অন্যায় দেখলে তার বিরুদ্ধে সঙ্গে সঙ্গে রুখে দাঁড়ানোর শিক্ষাই পেয়ে থাকি আমরা।
কিন্তু আজকের দিনে কোনও অন্যায়ের বিরুদ্ধে সরব হলেও উল্টে সেই বিরোধকারীকেই হয়রানির শিকার হতে হয়।
হ্যাঁ এমনি এক ঘটনা ঘটেছে ২৩ বছরবয়সী যুবতীর সঙ্গে।
অসম শিলচরের বাসিন্দা শ্বেতা রায় সোমবার তাঁর মায়ের সঙ্গে শিলচর রেল স্টেশন থেকে কাঞ্চনজংঘা এক্সপ্রেসে করে শিয়ালদহর উদ্দেশ্যে রওয়ানা দেন। স্লিপার ক্লাস বগিতে করে বেশ ভালো ভাবেই যাচ্ছিলেন তাঁরা।
কিন্তু ট্রেনটি কামাখ্যা স্টেশন পৌঁছতেই শুরু হয় অঘটন।
শ্বেতা খোদ সংবাদ মাধ্যমে জানান, ট্রেনটি কামাখ্যা স্টেশনে পৌঁছলে সেই স্টেশন থেকে জেনারেল টিকিট করা অসংখ্য যাত্রী তাঁদের বগিতে উঠে পড়ে। আর তাদেরকে উঠতে সাহায্য করছিলেন রেলওয়ে পুলিশ ফোর্সের এক কর্মী।
শেষে এমন অবস্থা হয় যে ওই বগির পাশাপাশি শ্বেতাদের কামরাতে পা রাখার জায়গা ছিল না।
ফলে, দমবন্ধ হয়ে যাওয়ার অবস্থায় শ্বেতা নিজেই রেলওয়ে কর্তৃপক্ষকে নালিশ জানানোর সিদ্ধান্ত নেন। কেন না, একজন যাত্রী সুরক্ষিত হয়ে যাওয়ার জন্যই রিজার্ভেশন টিকিট কাটেন।
আর রিজার্ভেশন টিকিট কেটেও যদি এমন হারাহাস্তির শিকার হতে হয় তাহলে স্বাভাবিক ভাবেই রেল কর্তৃপক্ষের দ্বারস্থ হবেন যে কোনও যাত্রী।
সেই হিসেবে শ্বেতা যখন নালিশ জানাতে প্রস্তুত হন, সেই কথা শুনে এগিয়ে আসেন রেলওয়ে পুলিশ ফোর্সের কর্মী।
তিনি এসে প্রথমে শ্বেতাকে অসমিয়া ভাষায় কিছু বললে, শ্বেতা ওই ভাষা বুঝতে পারে না বলে জানান। কিন্তু ওই কর্মী অসমিয়া ভাষাতেই কথা বলার জন্য শ্বেতাকে ধমক দেন।
এতেই শেষ নয়, শ্বেতার উদ্দেশ্যে কর্মীর উক্তি ‘কারোর বাবার রেল নয় যে নালিশ করবে। দেখি কে কি ভাবে নালিশ জানায়’।
এ কথায়ই শুরু হয় বাক-বিতণ্ডা। অনেক তর্ক-বিতর্কের পর এক সময় ওই কর্মী শ্বেতার গাঁয়ে হাত তোলেন।
এতে ওই কামরায় থাকা অন্যান্য যাত্রীরা ওই কর্মীকে বাধা দিতে উঠে আসেন।
পরে, ওই কর্মীর নাম জানতে চেষ্টা করলে তিনি তাঁর ওর্দিতে থাকা ব্যাজটি রেল লাইনে ফেলে দিয়ে চলে যান।
পরে, ট্রেনটি রঙ্গিয়া স্টেশনে পৌঁছলে সেখানে শ্বেতা ট্রেনের চেন টেনে টিটি-র দ্বারস্থ হন। টিট-কে নালিশ জানাতে চাইলে তিনি পাত্তা দেন নি। বিষয়টি তিনি দেখবেন বলে শ্বেতাকে চলে যেতে বলেন।
শিয়ালদহ পৌঁছে এ প্রেক্ষিতে একটি অভিযোগ দায়ের করবে বলে জানিয়েছেন শ্বেতা।
এমন এক জঘন্য ঘটনার বিবরণ দিয়ে তাঁর নিজস্ব ফেসবুক পেজে একটি ভিডিও পোস্ট করেছেন ওই যুবতী।
এই ঘটনায় একটি ট্রেনে মহিলা সুরক্ষা নিয়েও প্রশ্ন তোলেছেন শ্বেতা। রীতিমত তিনি উদ্বেগ প্রকাশ করে জানিয়েছেন ট্রেনে নিরাপত্তা ব্যবস্থা থাকলেও কেনও আজ এমন ঘটনার সম্মুখীন হতে হল? রেলওয়ে পুলিশ কর্মীদের কাজ যাত্রীদের সব সময় সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেওয়া। কিন্তু এখানে তো ব্যতিক্রমী চিত্র দেখা গিয়েছে।
এছাড়াও যে ভাবে ভাষা নিয়ে ধমক দেওয়া চলছে তা একবারেই মানতে রাজি নন ওই যুবতী।