রবিবার দিল্লির রামলীলা ময়দানে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর দেড়ঘন্টার পূর্ণ ভাষণে মমতাকে আচ্ছামতো বিঁধে দিলেন। ভাষণের বড় অংশ ছিল নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন এবং তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা।
যতদিন এ দেহে প্রাণ আছে, এনআরসি এবং সিএএ হতে দেবেন না পশ্চিমবঙ্গে।
নাগরিকত্ব সংশোধনী আইনের স্বপক্ষে এবং বিপক্ষে কতজন, তা ভালো করে পরখ করে দেখার জন্যে সেখানে রাষ্ট্রপুঞ্জ বা মানবাধিকার কমিশনের মতো নিরপেক্ষ সংগঠনকে দিয়ে গণভোট করানোর সুপারিশও করেছিলেন মমতা।
মমতার এ হেন কার্যে প্রধানমন্ত্রী এদিন বলেন, ‘‘কলকাতা থেকে সটান রাষ্ট্রপুঞ্জে পৌঁছে গিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। অথচ কয়েক বছর আগে এই মমতাই সংসদে দাঁড়িয়ে বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারীদের তাড়ানোর কথা বলতেন। বলতেন, ধর্মীয় নিপীড়ণের শিকার হয়ে সেখান থেকে আসা শরণার্থীদের সাহায্য করা হোক। সেইসময় সংসদে স্পিকারের সামনে কাগজও ছুড়ে ফেলে দেন তিনি। এখন কী আপনার কী হল দিদি? হঠাৎ কেন পাল্টে গেলেন? কেন গুজব ছড়াচ্ছেন? নির্বাচন আসবে যাবে, ক্ষমতা আসবে যাবে, এত ভয় পাচ্ছেন কেন? বাংলার মানুষের উপর বিশ্বাস রাখুন। হঠাৎ তাঁদের উপর থেকে বিশ্বাস উঠে গেল কেন? কেন বাংলার মানুষকে শত্রু ভাবছেন?’’
এ সমস্ত কথার ওপর রাজনৈতিক গুঞ্জন শুরু হয়েছে, আসলে কে সঠিক? কে সত্যি বলছেন, কেই বা মিথ্যে?
আমরা তো দেশের প্রধামন্ত্রী এবং স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের কথায় বিস্তর ফারাক দেখতে পাচ্ছি? মন্তব্য ষাটোর্দ্ধ মহিলার।
চলতি বছর লোকসভা নির্বাচন অথবা সদ্যসমাপ্ত ঝাড়খণ্ড বিধানসভা ভোটের ইস্তাহারে এনআরসি নিয়ে প্রতিশ্রুতি ছিলই। প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিংহ বা বিজেপির কার্যনির্বাহী সভাপতি জে পি নড্ডা বারবার বলেছেন একথা।
বিগত নভেম্বর মাসে গৃহমন্ত্রী অমিত শাহ সারা ভারতে এনআরসি করা হবে, এমনকি অসমে দ্বিতীয়বারের জন্যে নাগরিকপঞ্জি হবে।
আর এদিন প্রধানমন্ত্রী মোদি তাঁর ভাষণে জানালেন, ২০১৪ সাল থেকে আজ পর্যন্ত একবারও তাঁর সরকার দেশে এনআরসি’ কথা একবারের জন্যে উচ্চারণ করেনি। অসমে কেবল সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে নাগরিকপঞ্জি হয়েছে!
এমন বার্তায় প্রশ্ন সারা দেশবাসীর মনে। তাহলে কে সত্যি বলছেন?
প্রধানমন্ত্রীর দু’ঘণ্টার বক্তৃতা শেষে তাই কার্যত স্তম্ভিত বিরোধীরা।
রাজনৈতিক শিবিরের মতে, নাগরিকপঞ্জি নিয়ে সারা দেশে আতংক এবং ধোঁয়াশা বাঁচিয়ে রাখাই এখন বিজেপির কৌশল।