শিলচর: অসমের (assam) বরাকের (barak) কর্মপ্রার্থীদের প্রতি বঞ্চনা ও মেঘালয়ে অনুপজাতিদের অকারণ, ধারাবাহিক নির্যাতনের প্রতিবাদস্বরূপ বরাক ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট (Barak democratic front) এর ডাকা আগামী ১৮ নভেম্বরের ১২ ঘন্টার Barak বনধের পরিপ্রেক্ষিতে এই বনধ প্রত্যাহার করার নির্দেশ দিয়ে সম্প্রতি বিডিএফ নেতৃত্বকে হুমকি নোটিশ পাঠিয়েছে পুলিশ প্রশাসন।
এই ব্যাপারে এবার প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করলেন bdf কর্মকর্তারা। এক প্রেস বার্তায় বিডিএফ মুখ্য আহ্বায়ক প্রদীপ দত্তরায় বলেন যে তারা গত ১০ নভেম্বর তাঁদের দাবি সংবাদ প্রতিনিধিদের মাধ্যমে মুখ্যমন্ত্রী এবং সরকারকে জানিয়েছিলেন এবং আগামী সাতদিনের মধ্যে সরকারের তরফে তা মেনে নেওয়া না হলে তার প্রতিবাদে ১৮ নভেম্বর বরাক বনধ পালনের জন্য barak বাসীকে আহ্বান জানিয়েছিলেন ।
তিনি বলেন যদি সরকার বা মুখ্যমন্ত্রী উক্ত দাবিগুলি পূরণে উদ্যোগ নিতেন এবং বনধ প্রত্যাহারের আর্জি জানাতেন তবে তাতে নিশ্চয়ই গুরুত্ব দিত bdf।
কিন্তু তা না করে পুলিশ আধিকারিকের তরফে যেভাবে হুমকি নোটিশ দেওয়া হয়েছে তা দুর্ভাগ্যজনক। তার প্রশ্ন থানার অফিসার এইধরনের নির্দেশ দেবার কে ? এই প্রসঙ্গে bdf মুখ্য আহ্বায়ক আরো বলেন যে আকসার সভাপতি থাকাকালীন ১০ বছরে তাঁরা ৩৬ টি বনধ পালন করেছিলেন কিন্তু কখনো এরকম পুলিশি হুমকি নোটিশ পাননি।
তখন Assamর তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী হিতেশ্বর শইকিয়া ও প্রধানমন্ত্রী Rajib Gandhi কয়েকবার তাদের বনধ প্রত্যাহার করার অনুরোধ করেছিলেন। তিনি বলেন বর্তমান মুখ্যমন্ত্রীর সাথে তাঁর পরিচয় হিতেশ্বর শইকিয়ার বাড়িতেই এবং রাজনৈতিক মতাদর্শ পৃথক হলেও এখনো সুসম্পর্ক বজায় রয়েছে।
প্রদীপ বাবু আরো বলেন যে যথাসময়ে আবেদন করা স্বত্ত্বেও এবার প্রশাসনের তরফে বনধের প্রচারে মাইকিং এর অনুমতি মিলেনি। এভাবে প্রশাসনের তরফে বিভিন্ন বাধা বিপত্তি আসছে। তবে তিনি বলেন যে তারা এসব নিয়ে আদৌ মাথা ঘামাচ্ছেন না।
কারণ তারা জানেন যে যদি তাদের উত্থাপিত দাবি নিয়ে জনগণের মধ্যে ঐকমত্য থাকে তবে এই বনধ স্বতস্ফুর্ত ভাবে সফল হবে। বিডিএফ মিডিয়া সেলের আহ্বায়ক জয়দীপ ভট্টাচার্য বলেন যে এই নোটিশ থেকে মনে হচ্ছে bdf কোন সমাজবিরোধী কাজের পরিকল্পনা করছে।
তিনি বলেন একটি রাজনৈতিক দল বনধের ডাক দিতেই পারে।এই অধিকার সংবিধান স্বীকৃত। জনগন তা পালন করবেন কিনা সেই সিদ্ধান্ত তাঁদের। তাই পুলিশ আধিকারিকের এই নোটিশ পেয়ে তাঁরা রীতিমত অবাক হয়েছেন।
তিনি বলেন যে বিজেপি সরকার ক্ষমতায় আসার পর থেকেই গনতান্ত্রিক কোন আওয়াজ তুললে প্রশাসনিক হুমকি,মিথ্যা মামলা দমন পীড়ন ইত্যাদির মাধ্যমে তা রুদ্ধ করে দেওয়ার প্রবণতা প্রচন্ড বেড়েছে। তিনি বলেন এটি সুস্থ গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার জন্য অশনিসংকেত এবং এর বিরুদ্ধে প্রত্যেক গণতন্ত্র প্রেমী নাগরিককে রুখে দাঁড়াতে হবে ।
অন্যথা যে কোন কেউ এভাবে প্রশাসনিক পক্ষপাত ও হেনস্থার শিকার হতে পারেন। বিডিএফ এর আরেক আহ্বায়ক আইনুল হক মজুমদার বলেন যেহেতু কোন সরকারি তথ্য নেই , তাই শাসকদলের একাংশ নেতা বলে বেড়াচ্ছেন যে চাকরি নিয়ে বরাক বঞ্চনা আদৌ হয়নি, এখানকার প্রচুর প্রার্থী নিযুক্তি পেয়েছেন।
বিডিএফ আহ্বায়ক বলেন যে এবারে আমাদের প্রথম দাবিই ছিল বরাকের তিন জেলা থেকে কজন এই তালিকায় স্থান পেয়েছেন প্রাপ্ত নম্বর সহ সেই তালিকা সংবাদ মাধ্যমে বিজ্ঞাপন আকারে প্রকাশ করতে হবে। অন্য দাবি না মানলেও এই সামান্য দাবি পূরণে সরকারের কোন সমস্যা থাকার কথা নয় এবং এতে আমাদেরও সন্দেহ নিরসন হত।
তিনি বলেন তা না করে এইসব অপপ্রচার চালিয়ে জনগণের ক্ষোভকে দমিয়ে রাখা যাবেনা। তার মন্তব্য বরাকের বিজেপির নেতৃত্বের যদি সৎসাহস থেকে থাকে তবে এই তথ্য পেশ করে তার প্রমান দিক। বিডিএফ কেন্দ্রীয় কমিটির অপর বিধায়ক খাইদেম কান্ত সিং বলেন যে কংগ্রেস, তৃণমূল কংগ্রেস, এআইউডিএফ, সিপিআই,আমরা বাঙালি, বাঙালি নবনির্মান সেনা, Assam মজুরি শ্রমিক ইউনিয়ন,ফোরাম ফর স্যোসাল হারমনি,মার্চ ফর সায়েন্স সহ বহু দল, সংগঠন ইতিমধ্যে এই বনধকে সমর্থন ও সক্রিয় সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছেন।
তিনি বলেন এটাই bdf এর উত্থাপিত দাবির যথার্থতা প্রমাণ করছে। খাইদেম কান্ত সিং বলেন এই বনধের আহ্বায়ক ও সমর্থনকারী সমস্ত দল, সংগঠন গনতান্ত্রিক আদর্শে বিশ্বাসী। তাই বনধের সময় কোন ধরনের জোরজবরদস্তি বা হিংসার যেমন কোন প্রশ্নই উঠেনা ,সরকারি কোন সম্পত্তির হানিরও কোন সম্ভাবনা নেই।
তিনি বলেন এমনিতে এই বনধ সম্পূর্ণ শান্তিপূর্ণ থাকবে। তবে তিনি গুরুত্ব দিয়ে বলেন যে তাঁদের কাছে খবর আছে যে বিজেপি যুব মোর্চার কিছু সদস্য এটিকে বানচাল করার পরিকল্পনা করছে এবং এই দিন তাঁরা উত্তেজনা সৃষ্টি ও হিংসাত্মক ঘটনা ঘটাবার ছক কষছে।
তাই এই ব্যাপারে প্রশাসনকে বিশেষ সতর্ক থাকার আগাম আবেদন জানিয়েছেন তিনি। একই সাথে জনগনকে কোন ধরনের প্ররোচনায় কান না দেবার আহ্বানও জানিয়েছেন তিনি। বিডিএফ মিডিয়া সেলের পক্ষ থেকে এক প্রেস বার্তায় এই খবর জানিয়েছেন আহ্বায়ক হৃষীকেশ দে।