লকডাউনের জেরে স্তব্ধ জনজীবন। কর্মহীন হয়ে পড়েছেন হাজার হাজার মানুষ। দেখা দিয়েছে চরম খাদ্যসংকট। এরথেকেও অনুতাপের বিষয়, খাদ্যসংকটের পাশাপাশি ৬ নং জাতীয় সড়ক সংলগ্ন কাতিরাইল পার্বত্যাঞ্চলের বৃহত্তর এলাকায় পানীয়জলের তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে।
এককথায় পানীয়জলের অভাবে চরম আকার ধারণ করেছে এখানকার জনমানষে। কাতিরাইল পার্বত্যাঞ্চলটিতে উচ্ছমধ্যবিত্ত ও মধ্যবিত্তের সংখ্যা নেহাৎ। হতদরিদ্রশ্রেণীর জনগনের সংখ্যাটাই বেশি। নুন আনতে পান্তা ফুরায় অবস্থায় কালাতিপাত করা জনগণের ঘনবসতি এলাকাটি। এই পরিস্থিতিতে পানীয়জলের তীব্র সংকটে এলাকার মানুষ চরম হতাশায় ভোগছেন। সরকারি ব্যবস্থার উপরও ক্ষুব্ধ মানুষ। সর্বক্ষেত্রে হতাশাপূর্ণ সময়ে নিতান্তই প্রয়োজনীয় পানীয়জলের তীব্র সংকট দেখা দেওয়ার বিষয়টি নিয়ে বিভাগীয় কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করলে জানা যায়, কাতিরাইল এলাকার সড়ক নির্মানকালে পানীয়জলের সরবরাহ পাইপগুলো বিনষ্ট হয়ে যায়। পরবর্তী সময়ে পুর্তবিভাগের সঙ্গে পাইপসংক্রান্ত বিষয়ে আলোচনা করলেও সরকারিভাবে কাজ এগোয়নি।
জনস্বাস্থ্য কারিগরি বিভাগের তরফেও পাইপের যোগান দেওয়া সম্ভব নয়। ফলে থমকে পড়েছে পানীয়জল সরবরাহ ব্যবস্থা । ভুক্তভোগী হচ্ছেন হাজার হাজার মানুষ। বর্তমানে খাল বিল পুকুরের জলই তৃষ্ণার্তদের তৃষ্ণা মেটাচ্ছে। সুতরাং এক্ষেত্রেও রয়েছে নানা ব্যধির ঝুঁকি,রয়েছে জীবন-মৃত্যুর প্রশ্ন । এদিকে কর্মহীন হয়ে পড়া অধিকাংশ পরিবারের অবস্থা অত্যন্ত জটিল আকার ধারণ করেছে। দেখা দিয়েছে হাহাকার। সোমবার নুন আনতে পান্তা ফুরায় অবস্থা যাদের, তাদের দুবেলা দুমুটো মুখে তোলার ব্যবস্থা করার সাহসী পদক্ষেপ নিলেন এলাকারই এক মাঝারি ব্যবসায়ী । তুলে দিলেন ৭৫টি পরিবারের হাতে চাল, ডাল, সরিষার তেল, নুন,আলু, পেঁয়াজ, সুয়াবিনবড়ি, বিস্কুট সহ মশলাপাতি। শ্রীশ্রী বাসন্তী মায়ের পূজো হবে বলে প্রস্তুতি ছিল পাকাপাকি। এই বছরই প্রথম প্রয়াস ব্যবসায়ী কল্যাণ কুমার মালাকার ও তার পরিবারের । কিন্তু মনের ইচ্ছে মনের গহিনে থেকে গেলো মালাকার পরিবারের।
করোনার থাবায় যখন নাস্তানাবুদ গোটা বিশ্ব। ত্রস্ত শহর থেকে মফঃস্বল। চলছে লকডাউন। গৃহবন্দী মানুষ। স্তব্ধ হয়ে পড়েছে স্বাভাবিক জনজীবন।তখন বাসন্তী মায়ের পূজো আর সম্পন্ন হলোনা। বাসন্তী মায়ের পুজোর খরচের টাকায় দুঃস্থ অসহায় পরিবারের দুবেলা দুমুটো মুখে তোলার ব্যবস্থা করে দিলেন সম্পূর্ণ ব্যক্তিগত উদ্যোগে। যাতে গরিব অসহায় মানুষ অভুক্ত না থাকে। মালাকার পরিবারের এই উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়ে এলাকার পঞ্চায়েত্ সদস্য শিবু দাস সহ এলাকার প্রবীণ নাগরিকরা সাধুবাদ জানিয়েছেন। কল্যাণ কুমার মালাকার সংবাদ মাধ্যমকে জানান সামর্থ্যের উর্ধে উঠে মানবিক দৃষ্টিকোণ থেকে অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়ানোর সাহসী উদ্যোগ নিয়েছেন। এতে তার গোটা পরিবার সহযোগিতা করেছেন। পরিস্থিতি বিবেচনা করে সাধ্যিমতো আবারও তার এই উদ্যোগ বহাল রাখবেন। শুধুমাত্র সকলের সহযোগিতার আহ্বান জানান কল্যাণ ।