ্ধান্ত নেবে।