ভারতের মোট ১০টি করোনা ভাইরাস সংক্রমণের স্থান হিসেবে নিজামুদ্দিন রয়েছে আশংকার উর্দ্ধে। নয়া দিল্লির তবলিগি জামাত কেন্দ্রীয় সরকারের গভীর চিন্তার বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে।
মানববাদী লেখক তসলিমা নাসরিন বরাবরের মতো হলেও আরো ক্ষুরধার ভাষায় সমালোচনা করেছেন তবিলিগির।
‘এই তবলিগি জামাত নিষিদ্ধ করা হোক। তবলিগি জামাতে অংশ নিয়ে বহু মানুষ করোনা পজিটিভে আক্রান্ত হয়েছেন, পাশাপাশি মারা যাচ্ছেন। মানবসমাজে এমন হিংস্রতা ছড়ানো এই জামাত নিষিদ্ধ করা হোক।’
এর আগেও তিনি ক্ষোভ উগড়ে দিয়েছিলেন তবলিগি জামাতের বিরুদ্ধে।
তিনি লিখেছিলেন,
“তবলিঘি জামাতের প্রতিষ্ঠান হরিয়ানা। উজবেকিস্তান, কাজাখাস্তান, তাজাকিস্তানের মতো দেশ এই প্রতিষ্ঠানকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে। জামাতের সঙ্গে পরোক্ষে যোগ রয়েছে সন্ত্রাসবাদের।”
উল্লেখযোগ্য যে, নিজামুদ্দিন ফেরত জামাতিয়ারা উন্মত্তের মতো আচরণ করছেন কোয়ারেন্টাইন কক্ষে।
চিকিৎসক এবং স্বাস্থ্যকর্মীদের গায়ে থুতু ছিটানোর অভিযোগ তো আগেই ছিল। এবার কোয়ারেন্টাইনে থাকা নিজামুদ্দিনের একদল লোক হাসপাতালে নগ্ন হয়ে ঘোরাফেরা করছেন। এবং মহিলা স্বাস্থ্যকর্মীদের দিচ্ছেন অশ্লীল ইঙ্গিত!
উত্তরপ্রদেশের গাজিয়াবাদের এমএমজি জেলা হাসপাতালের মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক এ বিষয়ে পুলিশের কাছে চিঠি দিয়ে অভিযোগ জানিয়েছেন।
এদের কর্মকাণ্ড স্তম্ভিত করে ফেলেছে দেশবাসীকে।
উলঙ্গ হয়ে অভব্য আচরণ করা, স্বাস্থ্যকর্মীকে চিকিৎসা ক্ষেত্রে সাহায্য না করা প্রভৃতি সম্বন্ধে বেশ কয়েকজনের বিরুদ্ধে গাজিয়াবাদের কোতওয়ালি থানায় ভারতীয় দণ্ডবিধির ৫৪, ২৯৪, ৫০৯, ২৬৯, ২৭০ এবং ২৭১ ধারার অধীনে ২৮৮/২০ নম্বরে মামলা দায়ের করা হয়েছে।
অশ্লীলতার চূড়ান্ত সীমায় চলে গেছে দিল্লির নিজামুদ্দিনে অংশগ্রহণকারী জামাতকারীরা।
অনেকেই নিম্নাঙ্গে কোনও পোশাক রাখছে না। মহিলা স্বাস্থ্যকর্মীদের উদ্দেশে অশালীন অঙ্গভঙ্গি করছে। বিভিন্ন রকমের অশালীন গান শুনছে। শুধু তাই নয়, হাসপাতালের সাফাই কর্মীদের কাছ থেকে সিগারেট চাইছে তারা। চাহিদা অনুযায়ী জোগান দিতে না পারলেই দুর্ব্যবহার করতে শুরু করছে।
এ ঘটনা কোনভাবেই সহ্য করা যায় না।
তসলিমা নাসরিন প্রতিবাদ জানাচ্ছেন, তাঁরা কোয়ারেন্টাইনে থাকছে না। দুর্ব্যবহার করছে স্বাস্থ্যকর্মীদের সঙ্গে। তাঁদের বন্দী করা হোক মসজিদে এবং দেখা যাক আল্লা কীভাবে তাঁদের রক্ষা করে!
তবলিগি জামাতে অংশ নেয়া মোট ৯৬০ জন বিদেশি প্রতিনিধিকে কালো তালিকাভুক্ত করেছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
সেখানে বিদেশের প্রায় ১৩০০ প্রতিনিধি যোগ দিয়েছিলেন। ভারতের ছিল ৭ হাজারের উর্দ্ধে মুসল্লি!
আজ, সংবাদ সম্মেলনে অসমের স্বাস্থ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মা জানিয়েছেন, সমগ্র অসম ছেয়ে ফেলেছে নিজামুদ্দিন ফেরতরা। অথচ সঠিকভাবে এখনো কোন তথ্য লাভ করা সম্ভব হচ্ছে না।
এ পর্যন্ত অসমে ২৫ জনের দেহে করোনা পজিটিভ ধরা পড়েছে। তার মধ্যে ২৪ জনেরই নিজামুদ্দিনের সঙ্গে সম্পর্ক রয়েছে।
সুতরাং ভারতে নিজামুদ্দিন ভয়ংকর আশংকার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।