নদী ভাঙ্গন প্রতিরোধে দফায় দফায় অর্থ বরাদ্দ হলেও আন্তর্জাতিক সীমান্তবর্তী কাটিগড়া কেন্দ্রের হরিটিকর দ্বিতীয় খণ্ডের ভাঙ্গন অংশ প্রতিরোধে আজও বিমুখ সরকার ।
প্রায় তিনশো মিটার ভাঙ্গনের প্রতিরোধমুলক ব্যবস্থা গ্রহনে বিভাগীয় উদাসীনতায় বারবার মুখ থুবড়ে পড়েছে সরকারি উদ্যোগ ।
মঙ্গলবার ভাঙ্গন অংশ পরিদর্শনে গেলে দেখা যায় কাছাড় জেলার কাটিগড়া কেন্দ্রের ইন্দো-বাংলা সীমান্ত লগোয়া হরিটিকর ২য় খণ্ডের ভয়াবহ পরিস্থিতি । দফায় দফায় নদী ভাঙ্গনের কবলে পড়ে নিশ্চিহ্ন হতে চলেছে গ্রামটি ।
অন্তত ৫০টি পরিবারের বসতভিটে তলিয়ে গেছে বরাক নদীতে । আরও অনেকেই ভিটেহারা হওয়ার শঙ্কায় প্রহর গুণছেন। নতুনভাবে প্রায় তিনশো মিটার অংশ বিশাল ভাঙ্গনের মুখে,অসহায় ১২ টি পরিবার । ঘরের ভিতরেও দেখা দিয়েছে ফাটল , বেশ কয়েকটি বাড়িঘর নদীগর্ভে চলে যাওয়ায় কয়েকটি পরিবার আশ্রয় নিয়েছেন অন্যত্র । আচমকা তলিয়ে যাওয়ার আশঙ্কায় রাতে ঘুম নেই নদী লগোয়া পরিবারগুলোয়। প্রশাসন ও স্হানীয় বিধায়কের প্রতি কান্নাভেজা কণ্ঠে কাতর আর্তনাদ বিপন্ন এলাকাবাসীর।
বিহিত ব্যবস্থা নেওয়ার দাবিতে সংবাদ সম্মুখে কাতর আর্জি জানিয়ে অসহায় সর্বস্বান্ত সুনীলচন্দ্র দাস,ঝুমারানী দাস,বিশ্বজিৎ রায়,সুবোধ দাস, ধীরেন্দ্রচন্দ্র দাস,মনীন্দ্র দাস, মন্টু দাস,পল্লব দাস, শিল্পীরানী দাস,সুধন্য দাস, সুকান্ত দাস,জীতেন্দ্র দাসরা সংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলতে গিয়ে প্রায় কেঁদেই ফেলেন তাঁরা।
আসলে সাতপুরুষের ভীটেমাটি বরাকনদীর রাক্ষুসে আগ্রাসনে ছিন্ন বিছিন্ন । জানান এমন অসহায় পরিস্থিতিতে তারা পরিবার পরিজনদের নিয়ে কোথায় যাবেন? ভিটেমাটি হারাদের মধ্যে অধিকাংশ দিনমজুর, মাছ বিক্রেতা,কৃষিজীবী । মাথা গোঁজার ঠাই বলতে এটুকুই যা বর্তমানে বরাক নদীর গোগ্রাসে।
দীর্ঘদিন ধরে নদীর এমন ভয়াবহ পরিস্থিতি এরপরও জলসম্পদ বা বন্যা নিয়ন্ত্রণ বিভাগের উদাসীনতা। যা আজ মারাত্মক রূপ ধারণষ করেছে বলে ভুক্তভোগীদের অভিযোগ। তাদের কথায় বিভাগীয় পরিদর্শনই সার ।
কোন এক অদৃশ্য কারণে ভাঙ্গন প্রতিরোধে সংশ্লিষ্ট অংশের প্রতিরোধমুলক ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছেনা। কেন হচ্ছে না ?এনিয়ে ব্যাপক ক্ষোভও পরিলক্ষিত হয় এদিন।
আক্ষেপের সুরে সুনীলবাবুরা বলেন কাটিগড়ার নদীভাঙ্গন খাতে কাড়িকাড়ি অর্থ মঞ্জুর হলেও তাদের সংশ্লিষ্ট এলাকার জন্যে কিছুই ঝুটে না,ফলে ধীরে ধীরে আজ এমন দুর্দশাগ্রস্ত অবস্থা তাদের। অন্তত বসতবাড়ি ছেড়ে পালাতে হতো না ।যদি বা অর্থ মঞ্জুর হয়ে থাকে তাহলে কেন ভাঙ্গন প্রতিরোধে ব্যবস্থা নেওয়া হলো না? এমন প্রশ্নকে সামনে রেখে জেলাপ্রশাসন সহ বিভাগীয় উর্ধতন কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন তারা ।
এদিকে দক্ষিণ কাটিগড়ার জেলাপরিষদ সদ্স্য অসীম দত্ত সম্প্রতি ভাঙ্গন অংশ পরিদর্শন করে আশ্বাস দিলেও কতটুকু কার্যকরী হবে,এনিয়ে সংশয় প্রকাশ করেন তাঁরা ।
জেলা পরিষদ সদস্য অসীম দত্ত সাংবাদিকদের জানান হরিটিকর দ্বিতীয় খণ্ডের ভয়াবহ নদীভাঙ্গন পরিস্থিতির বিষয়টি বিষয়টি বিধায়ক অমরচাঁদ জৈনের গোচরে আনা হয়েছে ।
বিধায়কও আশ্বস্ত করেছেন খুব শীঘ্রই বিভাগীয় কর্তাদের নিয়ে এলকা পরিদর্শন করে ওই পরিবার গুলোর বিহিত ব্যবস্থাকল্পে তিনি তদ্বির করবেন। জানান জেলাপরিষদ সদস্য।