সংশোধিত নাগরিকত্ব আইনের স্বপক্ষে রবিবার অসমের শুয়ালকুচিতে ভারতীয় জনতা দল শান্তি সভার আয়োজন করে। আইনের সমর্থনে বেশ কয়েকটি যুক্তি প্রদর্শন করেন অর্থমন্ত্রী ড০ হিমন্ত বিশ্ব শর্মা। পাশাপাশি চ্যালেঞ্জের পর চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিলেন বিরোধি দলের প্রতি।
২৯ ডিসেম্বর বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, “ভারতের মুসলমানের ওপর আমরা কোন ধরনের অত্যাচার হতে দেবো না। আপনিও বাংলাদেশে বাস করা হিন্দুদের ওপর কোন অত্যাচার হতে দেবেন না।”
তিনি বলেন, “আমাদের সভায় রামও আছে, রহিমও আছে। কিন্তু কোন চাচা-মামা নেই। ক্যাব আইনে বলা হয়েছে ২০১৪ সালের পূর্বে আসা ২/৩ লক্ষ মানুষ ভারতীয় নাগরিকত্ব লাভ করবে। নাগরিকত্ব আইনে কাট-অফ বছর ২০১৪ রাখা হয়েছে কারণ বিজেপিকে কংগ্রেসের এত বছরের ভুলের বোঝা বয়ে নিয়ে যেতে হচ্ছে। ১৯৭২ সাল থেকে কংগ্রেস এই ভুল করে এসেছে। অসমে ১৯৭২ সাল থেকে অনুপ্রবেশকারী ও শরণার্থীরা ভিড় করছেন। তবে ২০১৪ সালে নরেন্দ্র মোদী প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পর থেকে একটি পিপড়েও এই রাজ্যে আসতে পারেনি।”
মন্ত্রী ড০ হিমন্ত বিশ্ব শর্মা এদিন অসমের বর্তমান ভেঙে পড়া অর্থনৈতিক পরিস্থিতির কথা উল্লেখ করে বলেন, “রাষ্ট্রীয় উদ্যান কাজিরাঙ্গায় পর্যটকের আনাগোনা বন্ধ হয়ে গেছে, হোটেলে মানুষ নেই, জিপ সাফারি বন্ধ হয়ে পড়েছে। আজ গুয়াহাটিতে বিগত ১০ তারিখ থেকে পর্যটক নেই। ব্যবসা নিম্নগামী হচ্ছে। মানুষ কষ্ট করে বেঁচে আছে। এর কারণ, প্রতিবাদ সহিংসরূপ ধারণ করায় মানুষ আসছে না অসমে। এগুলো কখনোই একটি রাজ্যের ইতিবাচক দিক নয়।”
“আমরা সারা বিশ্বে আজ কি বার্তা প্রেরণ করলাম যে অসম একটি অশান্ত রাজ্য? জাপানের প্রধানমন্ত্রী অসমে আসতে পারেননি!”
হিমন্ত বিশ্ব শর্মা এদিন ফের অসমের জনগণকে সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন সম্বন্ধে আশ্বস্ত করে বলেছেন, ‘নতুন কোনও শরণার্থীকে অসমে জায়গা দেওয়া হবে না’।
উল্লেখ্য, জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবের সঙ্গে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বৈঠকের কথা ছিল। কিন্তু নাগরিকত্ব বিল নিয়ে অসমে বিক্ষোভের জেরে আসতে পারলেন না শিনজে।
লোকসভায় নাগরিকত্ব বিল পেশের পর থেকেই বিক্ষোভ শুরু হয়েছে উত্তর-পূর্বে। সীমানা ছাড়িয়ে সেই বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে এক রাজ্য থেকে আর এক রাজ্যে। সবথেকে খারাপ অবস্থা অসমের। বিক্ষোভের আগুনে জ্বলছে ‘সেভেন সিস্টার্স’-এর প্রবেশদ্বার গুয়াহাটিতে। গণতান্ত্রিক প্রতিবাদ সহিংস রূপ ধারণ করেছিল। বর্তমানে যদিও অবস্থা কিছুটা শান্ত, কিন্তু রবিবার এই প্রতিবাদের তীব্র বিরোধিতা করে মন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মা কটাক্ষ করেছেন বিক্ষোভকারীদের। একমাত্র এই সহিংস প্রতিবাদের জন্যেই যে অর্থনৈতিক অবস্থা তলানিতে এসে ঠেকেছে, সে কথা বারংবার জানিয়ে দিলেন।
পাশাপাশি, ফের একবার চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিলেন শুয়ালকুচির মঞ্চ থেকে হিমন্ত। তিনি ভবিষ্যতবাণী করলেন “আগামি ২০২১-এর নির্বাচনে ভারতীয় জনতা দল ১০০ টি আসন লাভ করে জয়ী হবে। এটি আপনারা লিখে রাখুন” আত্মবিশ্বাস হিমন্তর।
আরো বলেন, “নরেন্দ্র মোদির জনপ্রিয়তা আমাদের ১০০ টি আসনে জয়ী করবে। আমরা রাজ্যবাসীর জন্যে কাজ করে যাচ্ছি এবং করবো।”
এবার সময় কথা বলবে।