ঢাকা: বাংলাদেশে Bangladesh সরকারবিরোধীদের অপপ্রচারের জবাব দিতে এবার মাঠে নামছে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন ১৪ দলীয় জোট। যদিও সম্প্রতি সময়ে এ জোটের কোন রাজনৈতিক কর্মসূচি দেখা যায়নি।
তবে গ্যাস-বিদ্যুৎ সংকটের পাশাপাশি দ্রব্যমূল্যের দাম বাড়ায় মানুষ যখন দিশেহারা, তখন এই সংকটের সময় অপপ্রচারে সক্রিয় মুক্তিযুদ্ধ বিরোধী শক্তি। রাজপথে আওয়ামী লীগ তখন অনেকটাই একা।
নিষ্ক্রিয় আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন ১৪ দলীয় জোটও। কিন্তু রাজনৈতিক সচেতন মানুষের চোখ তখন এই ১৪ দলীয় জোটের দিকেই। প্রশ্ন উঠেছিল ১৪ দলীয় জোট কি আর নেই? কারণ এই জোট মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় গড়ে উঠা একটি রাজনৈতিক জোট।
ফলে সংকটে পথ দেখাবে, জাতিকে আশ্বস্ত করবে, নির্দেশনা দিবে এটাই কাম্য। কিন্তু জনগণের সেই প্রত্যাশা পূরর্ণ করেনি জোটটি। তবে দেরিতে হলেও মুক্তিযুদ্ধের সপক্ষে রাজনীতিতে আবারও এই জোট সক্রিয় হচ্ছে বলে জানা গেছে।
শুধু তাই নয়, আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগেই বিরোধী জোটকে রাজনৈতিকভাবে মোকাবেলার জন্য আবারও আঁটঘাট বেঁধে মাঠে নামছে ১৪দলীয় জোট।
১৪ দল নেতারা বলছেন, গণতান্ত্রিক ধারাবাহিকতা, স্থিতিশীলতা, শান্তি, নিরাপত্তা, উন্নয়ন ও যুদ্ধাপরাধীদের বিচার কাজ বাধাগ্রস্ত করা এবং বিএনপি-জামায়াত অশুভ জোটের দেশবিরোধী ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে জাতীয় গণজাগরণ সৃষ্টির উদ্দেশ্যে পর্যায়ক্রমে দেশব্যাপী সফর করবেন কেন্দ্রীয় ১৪ দলের নেতারা।
১৪ দলের মুখপাত্র ও আওয়ামী লীগের উপদেস্টা পরিষদের সদস্য আমির হোসেন আমু জানান, বিএনপির নৈরাজ্য, আন্দোলনের নামে গণতন্ত্রের ধারাবাহিকতা বিনষ্টের চক্রান্তের বিরুদ্ধে জনমত গড়ে তুলতে কাজ করছে ১৪দল।
তিনি জানান, মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তির সমর্থনে বিরোধীজোটের অপপ্রচারের সমুচিত জবাব দেওয়া হবে।
সর্বশেষ গত সোমবার ১৪ দলীয় জোটের অন্যতম শরিক জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জাসদের প্রতিষ্ঠার ৫০ বছর পূর্তি উপলক্ষে আয়োজিত এক সমাবেশে জোটের কেন্দ্রীয় একাধিক নেতা উপস্থিত ছিলেন।
সমাবেশে উপস্থিত থেকে তারা বক্তব্য দিয়েছেন। তাদের বক্তব্যে উঠে এসেছে যে, সংকটকে কাজে লাগিয়ে ষড়যন্ত্র বাড়ছে, অপপ্রচার চলছে। যারা এ সমস্ত করছে তাদের কণ্ঠরোধ করতে হবে, ষড়যন্ত্রের প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে। সমাবেশে অংশ নেওয়া ১৪ দলের বিভিন্ন শরিক দলগুলোর শীর্ষ নেতারা ঐক্যবদ্ধ থাকার প্রতিশ্রুতি দেন।
এ সময় ১৪ দলীয় জোটের নেতৃত্বদানকারী দল আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, মুক্তিযুদ্ধের সপক্ষের সব শক্তি ঐক্যবদ্ধ থাকলে কেউ হারাতে পারবে না। ১৪ দল, ইনু ভাই, আপনারা ঠিক থাকুন।
ঐক্যবদ্ধ থাকলে আমরাই বিজয়ের বন্দরে পৌঁছে যাব। ১৪ দল ঐক্যবদ্ধ আছে বলেও দাবি করেন তিনি। হাসানুল হক বলেন, ২০২৩ সাল মুক্তিযুদ্ধের সপক্ষের শক্তির বিজয় অর্জন করার যুদ্ধ। নির্বাচন বানচালের চক্রান্ত বন্ধ করার যুদ্ধ।
আর অর্থনৈতিক সংকট সমাধান করার যুদ্ধ। এই তিন যুদ্ধ মোকাবিলা করতে মুক্তিযুদ্ধের সপক্ষের শক্তির সবাইকে কঠিন ঐক্যের মধ্যে থাকতে হবে। জাতীয় পার্টির (জেপি) সাধারণ সম্পাদক শেখ শহীদুল ইসলাম বলেন, আমাদের ঐক্য অটুট আছে।
এটা অটুট থাকবে। বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক ফজলে হোসেন বাদশা বলেন, বিভিন্ন বিভাগে সমাবেশ করে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তিকে ভয় দেখানোর চেষ্টা করছে। শেখ হাসিনার নেতৃত্বে একটি দিন ধার্য করুন। দেখা যাক, তারা কোথায় দাঁড়াতে পারে।
আমরা ১৪ দলকে ধরে রাখতে চাই। মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তিকে ধরে রাখতে চাই। গণতন্ত্রী পার্টির সাধারণ সম্পাদক শাহাদাত হোসেন বলেন, আজকে ষড়যন্ত্র চলছে। এই ষড়যন্ত্র ভেঙে দিয়ে মুক্তিযুদ্ধের ধারাকে অব্যাহত রাখার জন্য সবাইকে আহ্বান জানাই।
তবে বিশ্লেষকরা বলছেন, জাসদের সমাবেশে বক্ততাদের এ ধরনের বক্তব্য এক অর্থে ১৪ দলীয় জোটের মূলমন্ত্রের পুনঃউচ্চারণ। তারা তাদের বক্তব্যে একটি বিষয় স্পষ্ট করেছে, দেশের গণতন্ত্র, উন্নয়ন ধারা এবং উন্নয়ন রাজনীতিকে সমুন্নত রাখা, অসাম্প্রদায়িক রাজনীতিকে সমুন্নত রাখাসহ মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে সমুন্নত রাখতে ১৪ দল ঐক্যবদ্ধ।
যে ঐক্য তাদের আদর্শিক ঐক্য। ফলে ধারণা করা হচ্ছে যে, শীঘ্রই রাজনীতিতে আবার সক্রিয় হচ্ছে ১৪ দলীয় জোট।