সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন নিয়ে উত্তপ্ত সারা ভারত। হিংসাত্মক রূপ ধারণ করেছে প্রতিবাদ। তবে পরিস্থিতি কিছুটা আয়ত্ত্বে আসায় আজ বৃহস্পতিবার পশ্চিমবঙ্গের দুই জেলায় মোবাইল ইন্টারনেট পরিষেবা চালুর নির্দেশ দিয়েছে নবান্ন।
আপাতত হাওড়া এবং দক্ষিণ ২৪ পরগণায় নেট সেবা আরম্ভ করার নির্দেশ দেয়া হয়েছে রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে।
তবে পশ্চিমবঙ্গের উত্তর ২৪ পরগণা, মুর্শিদাবাদ, মালদহ এবং উত্তর দিনাজপুরে বন্ধ মোবাইল ইন্টারনেট পরিষেবা।
এদিকে, সংশোধিত নাগরিকত্ব আইনের (Citizenship Amendment Act) প্রতিবাদে ভারতের রাজধানী নয়া দিল্লির পরিস্থিতি ভয়ানক হয়ে উঠেছে।
কখনও জামিয়া মিলিয়া ইসলামিয়া বিশ্ববিদ্যালয় চত্বর তো কখনও সীলামপুর জাফরাবাদ। হিংসা মাত্রা ছাড়িয়ে যাচ্ছে। আজ থেকে উত্তাল হচ্ছে লালকেল্লা সংলগ্ন এলাকা।
এ অবস্থায় অসম, ত্রিপুরার মতোই দিল্লিতেও সরকারি নির্দেশমর্মে (Delhi) কয়েকটি স্থানে মোবাইল ইন্টারনেট, ভয়েস কল ও এসএমএস পরিষেবা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।
থমথমে লালকেল্লা লাগোয়া এলাকায় ১৪৪ ধারা জারি করেছে পুলিশ।
এদিকে অসমে বিগত ১১ ডিসেম্বর থেকে বন্ধ করে রাখা হয়েছে ইন্টারনেট। বৃহস্পতিবার ছিল হাইকোর্টের দ্বিতীয় শুনানি। কিন্তু পরিস্থিতি দেখে জনগণের মনে আতংক, হয়তো আজও মোবাইল ইন্টারনেট পরিষেবা চালু করার কোন সম্ভাবনা নেই।
অঙ্গাঙ্গিভাবে নিত্য-নৈমিত্তিক জীবনে জড়িয়ে পড়া ইন্টারনেট ছাড়া মানুষের জীবন বেহাল হয়ে পড়েছে। জনগণের শুধু বিনোদনের জন্যে নয়, জীবিকার সঙ্গে যুক্ত হয়ে গেছে নেট।
ফলে ইন্টারনেট ছাড়া অসমের গুয়াহাটির উবের-অলা তথা ক্যাব ড্রাইভারদের সংসার অচল হয়ে পড়েছে বলে বারবার দাবি জানাচ্ছেন। এমনকি মহানগরের রাজপথে প্রতিবাদী কার্যসূচিও গ্রহণ করেছিলেন। কিন্তু কোন হেলদোল নেই রাজ্য সরকারের।
ক্যাব ড্রাইভাররা জানাচ্ছেন, “আমাদের উপার্জনের একমাত্র উৎস হচ্ছে ইন্টারনেট। কিন্তু সেই নেট পরিষেবা বন্ধ করে রাখার ফলে ড্রাইভারদের জীবন শোচনীয় হয়ে পড়েছে। আমরা কিভাবে আমাদের পরিবারের মুখে অন্ন তুলে দেবো?”
একজন টেক্সি ড্রাইভার যদি একদিনে ১৫ ঘন্টা গাড়ি চালায় তাহলে তিনি ১ হাজার থেকে ১৫শ টাকা উপার্জন করে থাকেন।কিন্তু অধিকাংশ ড্রাইভারের মাসে ১০ হাজার টাকা চলে যায় EMI জমা দিতে। সুতরাং তাঁদের জন্যেও পরিবার প্রতিপালন করা যথেষ্ট কষ্টসাধ্য।
শুধু যে ড্রাইভারদেরই এমন শোচনীয় অবস্থা তা নয়। ছাত্র-ছাত্রীদের পড়াশুনার যথেষ্ট ক্ষতিসাধন হচ্ছে। যেহেতু ইন্টারনেট বর্তমান জীবনের সঙ্গে অঙ্গাঙ্গিভাবে জড়িত, সুতরাং মোবাইল ইন্টারনেট কানেকশন ছাড়া পড়ুয়ারা লেখাপড়াও সম্পন্ন করতে পারছে না। যে কোন পরীক্ষার অনলাইন ফর্ম ফিল-আপ করা থেকেও বঞ্চিত হচ্ছে তারা!
অন্যদিকে, ৫ অগাস্ট ৩৭০ ধারা বিলোপের পর থেকে কার্যত অবরুদ্ধ কাশ্মীর। প্রায় ১৩৪ দিন ধরে ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ। হাসপাতাল থেকে ব্যবসা– কাজ ব্যাহত হচ্ছে।