ঢাকা: খুন-ডাকাতি-হত্যা ধরষণ, মাদক কারবার, তরুণী পাচারসহ নানাবিধ অপরাধের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে বাংলাদেশে কক্সবাজারের উখিয়ার Rohingya ক্যাম্পে যৌথ অভিযানে সাত রোহিঙ্গাকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
শিবিরে শৃঙ্খলা ফেরাতে গত বুধবার রাতে ১৩ ও ১৯ নম্বর রোহিঙ্গা ক্যাম্পে এ অভিযান চালানো হয় বলে জানিয়েছেন র্যাব-১৫-এর সহকারী পুলিশ সুপার মো. শামসুল আলম খান। গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন-১৩ নম্বর ক্যাম্পের লোকমান হাকিমের ছেলে ফরিদুল হক (৩৪), মোহাম্মদ আলীর ছেলে দিল মোহাম্মদ ওরফে ফয়েজ (২৫), মো. আলীর ছেলে আব্দুল আউয়াল ওরফে ওয়াহেদ (১৯), দিল মোহাম্মদের ছেলে মো. ইউনুছ (৩৪), ১৯ ক্যাম্পের করিমুল্লাহর ছেলে নাজমুল হাসান (২৮), মো. ইলিয়াসের ছেলে এহেছান উল্লাহ (৩১), দিলদার আহমদের ছেলে মো. রিয়াজ (৩০)।
সহকারী পুলিশ সুপার শামসুল আলম খান জানিয়েছেন, গ্রেপ্তারকৃতরা বিভিন্ন মামলার আসামি। তাদের উখিয়া থানায় সোপর্দ করা হয়েছে।
সম্প্রতি রোহিঙ্গা শিবিরে কয়েকদফা খুন-খারাবিতে শিবির এলাকায় পরিস্থিতির অবনতি ঘটে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে গতরাতে এ অভিযান চলে।
গত সপ্তাহে রাজধানি ঢাকা থেকে ৪৬০ কিলোমিটার দূরের জেলা উখিয়া থানার তাজনিমারখলা ১৩ নম্বর রোহিঙ্গা ক্যাম্পের জি ফোর ব্লকে গুলিযুদ্ধে দুইজন নিহত ও একজন জখম হয়।
নিহতরা ওই ক্যাম্পের বাসিন্দা মোহাম্মদ রফিক (২২) ও মো. রফিক (২০)। বলা হয়েছে রোহিঙ্গাদের স্বদেশে প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়াকে বাঁধাগ্রস্ত করতে রোহিঙ্গাদের বিদ্রোহি গ্রুপ এ হামলা চালায়। সন্ত্রাসীরা ক্যাম্পের তরুণীদের জোর ধরে নিয়ে দেহ ব্যবসা করায়। বিদেশে পাচার করে। ক্যাম্পে মাদক ব্যবসা করে। কেউ বাঁধা দিলেই মেরে ফেলা হয়।
কক্সবাজারের বিভিন্ন রোহিঙ্গা ক্যাম্পে সাড়ে পাঁচ বছরে ১৩২টি হত্যাকাণ্ড ঘটেছে। নিহতদের বেশির ভাগই ক্যাম্প ব্যবস্থাপনা কমিটির নেতা (মাঝি) ও পাহারারত স্বেচ্ছাসেবক।
প্রতিরক্ষা মন্ত্রক সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটিতে ওঠা জেলা পুলিশের প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে।প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, ২০১৭ সালের ২৫ আগস্ট থেকে ২০২২ সালের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত রোহিঙ্গা ক্যাম্পে ১৩২টি হত্যাকাণ্ড ঘটেছে।
২০১৭ সালের আগে চার লাখের মতো রোহিঙ্গা বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছিল। সে বছর মায়ানমারে দমন অভিযান শুরুর পর এই সংখ্যা ১১ লাখ ছাড়িয়ে যায়। বাংলাদেশে রোহিঙ্গাদের বেশির ভাগই কক্সবাজারের টেকনাফ ও উখিয়ার শিবিরে রয়েছে। এর মধ্যে কিছু রোহিঙ্গাকে নোয়াখালীর ভাসানচরে নিয়ে যাওয়া হয়।