করোনা ভাইরাস প্রতিরোধের জন্যে ভারতে চলছে লকডাউন।
লকডাউনের সময় দেশের সমস্ত সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কার্যালয় বন্ধ থাকার পাশাপাশি দেশের জনগণ ঘরবন্দী হয়ে আছেন।
অত্যাবশ্যকীয় রেশন দোকান খোলা ছাড়া দেশের সব ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান বন্ধ।
এমন সর্বাত্মক লকডাউনের ফলে সাংঘাতিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে বৃত্তিধারী যৌনকর্মীরা।
লকডাউনে সীতা(নাম পরিবর্তন)র ব্যবসা সম্পূর্ণভাবে বন্ধ করে দিয়েছে।
সীতা হলো অসমের শিলচরের রেড-লাইট এলাকার একজন পেশাগত যৌনকর্মী।
শিলচরের প্রেমতলায় অবস্থিত রেড-লাইট এলাকাটি ‘চৌদ্দ’ নম্বর গলি (১৪ নং গলি) নামে বিখ্যাত।
এটি হচ্ছে উত্তর-পূর্বাঞ্চলের সবচাইতে বড় গণিকালয় যেখানে প্রায় ২০০জন যৌনকর্মী রয়েছেন। এর মধ্যে প্রায় প্রত্যেকেই মানব সরবরাহকারী চক্রান্তের শিকার হয়ে এই পেশায় নিয়োজিত হতে বাধ্য হয়েছেন।
সীতা বলছেন, এই মারাত্মক ভাইরাসের ফলে মানুষ শংকিত।
সীতার মতে লকডাউন এবং ভাইরাস সংক্রমণের ভয়ে তাঁদের কাছে গ্রাহক আসা বন্ধ হয়েছে। এবং খুব শিগগিরই আর গ্রাহকের তাঁদের কাছে আসার সম্ভাবনা নেই।
তাঁরা প্রত্যেকে দৈনিক উপার্জনে জীবন নির্বাহ করেন। জমা টাকা বলতে কিছু নেই।
এই সংকট মুহূর্তে সীতার বোন বলছেন, কত দিন আমরা নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী কিনে খাবো? অন্যদিকে দোকানাদারই বা আমাদের বাকিতে দেবেন কেন? তাঁরাও জানেন যে, বাকি শোধ করার সামর্থ আমাদের নেই।”
তাঁরা বলেন যে, শিলচরের কিছু সহৃদয় ব্যক্তি তাঁদের গত রবিবার খাদ্য সামগ্রী বিতরণ করেছেন।
বড় কষ্টে দিন যাপন করছেন যৌনকর্মীরা। এভাবে আর ১ মাস উপার্জনহীন থাকলে বেঁচে থাকাই অসম্ভব হয়ে যাবে বলে জানাচ্ছেন তাঁরা।
অন্যদিকে, লিগেসি ডাটা সংগ্রহ করতে না পারার জন্যে তাঁদের নাম এনআরসি থেকেও বাদ পড়েছে!
“এইচআইভিকে ভয়ংকর বলে আমরা জানি, এবং সেজন্যে আমরা প্রোটেকশন নিয়ে থাকি। কিন্তু করোনা ভাইরাস হচ্ছে গুপ্তঘাতক”। জল্ভরা চোখে বলেন সীতা।