গুয়াহাটিঃ গৌহাটি হাই কোর্ট (Gauhati High Court) অসমের স্বাস্থ্য বিভাগকে (State Health Department) একটি মেডিকেল বোর্ড (Medical Board) গঠন করতে বলেছে। গুয়াহাটি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের (GMCH) অধ্যক্ষের সহযোগিতায় ওই বোর্ড কৃষিজাত সামগ্ৰীগুলিতে (Agricultural product) যে রাসায়নিক ব্যবহার করা হচ্ছে, তা মানুষের শরীরের জন্য কতটা ক্ষতিকর, তা নিয়ে অধ্যয়ন চালাবে।

২০১৮ সালে আইনজীবী সীমা ভুঁইয়ার (Advocate Seema Bhuyan) আদালতে দায়ের করা একটি জনস্বাৰ্থ মামলার শুনানি হয়। সেখানে বলা হয়েছে- অসমের ৮টি জেলা থেকে মাটি এবং ভূগর্ভস্থ (Soil and underground water) জলের নমুনা সংগ্ৰহ করা হয়েছে। তাতে এমন সব ভারী উপাদন পাওয়া গেছে যা জনস্বাস্থ্যের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ বলে উল্লেখ করা হয়েছে।
মাটির ওই নমুনাগুলি পরীক্ষা করেছে টি রিসার্চ অ্যাসোসিয়েশন(Tea Research Association-TRA), টোকলাই(Tocklai) অন্যদিকে চাল(Rice), কালো এবং গ্ৰী চা(Black and Green Tea), কঁচি চা পাতা(Freshly plucked tea leaves), শাক সবজি(Vegetables), ভূগর্ভস্থ জলের(Underground Water sample) নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে কলকাতার ন্যাশনাল ফুড ল্যাবরেটরিতে(National Food Laboratory সংক্ষেপে NFL)।
রাজ্যের যে ৮টি জেলা থেকে এই নমুনাগুলি সংগ্ৰহ করা হয়েছিল সেই জেলাগুলি হল দরং(Darrang), যোরহাট(Jorhat), ডিব্ৰুগড়(Dibrugarh), কাছার(Cachar), তিনসুকিয়া(Tinsukia), শিবসাগর(Sivasagar), শোনিতপুর(Sonitpur) এবং গোলাঘাট(Golaghat)।
৬৩টি শাকসবজির নমুনার (63 samples of vegetables) মধ্যে চারটি নমুনায় অনুমোদিত খাদ্য নিরাপত্তা ও মান কর্তৃপক্ষের (Food Safety and Standards Authority of India সংক্ষেপে FSSAI) সর্বোচ্চ সীমার চেয়ে বেশি অবশিষ্টাংশ সনাক্ত করা হয়েছে। অল ইন্ডিয়া নেটওয়র্ক প্ৰোজেক্ট অন পেস্টিসাইড রিসিডিউস(All India Network Project on Pesticide Residues) এর নেটওয়র্ক কোঅর্ডিনেটর বন্দনা ত্ৰিপাঠি (Vandana Tripathy) সমেত ৬ জনের একটি বিশেষজ্ঞ দল রিপোর্টটি তৈরি করেছেন।
শাকসবজির নমুনার জন্য, যেখানে FSSAI MRLs সনাক্তকৃত কীটনাশকের জন্য উপলব্ধ নয়, FSSAI দ্বারা 0.01 পিপিএম-এর ডিফল্ট সহনশীলতা সীমা গ্রহণ করা হয়েছে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, তেতো করলা, বেগুন, কাঁচা লঙ্কা, ফুলকপি এবং পালং শাকের ১৩ টি সবজির নমুনা ২০১১ সালের FSSAI নীতি নিয়মের সঙ্গে মেলেনি। আরও ৩৪ টি সবজির নমুনায় দুটি ভারী ধাতু ক্যাডমিয়াম এবং সীসার অবশিষ্টাংশ সনাক্ত করা হয়েছে, যদিও এগুলো ছিল FSSAI-এর সর্বোচ্চ নির্ধারিত সীমার নিচে।
১৮ টি চালের নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। তার মধ্যে তিনটিতে কীটনাশক ক্লোরপাইরিফোসের অবশিষ্টাংশ সনাক্ত হয়েছে। এছাড়াও, ১৭ টি চালের নমুনায় ভারী ধাতু ক্যাডমিয়ামের অবশিষ্টাংশ পাওয়া গেছে যদিও সেগুলি FSSAI MRL-এর নীচে। সমস্ত মাটির নমুনাগুলিতে ভারী ধাতু ক্যাডমিয়াম, ক্রোমিয়াম, তামা, লোহা, সীসা, ম্যাঙ্গানিজ, পারদ, নিকেল, আর্সেনিক এবং দস্তা সনাক্ত করা হয়েছে।
এই মামলার পরবর্তী শুনানি ৯ ফেব্ৰুয়ারি।