ব্রহ্মপুত্র উপত্যকার পর এবার বরাক উপত্যকায় বন্যার পদধ্বনি। বিপদসীমার উপরে ধলেশ্বরী, কাটাখাল। বাড়ছে বরাকের জলপৃষ্ঠ।
বিগত এক সপ্তাহে ব্রহ্মপুত্র এবং তার উপনদীর তাণ্ডবে সম্পূর্ণ রূপে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে রাজ্যের ৯টি জেলা। ব্রহ্মপুত্রের সঙ্গে এবারে বন্যার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে বরাক এবং তার উপনদী গুলিতে।
উপত্যকায় গত দুই দিন থেকে হওয়া অনবরত বৃষ্টিপাতের ফলে দেখা দিয়েছে বন্যাসম পরিস্থিতির। বরাক সহ কাটাখাল এবং ধলেশ্বরী নদীর জলপৃষ্ঠ বৃদ্ধি পাচ্ছে তীব্র বেগে।
বরাক নদী শুক্রবার মাঝরাতে এবং তার দুই উপনদী ক্রমে ধলেশ্বরী এবং কাটাখাল গত বৃহস্পতিবার রাতেই বিপদসীমা অতিক্রম করে। হাইলাকান্দি জেলার ঘারমুড়ায় শনিবার সকাল ৮টায় ধলেশ্বরী নদী ৩০.৩৪ মিটার। এখানে নদীর বিপদসীমা ২৮.০৫ মিটার।
শুক্রবার সকাল ৮টায় নদীর জলপৃষ্ঠ ছিল ২৯.৪১ মিটার। গত ২৪ ঘণ্টায় জলস্তর বৃদ্ধি পেয়েছে ৯৩ সেন্টিমিটার। হাইলাকান্দি জেলার মাটিজুরি ঘাটে শনিবার সকাল ৮টায় কাটাখাল নদীর জলস্তর ২১.৭২ মিটার। এখানে নদীর বিপদসীমা ২০.২৭ মিটার।
শুক্রবার সকাল ৮টায় মাটিজুরিতে কাটাখাল নদীর জলপৃষ্ঠ ছিল ২০.৮৯ মিটার। এই ঘাটে বিগত ২৪ ঘন্টায় নদীর জলস্তর বৃদ্ধি পেয়েছে ৮৩ সেন্টিমিটার। কাছাড়ের অন্নপুর্না ঘাটে প্রতি ঘন্টায় ৫ সেন্টিমিটার বেগে বৃদ্ধি পাচ্ছে বরাকের জলস্তর। অন্নপুর্ণা ঘাটে বরাক নদীর বিপদসীমা ১৯.৮৩ মিটার। শনিবার সকাল ৮টায় অন্নপূর্ণা ঘাটে বরাক নদীর জলস্তর ২০.০৪ মিটার।
শুক্রবার রাত ৮টায় এখানে নদীর জলস্তর ১৯.৬০ মিটার। বিকেল ৫টায় ছিল ১৯.৪৬ মিটার। আর সকাল ৮টায় এই জলস্তর ছিল ১৮.৯২ মিটার। এদিকে নদীর জল বৃদ্ধি পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে আতঙ্ক তারা করছে হাইলাকান্দির বিভিন্ন অঞ্চলে।
গত বছরের ভাঙ্গা বাধ এখন পর্যন্ত সম্পূর্ণ মেরামতি না হওয়ার জন্য যে কোনও সময় জেলায় ভয়ঙ্কর পরিস্থিত দেখা দেওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
ইতিমধ্যেই জেলার কালাছড়ায় থাকা আঙ্কাই-লঙ্কাই বাধের ভাঙ্গা অংশের উপর দিকে নদীর জল প্রবেশ করতে শুরু করেছে। এরফলে নিমাইচানপুর, সোনাপুর, নয়াগাও ইত্যাদি অঞ্চল প্লাবিত হওয়ার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে।
একই ভাবে মোহনপুর অঞ্চলেও কাটাখাল নদীর ভাঙ্গা বাধের উপর দিকে শুক্রবার সকাল থেকে জল প্রবেশ করছে।
যুদ্ধকালিন তৎপরতায় এই ভাঙ্গা অংশগুলি বন্ধ না করলে বিগত বছর থেকেও ভয়ঙ্কর রূপ হতে পারে বলে আশংকা করছেন জেলার সাধারন লোক।