আগেই বলেছিলেন, এবার কার্যকর হচ্ছে। আগামি ১৫ আগস্টের মধ্যে অসমের সমস্ত সরকারি মাদ্রাসা বন্ধ করে দেওয়া হবে।
আজ, ১২ মার্চ বিধানসভায় রাজ্যের মন্ত্রী ড০ হিমন্ত বিশ্ব শর্মা একথা জানিয়ে দিয়েছেন।
ভাষা নিয়ে কোন সমস্যা নেই, কিন্তু সরকারি খরচে কোনপ্রকার ধর্মীয় শিক্ষা প্রদান করা যাবে না।
মাদ্রাসার মতোই সংস্কৃত টোলের ক্ষেত্রেও একই বার্তা দিয়েছেন তিনি।
অসমের মাদ্রাসাগুলো সাধারণ হাইস্কুলে রূপান্তরিত করা হবে। একইভাবে সংস্কৃত ভাষা রক্ষার জন্যেও উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। কিন্তু টোল বন্ধ করে দেওয়া হবে।
বিধানসভায় মন্ত্রী ড০ হিমন্ত বিশ্ব শর্মা জানিয়েছেন, “সংস্কৃত শিক্ষাটা আরো কীভাবে জোরদার করা যায় তা নিয়ে চিন্তাচর্চা চলছে। যেহেতু এর সঙ্গে ভারতবর্ষের কথা জড়িত রয়েছে। কিন্তু আরবের কথা যেখানে জড়িত রয়েছে, সেখানে আপনার সঙ্গে আমার দৃষ্টিভঙ্গি ভিন্ন হবেই।”
মাদ্রাসা এবং সংস্কৃত টোলগুলোর সিলেবাস ‘সেবা’ বোর্ড ঠিক করে না। এটি একটি ভুল ধারণা প্রচার পাচ্ছে বলে বিশ্ব শর্মা জানান। এরজন্যে মাদ্রাসা বোর্ড গঠন করা হয়েছে।
“মাদ্রাসায় যে আরবি শিক্ষা দেওয়া হয়, সেখানে স্পিকিং অর্থাৎ মৌখিক ভাষা শেখানো হয় না, সেখানে ধর্মীয় চর্চা হয়।”
যেমন স্পোকেন ভাষা শিক্ষার দৃষ্টান্ত হিসেবে তিনি বলেন, “গুয়াহাটি বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘ফরেন ল্যাঙ্গুয়েজ ট্রেনিং কোর্স’খোলা হয়েছে। সেখানে জাপানিজ, আরবি ভাষা শেখানো যাবে, সেগুলো সমস্ত স্পোকেন। অর্থাৎ সে ভাষায় কথা কীভাবে বলতে হয় সেটি।”
“ভাষা শিক্ষায় আমাদের কোন আপত্তি থাকার কথা নয়। কিন্তু সরকারি খরচের টাকায় ধর্মীয় শিক্ষা দেয়া মোটেও চলবে না। সংস্কৃত ভাষা শেখাতে পারে, আরবি ভাষা শেখাতে পারে। কিন্তু ল্যাঙ্গুয়েজে কোরান শেখাতে পারবেন না।”
“মাইনোরিটি ক্যান রান ইন্সটিটিউট।” অর্থাৎ তিনি বলেন, “অসমের মুসলিম কিংবা জৈন কমিউনিটি যদি ইন্সটিটিউট খুলতে চায়, খুলতে পারে। সেখানে কোন বাধা নেই। কারণ সংবিধান অনুযায়ী তাঁদের সে অধিকার রয়েছে।”
স্পষ্ট এবং নির্ভেজালভাবে তিনি জানিয়েছেন, এই ধর্ম মানুষের মধ্যে ভেদাভেদের সৃষ্টি করে। সুতরাং সমাজে এর কোন প্রয়োজনীয়তা নেই।
এর আগে ১২ ফেব্রুয়ারি তারিখে গুয়াহাটি শ্রীমন্ত শংকরদেব কলাক্ষেত্রে অনুষ্ঠিত এক সরকারি অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করে ড০ শর্মা মাদ্রাসা বন্ধের কথা ঘোষণা করেছিলেন।
তিনি বলেন, “সরকারের টাকায় কোনো ধর্মীয় শিক্ষা দেয়া যাবে না। কারণ আরবিক ভাষা শেখানো বা অন্য ভাষা শেখানো অথবা ধর্মগ্রন্থ শেখানো সরকারের কাজ নয়।”
যদিও মাদ্রাসা-সংস্কৃত টোল বন্ধ করা হবে, ধর্মীয় বিষয়ে শিক্ষাদান করা শিক্ষকদের ভাতে মারবে না সরকার। শিক্ষকরা ঘরে বসেই অবসর পর্যন্ত লাভ করবেন মাইনে।
অসমের শিক্ষামন্ত্রীর এই ঘোষণাকে বহু মুক্তচিন্তক জনগণ স্বাগত জানিয়েছেন।