১৯৬১-র ভাষা আন্দোলনের অদম্য সৈনিক ক্ষেত্রমোহন মণ্ডল প্রয়াত !
তিনি ভাষার অধিকার আদায়ের লড়াইয়ে ছিলেন অগ্রণী সেনানী। ছিলেন দোর্দণ্ডপ্রতাপ প্রশাসনিক আধিকারিক । ছিলেন ইতিহাসের অধ্যাপক।
কাটিগড়ার কৃতিসন্তান ক্ষেত্রমোহন মণ্ডলের মৃত্যুতে শনিবার কাটিগড়া ওয়ার্কিং জার্নালিষ্ট গিল্ড ও বরাক উপত্যকা বঙ্গসাহিত্য ও সংস্কৃতি সম্মেলনের কাটিগড়া আঞ্চলিক সমিতির যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত শোকসভায় ক্ষেত্রমোহন মণ্ডলের মৃত্যুতে এক ঐতিহাসিক অধ্যায়ের যবনিকা ঘটলো বলে উল্লেখ করেন বক্তারা।
এছাড়া এদিনের সভায় প্রয়াতের জীবনের বিভিন্ন দিক নিয়ে আলোচনা করেন বক্তারা। সভায় মুখ্য বক্তা হিসাবে উপস্থিত ছিলেন প্রয়াতের খুড়তুতো ভাই রণধীর মণ্ডল। তিনি তার দাদার কর্মময় জীবন নিয়ে বক্তব্য রাখেন।
কীভাবে ১৯৬১ সালের ১৯ শে’ মে ক্ষেত্রমোহন মণ্ডলের নেতৃত্বে কাটিগড়ায় বাংলা ভাষার আন্দোলন সংঘটিত হয়েছিল, তা তিনি বর্ণনা করেন।
বলেন, সেদিন কাটিগড়া সার্কল অফিস স্তব্দ করে দেওয়ার পর ক্ষেত্রমোহন সহ আরও আট জনকে হাতকড়া পরিয়ে শিলচর নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। তারাপুরের কাছে পৌছতেই এদের হাতকড়া দেখে প্রতিবাদে গর্জে ওঠেন সেখানকার সত্যাগ্রহীরা। ওই ঘটনা থেকেই রেল ষ্টেশন কাণ্ডের সূত্রপাত হয়। যা থেকে পুলিশের গুলিতে শহীদ হন বাংলা মায়ের এগারো সন্তান।
সম্ভবত বরাকের প্রথম আইএএস আধিকারিক ক্ষেত্রমোহন পশ্চিমবঙ্গ সরকারের গৃহসচিব হিসাবে দীর্ঘ বছর আগে অবসর নিয়েছিলেন।
এর আগে তিনি জিসি কলেজ ও পরে কাছাড় কলেজেও অধ্যাপনা করেছেন। সভায় বক্তব্য রাখতে গিয়ে মনজুর আহমদ বলেন, বাংলা ভাষা রক্ষার্থে আমাদের সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে। বাংলার উপর চলা যাবতীয় আগ্রাসনের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে হবে।
ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে বাংলার ইতিহাস, ঐতিহ্য ও উনিশের আন্দোলনের কথা ব্যাপকভাবে বোঝাতে হবে। তবেই ক্ষেত্রমোহন মণ্ডল সহ সমস্থ ভাষা সেনানীদের প্রতি উপযুক্ত সম্মান জানানো হবে।
সভা শেষে প্রয়াতের আত্মার প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। এরআগে ইতিহাস সাক্ষী রেখে বাংলাভাষা ও মাতৃভাষার লড়াই যেন থেমে না যায়,এমন আর্জিও রাখেন কর্মকর্তারা।
সভায় অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন সুমন দাস, শমীন্দ্র পাল, স্বপন দেব, আলতাফ হোসেন প্রমুখ।
সভায় পৌরহিত্য করেন সমিতির উপসভাপতি প্রদীপ্ত পুরকায়স্থ ও সভা সঞ্চালনা করেন ইমাদ উদ্দিন মজুমদার।