বরাক নদীর রাক্ষুসে আগ্রাসনে বাস্তুহারা হয়ে যাযাবর জীবনযাপন করছেন ইন্দো-বাংলা সীমান্তবর্তী রাজাটিলা হরিটিকরের অসহায় ৯ টি পরিবার। সম্প্রতি এসডিএলএ-এর অনুমোদন সাপেক্ষে সর্বস্বান্ত ৯ টি পরিবারের হাতে পুনর্বাসনকল্পে প্রাথমিক পর্যায়ে দশ কাঠা করে জমির অনুমোদনপত্র তুলে দিয়েছিলেন কাটিগড়ার বিধায়ক অমরচাঁদ জৈন । কিন্তু তা আজও বাস্তবে ফলপ্রসূ হলো না। শুধু নথিপত্র দেখানোই সার হলো।
এদিকে নদীভাঙন সমস্যা বরাক উপত্যকার অন্যতম সমস্যা। নদীভাঙনের কবলে পড়ে প্রায় প্রতি বছরই গৃহহীন হয়ে পড়ে অসংখ্য পরিবার। ভাঙনের করাল গ্রাসে খোয়াতে হয়েছে অসংখ্য ঘরবাড়ি সহ চাষের জমি।
সাম্প্রতিক ধারাবর্ষণে কাটিগড়া হরিটিকরে নতুন করে ফের নদীর তীর ভাঙনের প্রকোপ দেখা দেওয়ায় আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন হরিটিকরের বসতি বাসিন্দারা।
এই মুহূর্তে নদীভাঙন প্রতিরোধে শক্তপোক্ত পদক্ষেপ গ্রহন করা না হয় তাহলে বরাকের তীরবর্তী অঞ্চলে বসবাসরত অসংখ্য পরিবারের মাথা গোজার ঠাঁই হারিয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। গতরাতে নদীর তীরবর্তী অঞ্চলের বহু অংশ তলিয়ে গেছে বলে জানিয়ে এলাকাবাসী আতঙ্কিত ও ধীরে ধীরে বৃহত্তর এলাকা ভাঙনের কবলে পড়ার সমূহ বিপদের কথা তুলে ধরেন।
এলাকাবাসীদের অভিযোগ, এই গতিতে ভাঙন চলতে থাকলে যেকোনো মুহূর্তে ঘরবাড়ি সহ গোটা পরিবার তলিয়ে যাবে বরাকের জলে। এলাকাবাসীর পক্ষ থেকে এ বিষয়ে রাজ্য সরকারকে জানানো হয়েছে স্মারকলিপির মাধ্যমে ৷ এলাকাবাসীর দাবি অভিলম্বে ভাঙ্গন প্রতিরোধে প্রতিরোধমুলক ব্যবস্থা গ্রহণে কাজ শুরু করার, কিন্তু এখনও কোন রকম ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি জলসম্পদ বিভাগের তরফে,এনিয়ে একরাশ ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন তারা ।
এক আলোচনায় স্থানীয় ভুক্তভোগী জনগণ জানান, আমরা জলসম্পদ বিভাগের গোচরে কয়েক দফায় জ্বলন্ত এই সমস্যার কথা তুলে ধরেছি, লিখিত ও মৌখিকভাবে প্রতিরোধমুলক ব্যবস্থা গ্রহনের দাবি পেশ করেছি। অথচ এখনও কোনও সাড়া নেই,সাড়া স্থানীয় বিধায়ক সহ কাটিগড়া মহকুমা প্রশাসনের।
এই পরিস্থিতিতে নদীভাঙ্গনের প্রকোপে আতঙ্কগ্রস্থ হরিটিকরের আশু দাস পিতা মৃত গোপেস দাস, নিশু দাস পিতা মৃত যোগেশ দাস, মাখন দাস পিতা কামিনী দাস, অমর দাস পিতা অশ্বিনী দাস, সতেন দাস পিতা শৈলেন দাস, অঞ্জু দাস পিতা বাদর দাস, শংকর দাস পিতা বাদর দাস, মঞ্জু দাস পিতা বাদর দাস, মনোরঞ্জন দাস পিতা অধর দাসরা কোথায় ?কার দরজায় মাথা ঠেকাবেন? এটাই লক্ষণীয় ।
অন্যদিকে নদীভাঙ্গনে সর্বস্বান্ত ৯ টি পরিবারের হাতে পুনর্বাসনকল্পে দশ কাটা করে জমির অনুমোদনপত্র তুলে দেওয়া হলেও বাস্তবে জমির বন্দোবস্ত করা হয়নি। এনিয়েও তাদের মধ্যে গভীর অনিশ্চয়তা বিরাজ করছে। আদৌ কি জমির বন্দোবস্ত দেওয়া হবে না শুধুমাত্র নথিপত্রই সার হবে?