শিলচর: সরকারি স্কুলে মাধ্যমিক অবধি বিজ্ঞান ও গণিত এই দুটি বিষয়কে ইংরেজিতে পড়ানোর সুপারিশ করেছেন সরকার যা নিয়ে বিতর্ক চলছে। এনিয়ে এবার প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করলেন অসমের (assam) বরাক ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট (BDF) এর মুখ্য আহ্বায়ক প্রদীপ দত্তরায় (Pradip dutta roy)।
এক প্রেস বার্তায় প্রদীপ দত্তরায় (Pradip) বলেন যে দেখা যাচ্ছে যে এই প্রস্তাবের মূল বিরোধিতায় নেমেছে আসু (AASU)। তিনি বলেন তাঁর মনে হয়না ছাত্র সমাজ ও রাজ্যের জনগণ এই ইস্যুতে আসুকে (AASU) সমর্থন করছেন বলে।
তিনি বলেন আমাদের বাস্তবের মাটিতে দাঁড়িয়ে ব্যাপারটি বিবেচনা করতে হবে। তিনি বলেন আমি নিশ্চিত যে আসুর (AASU) নেতা সহ যেসব বুদ্ধিজীবীরা এই ব্যাপারে বিরোধিতা করছেন তাদের সবার সন্তান সন্ততিকে ইংরেজি মাধ্যম বেসরকারি স্কুলে পাঠিয়েছেন বা পাঠাচ্ছেন। তাহলে শুধু সরকারি স্কুলের ছাত্ররা এই সুযোগ থেকে বঞ্চিত হবেন কেন ?
তিনি বলেন যে গণিত ও বিজ্ঞান এই দুটি বিষয় ইঞ্জিনিয়ারিং, মেডিক্যাল সহ বিভিন্ন পেশাদারী শিক্ষাক্রমের ক্ষেত্রে দরকার হয় এবং যারা এইসব বিষয়কে পেশা হিসেবে নিতে আগ্রহী তারা উক্ত বিষয় দুটি প্রাথমিক স্তর থেকে ইংরেজিতে পড়লে অনেকটা সুবিধাজনক অবস্থানে থাকতে পারবেন বলেই তিনি মনে করেন।
তাই সরকারি স্কুলের ছাত্রদের এই সুযোগ থেকে বঞ্চিত করা উচিত নয় এবং সেজন্যই সরকারি এই সিদ্ধান্তে সমর্থন করছেন বলে জানান তিনি। প্রদীপ বাবু (Pradip dutta roy) আরো বলেন যে উগ্র অসমিয়া জাতীয়তাবাদকে হাতিয়ার করে আসু সহ কিছু সংগঠন অনেক দিন ধরে আসামে ব্যবসা চালিয়ে আসছে।
এবং এই ইস্যুতে তাঁদের বিরোধিতা সেই ব্যবসাকে চালু রাখার জন্যই। তিনি বলেন অন্যথা সমুজ্জ্বল সহ আসুর (AASU)অনেক নেতার ষাটোর্ধ্ব বয়েস। এই বয়সে ছাত্র রাজনীতি করার কি কোন অধিকার আছে?
তিনি বলেন তিনি নিজে আসাম (Assam University) বিশ্ববিদ্যালয়ের দাবিতে দশবছর আন্দোলন করেছেন। কিন্তু যেদিন এই বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপিত হয় সেদিনই পদ থেকে ইস্তফা দিয়েছেন । তিনি বলেন মানুষের আবেগকে পুঁজি করে আসলে চাঁদা আর তোলাবাজির মাধ্যমে আসুর (AASU) নেতারা কোটি কোটি টাকা রোজগার করছেন।
তিনি আরো বলেন যে আসাম (Assam University) বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্দোলনেরও কারণও এই উগ্র জাতীয়তাবাদী সংগঠন কারণ আশির দশকে বরাকের ছাত্র ছাত্রীরা গৌহাটি বিশ্ববিদ্যালয়ে (Guwahati University) পড়তে গেলে আসু (aasu) নেতারা তাদের নথিপত্র ছিঁড়ে ফেলতেন, তাঁদের শারীরিক নিগ্রহ করা হত।
বিডিএফ (bdf) মুখ্য আহ্বায়ক বলেন যে একমাত্র এইজন্যই তাঁরা পৃথক বিশ্ববিদ্যালয়ের দাবিতে আন্দোলনে নামতে বাধ্য হয়েছিলেন। প্রদীপ দত্তরায় (Pradip) বলেন যে আশির দশকের বঙাল খেদা আন্দোলনের সময় হিন্দু মুসলিম নির্বিশেষে অসংখ্য বাঙালি আসুর ক্যাডারদের হাতে প্রাণ দিয়েছেন।
এসব এই রাজ্যকে সারা পৃথিবীর কাছে কলঙ্কিত করেছে। কিন্ত তার প্রশ্ন যে আজ অবধি কতজন বহিরাগতকে আসু শনাক্ত বা বহিষ্কার করতে পেরেছে ? প্রদীপ বাবু (Pradip) বলেন যে আসুর এইসব মেকী জাতিয়তাবাদকে এখন আর রাজ্যের জনগণ সমর্থন করেন না এবং তাই তিনি আশা করেন বরাক সহ রাজ্যের জনগণ সরকারের এই সিদ্ধান্তকে বাস্তবের মাটিতে দাঁড়িয়ে বিবেচনা ও সমর্থন করবেন।
বিডিএফ মিডিয়া সেলের পক্ষ থেকে এক প্রেস বার্তায় এই খবর জানিয়েছেন আহ্বায়ক হৃষীকেশ দে।