নয়াদিল্লি: দিল্লির বাতাসের অবস্থা খুব বিপর্যস্ত। শ্বাস নেয়া যায় না। প্রতিবছর কালিপুজোর আগে এই অবস্থা হয় দিল্লির।
তসলিমা নাসরিন লিখেছেন:
“বহু বছর ধরে দেখে আসছি একই চিত্র। শীত শুরু হলেই দিল্লিতে বায়ু দূষণ ভয়ঙ্কর হয়ে ওঠে। যেখানে দূষণের মাত্রা ৫০ এর বেশি হওয়া উচিত নয়, সেখানে দূষণের মাত্রা হয়তো ৫০০০এর চেয়েও বেশি।
রোগির ভিড় বাড়ে হাসপাতালে। সবারই ফুসফুসের সমস্যা। যাদের হাসপাতাল অবধি যেতে হয় না, তারা আজ না হোক কাল ভুগবে। দূষণ যে ভয়াবহ জিনিসটি ছড়ায় সেটির নাম পি এম ২.৫।
এটি শ্বাসের সঙ্গে ফুসফুসে চলে গেলে আর ফেরত আসে না বাইরে। ভেতরেই রয়ে যায় এবং ক্যান্সার করে।
এত বড় দেশের একটি রাজধানী, আর একে দূষণমুক্ত রাখার জন্য কিছুই করতে পারছে না সরকার! পাঞ্জাব আর হরিয়ানাতে এ সময় খড় পোড়ায় কৃষকেরা। সেই ধোঁয়া উড়ে এসে দিল্লিকে অন্ধকারে মুড়ে দেয়। এই খড় কিন্তু না পুড়িয়ে অন্য কোনও উপায়ে নিশ্চিহ্ন করা যায়। সরকারি লোকেরাই পারেন ব্যবস্থাটি করতে।
কিন্তু প্রচলিত নিয়মের হেরফের করলে নাকি ভোট পেতে রাজনীতিকদের অসুবিধে হবে। সে কারণে কেউ আগুনে হাত দেয় না।
সে কারণেই দোষ দেওয়া দেওয়ি চলে বেশ। দিল্লির সরকার বলে এই দায়িত্ব কেন্দ্রীয় সরকারের, কেন্দ্রীয় সরকার বলে এ দায়িত্ব দিল্লির সরকারের। যে শহরে প্রকাণ্ড সব মন্ত্রী মহোদয় বাস করেন , তাছাড়া প্রভাবশালী এবং প্রতিভাবান লোক তো বাস করেনই, তাঁরা বায়ু দুষণের কারণে ভুগছেন, মৃত্যু এগিয়ে আসছে দেখছেন, কিন্তু বায়ু দূষণের বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা নিচ্ছেন না।
ব্যবস্থা না নেওয়াটাই মনে হয় পরাবাস্তব স্তরে চলে গেছে। আনরিয়েল মনে হয় গোটা ব্যাপারটা”।