১৯৭২ সালে গঠিত পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির (PCJSS) প্রতিষ্ঠাতা সদস্য জ্যোতিরিন্দ্র বোধিপ্রিয় লারমা (সন্তু লারমা) ভারতে এসেছেন কেন্দ্রীয় সরকারের সমর্থন আদায়ের জন্যে।
১৯৯৭ সালের ২ ডিসেম্বর পার্বত্য চট্টগ্রাম শান্তি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। সন্তু লারমার নেতৃত্ব সকল ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠিগুলো মেনে না নিয়ে সশস্ত্র সংগ্রামে লিপ্ত হয়। ফলে চুক্তি বাস্তবায়ন প্রক্রিয়া এখনো সমাপ্ত করা সম্ভব হয়ে উঠেনি।
এদিকে জনসংহতি সমিতির নেতা সন্তু লারমার অভিযোগ, “সরকার চুক্তি বাস্তবায়নে আগ্রহী নয়, তারা বিশ্বাস ভঙ্গ করেছে।”
ফলে পার্বত্য শান্তি চুক্তি সম্পূর্ণরূপে বাস্তবায়নের জন্যে এবার তিনি ভারতে চিকিৎসার খাতিরে এসেছেন এই আড়ালে নয়া দিল্লিতে উপস্থিত হয়ে শীঘ্রই সরকারি মন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনা সম্পন্ন করতে চাইছেন।
তাঁর একান্ত বিশ্বাস ভারত সরকারের সমর্থন তিনি পাবেন।
উল্লেখযোগ্য যে, তামিল ইস্যুতে যেভাবে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা গ্রহণ করেছে ভারত, সেভাবে লারমা নয়া দিল্লিকে স্মরণ করিয়ে দিতে চাইছেন যে, পার্বত্য চট্টগ্রামে একই ভূমিকা ভারত পালন করলে উপকার হবে।
তাঁর ঘনিষ্ঠ সূত্র নর্থ ইস্ট নাও’ কে জানিয়েছে যে পিসিজেএসএস এবং এর সশস্ত্র শাখা শান্তি বাহিনী বিদ্রোহ ছেড়ে দিয়েছিল এবং লারমা ১৯৯৭ সালে শেখ হাসিনা সরকারের সাথে চুক্তিটি বাস্তবায়নের জন্য স্বাক্ষর করেন।
“তবে ২০০০-০৬ সালে হাসিনার উত্তরসূরি সরকার অ্যাকর্ডকে হ্রাস করে দিয়েছিল এবং সেনাবাহিনীকে ভারত ও মায়ানমারের সীমান্তবর্তী পার্বত্য অঞ্চল পরিচালনা করার জন্য কার্যকর ক্ষমতা প্রদান করেছিল। এরপর ফের হাসিনা ক্ষমতায় আসার পরও এই অঞ্চলে বেসামরিক নিয়ন্ত্রণ ক্ষেত্রে পুনর্বিবেচনা করেননি এবং এই বিষয়ে তিনি সেনাবাহিনীকে হতাশ করতে চাননি।”
পিসিজেএসএসের শীর্ষ নেতা এই কথা জানিয়েছেন। তবে নাম প্রকাশ না করার শর্তে।
আদিবাসী উপজাতি লোকেরা জমি ও জীবিকার ক্ষতি আশংকায় এ মুহূর্তে ক্রমশ অস্থির হয়ে উঠছে।
চিটাগং হিল ট্রাকটস (CHT) ইস্যু নিয়েই লারমা ভারতের দুই সরকারি উচ্চপদস্থ আধিকারিকের সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে চাইছেন। এবং তিনি যথেষ্ট আশাবাদী মোদি সরকারের ওপর যে CHT চুক্তি সম্পূর্ণ বাস্তবায়নের জন্যে ভারত, বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে বোঝাপড়া করবে, যেভাবে তামিল ইস্যু নিয়ে শ্রীলঙ্কাকে করছে।
প্রসঙ্গত পার্বত্য শান্তি চুক্তি বাংলাদেশের পার্বত্য চট্টগ্রামের উপজাতি পাহাড়ীদের সঙ্গে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ বন্ধ এবং শান্তি প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে সম্পাদিত একটি শান্তি চুক্তি।
এবার এই মর্মে প্রেস বিজ্ঞপ্তি জারি করেছে পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি ঃ
গত ১২ ফেব্রুয়ারি ভারতের আসাম রাজ্যের গৌহাটি থেকে নিউজ পোর্টাল ‘Northeast Now’-এ প্রকাশিত ‘Bangladesh: Push for Chittagong Hill Tracts Accord’ শীর্ষক সংবাদ প্রতিবেদন এবং উক্ত সংবাদের উপর ভিত্তি করে গত ১৩ ফেব্রুয়ারিparbattanews.com-এ প্রকাশিত ‘পার্বত্য চট্টগ্রামে ভারতের হস্তক্ষেপ চাইছেন সন্তু লারমা’ ও chttimes24.com-এ প্রকাশিত ‘শান্তিচুক্তিবাস্তবায়নে ভারতের হস্তক্ষেপ চাইছেন সন্তু লারমাঃ দাবী ভারতীয় গণমাধ্যমের’ শীর্ষক সংবাদের প্রতি পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতিসমিতির দৃষ্টি আকর্ষিত হয়েছে।
উক্ত অনলাইন নিউজ পোর্টালে প্রকাশিত সংবাদ সর্বৈব মিথ্যা, ভিত্তিহীন ও বানোয়াট। পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির সভাপতিও পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদের চেয়ারম্যান জ্যোতিরিন্দ্র বোধিপ্রিয় লারমার মাতৃ-পিতৃ তর্পণ ও ধর্মীয় আচারাদি সম্পাদনউপলক্ষে ভারত গমনকে রাজনৈতিক হীনউদ্দেশ্যে ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করা, পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি বাস্তবায়নের গণতান্ত্রিক আন্দোলনকেনস্যাৎ করা, সর্বোপরি জনসংহতি সমিতির নেতৃত্বকে বিতর্কিত করার হীন উদ্দেশ্যে বিশেষ স্বার্থান্বেষী মহল কর্তৃক এ ধরনের ভিত্তিহীন, বানোয়াট ও রাজনৈতিক উদ্দেশ্য-প্রণোদিত সংবাদ প্রচার করা হচ্ছে বলে জনসংহতি সমিতি মনে করে।
পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি nenow.in, parbattanews.com ও chttimes24.com-এ প্রকাশিত এই মিথ্যা, ভিত্তিহীন ও বানোয়াটসংবাদের তীব্র প্রতিবাদ ও নিন্দা জ্ঞাপন করছে।
সজীব চাকমা
সহ তথ্য ও প্রচার সম্পাদক
পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি