চিকিৎসার অবহেলায় এক রোগীর মৃত্যুকে ঘিরে মঙ্গলবার উত্তাল হল হাইলাকান্দি এসকে রায় সিভিল হাসপাতাল।
মঞ্জুমালা রায় নামের মৃতদেহকে সমঝে নিতে রাজি নয় তার পরিবারের লোক। এনিয়ে রীতিমত উত্তাল হয়ে উঠে সিভিল হাসপাতাল।
মৃতদেহ “ফেমেল ওয়ার্ডের বেডে” পরিত্যাক্ত অবস্থায় পড়ে থাকে দিনভর। এনিয়ে পরিস্থিতি সামাল দিতে হাসপাতাল অধীক্ষক ডা. সুদীপ কুমার চক্রবর্তী, কর্তব্যরত চিকিৎসক রুপকুমার দেব, সমরজিত চক্রবর্তী মাঠে নামেন।
কিন্তু এতেও মৃতদেহ সমঝে নিতে রাজি হননি স্বজনেরা। এনিয়ে দফায় দফায় বৈঠক চলে হাসপাতালে। কোন কিছুর সুরাহা করতে না পারায় অবশেষে জেলাশাসকের কোর্টে বল ঠেলে দেন হাসপাতালের অধীক্ষক চক্রবর্তী।
ঘটনার মৃতা মঞ্জুমালা রায়ের মেয়ে অর্চনা রায় অভিযোগ করে বলেন, তার মা মঞ্জু মালা জ্বরে আক্রান্ত হলে সোমবার হাইলাকান্দি এসকে রায় সিভিল হাসপাতালে এনে তাকে ভর্তি করেন।
কিন্তু হাসপাতালে কোন চিকিৎসা পাননি মঞ্জু। এমতাবস্থায় মঙ্গলবার দুপুর থেকেই তার অবস্থা সঙ্কটজনক হতে থাকায় তারা বারবার কর্তব্যরত নার্সকে জিজ্ঞাসা করলে উল্টো তাদের প্রতি বিরক্ত হয়ে দুর্ব্যাবহার করেন এই নার্স। দুপুর একটা থেকে রোগীকে অনড় দেখে অর্চনারা বারকয়েক নার্সের দ্বারস্থ হলে তাকে ধমক দিয়ে নার্স বলেন রোগী ঘুমাচ্ছে।
কিন্ত ততক্ষনেই রোগী মঞ্জুমালা মারা যান। তাকে বেডে রেখে বিকেল আড়াইটা নাগাদ অন্য বেডের রোগীর এটেন্ডেন্সকে মঞ্জুমালাকে দেখতে তার টিকেট দিয়ে হাসপাতালের আউট ডোরে থাকা কর্তব্যরত চিকিৎসকের কাছে পাঠান। এর ফাঁকে কর্তব্যরত নার্সের ডিউটির সময় ফুরিয়ে যাওয়ায় চলে যান।
এমতাবস্থায় আউট ডোরের ডাক্তার গিয়ে দেখে মঞ্জুমালাকে মৃত বলে ঘোষনা করেন। এতেই উত্তাল রূপ ধারণ করে হাসপাতাল। এব্যাপারর হাসপাতাল সুপার ড.সুদীপ কুমার চক্রবর্তী তার প্রতিক্রিয়ায় জানান, মঞ্জুমালা একজন শ্বাসকষ্ট রোগী। তার প্রয়োজনীয় চিকিৎসা হয়েছে। মঙ্গলবার তিনি হাসপাতালে থাকা অবস্থায় এব্যাপারে তাকে কেউ কিছু জানান নি। তবে কর্তব্যরত নার্স কিংবা কোন কর্মীর গাফিলতি তদন্তে বেরোলে তার উপযুক্ত শাস্তি তিনিও চান বলে হাসপাতাল অধীক্ষক সুদীপ চক্রবর্তী স্পষ্ট জানিয়েছেন।
মঞ্জুমালার মৃত্যুবরণকে রহস্যজনকভাবে আড়াল করার কারণ জানতে চান তার স্বজনেরা। এভাবেই যদি সরকারি হাসপাতালে রোগী নিয়ে ছিনিমিনি খেলা করা হয় তবে এর উপযুক্ত তদন্ত ও বিচার ছাড়া মৃতদেহ সমঝে নেবেন না বলে অর্চনারা সাফ জানিয়ে দেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে।
অবশেষে হাইলাকান্দি জেলাশাসকের পক্ষে এক অতিরিক্ত জেলাশাসক হাসপাতালে গিয়ে এব্যাপারে তদন্ত করে দোষীদের কঠোর শাস্তি দেওয়ার আশ্বাস দিয়ে মৃতদেহ তার স্বজেনের হাতে সমঝে দিয়েছেন বলে জানা গেছে।
জানা গেছে, মঞ্জুমালার স্বামীর বাড়ি বোয়ালিপার দ্বিতীয় খণ্ডে। বাবার বাড়ি মোহনপুর রেভিন্যু এলাকায়।