বরাক উপত্যকার তিন জেলা সদরের মধ্যে কাছাড়ের শিলচর থেকে সরাসরি গুয়াহাটি সহ দূরপাল্লার ট্রেন পরিষেবা রয়েছে।
করিমগঞ্জ থেকে সরাসরি না থাকলেও আগরতলা থেকে দেশের অন্যান্য স্থানে যাতায়াতকারী ট্রেনগুলো করিমগঞ্জ ছুঁয়ে চলাচল করছে।
কিন্তু ব্যতিক্রম জেলা হাইলাকান্দি। এ জেলা থেকে আজ অবধি কোনো যাত্রীবাহী ট্রেন রাজ্যের রাজধানী গুয়াহাটি সহ অন্যান্য স্থানের সঙ্গে সংযুক্ত হতে পারল না।
ব্রডগেজে সংযুক্ত হয়েও এখনও রেল মানচিত্রের বাইরে থাকা হাইলাকান্দিকে যুক্ত করার জন্য শীঘ্রই ভৈরবী-গুয়াহাটি একজোড়া এক্সপ্রেস ট্রেন চালুর জোরালো দাবি উত্থাপন করল রেল যাত্রী অধিকার সুরক্ষা সমিতি (রিয়াস)।
ভৈরবী-গুয়াহাটির মধ্যে একজোড়া এক্সপ্রেস ট্রেন চালু সহ বেশ কয়টি দাবি সম্বলিত একটি স্মারকপত্র বুধবার হাইলাকান্দির জেলাশাসক মারফৎ কেন্দ্রীয় রেল মন্ত্রী, উত্তর-পূর্ব রেলের মহা-প্রবন্ধক, উত্তর-পূর্ব রেলের লামডিং মণ্ডলের মাণ্ডলিক প্রবন্ধক, বদরপুরের এরিয়া প্রবন্ধক প্রমুখের কাছে পাঠিয়েছে হাইলাকান্দি জেলা রেল যাত্রী সুরক্ষা সমিতি (রিয়াস)।
পৃথক পৃথকভাবে পাঠানো স্মারকপত্রে উল্লেখ করা হয়েছে, বরাক উপত্যকার প্রাণকেন্দ্র শিলচর-ভৈরবীর মধ্যে ব্রডগেজ লাইন চালু হওয়ার পর এই রুটে শুরুতে প্রতিদিন ট্রেন চলাচল করতো। এতে হাইলাকান্দি জেলার বুক চিরে যাওয়া এই যাত্রীবাহী ট্রেনে জেলার যাত্রীরা উপকৃত হতেন। কিন্তু গত প্রায় বছরখানেক ধরে হঠাৎ করে সপ্তাহে সাতদিনের পরিবর্তে ছয় দিন এই রুটে ট্রেন চলাচলের ব্যবস্থা করা হয়।
প্রতি রবিবার এই রুটে ট্রেন বন্ধ থাকায় যাত্রীদের যাতায়াতে অসুবিধার সৃষ্টি হচ্ছে। ফলে আগের মতোই সাতদিন ট্রেন চলাচলের ব্যবস্থা করতে আর্জি জানানো হয়েছে।
এছাড়া, হাইলাকান্দি জেলা রেল যাত্রী সুরক্ষা সমিতির (রিয়াস) সভাপতি সামসুল হক বড়ভূইয়া ও সম্পাদক দীপঙ্কর দত্ত রেলমন্ত্রী সহ অন্যান্যদের কাছে পাঠানো স্মারকপত্রে বর্তমানে হাইলাকান্দি জেলার বুক চিরে চলাচলকারী শিলচর-ভৈরবী রেল রুটে আরেকজোড়া যাত্রীবাহী ট্রেন চালু করা, বর্তমানে শিলচর-ভৈরবী যাত্রীবাহী ট্রেনের কোচ সাত থেকে বাড়িয়ে চোদ্দটি করা, রেলের রাজস্ব বৃদ্ধিতে বর্তমান ট্রেনে টিটিই নিযুক্তি দিয়ে প্রতিদিন যাত্রীদের টিকিক কাটতে বাধ্য করা, হাইলাকান্দি ও লালা স্টেশনে যাত্রী আরক্ষণ ব্যবস্থা (পিআরএস) সক্রিয় করে তোলা, ভৈরবী-শিলচর রুটে যাত্রী সুবিধার্থে আমালা ও শ্রীকোণা স্টেশন ফের চালু করা, হাইলাকান্দি জেলার বক্রিহাওর ও শ্যামপুরে দু’টি নতুন ‘ডি’ গ্রেড স্টেশন চালু করা প্রভৃতির দাবি জানানো হয়।
স্মারকপত্রে তাঁরা বলেছেন এসব দাবি বহুদিনের, বারকয়েক এ নিয়ে তারা জেলা প্রশাসন, রেল কর্তৃপক্ষের সাক্ষাৎ করে স্মারকপত্রও দিয়েছেন। কিন্তু রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ আজও এসব দাবি মেনে নেয় নি। ফলে এবার এসব দাবি আদায়ে রেলযাত্রী সুরক্ষা সমিতি জনসাধারণকে নিয়ে বৃহত্তর আন্দোলন গড়ে তুলতে বাধ্য হবে।
স্মারকপত্রের প্রতিলিপি মিজোরামের মুখ্যমন্ত্রী, করিমগঞ্জের সাংসদ, ভারতীয় রেলের পিএসি সদস্য তথা শিলচরের সাংসদ ডাঃ রাজদীপ রায়, বরাক উপত্যকার আয়ুক্ত সহ হাইলাকান্দি জেলার তিন বিধায়কের কাছে পাঠানো হয়েছে।