আগামি নভেম্বর মাসে নাগরিকত্ব সংশোধনী বিধেয়ক বিল, ২০১৬’ তথা ক্যাব গৃহীত করা হবে। সোমবার শিলচরে এই কথা জানিয়ে দিয়েছেন নেডার আহ্বায়ক তথা অসমের বিত্ত মন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মা।
শিলচরে অনুষ্ঠিত এক সমাবেশে মন্ত্রী বলেন, “এক্ষেত্রে যদি কোনরকম বাধার সম্মুখীন হতে না হয়, তাহলে ‘নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল,২০১৬’ নভেম্বর মাসে গৃহীত হবে।”
গতকাল সোমবার অসমের মন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মা বিজেপি নেতৃত্ব আরম্ভ করা রাষ্ট্রীয় একতা অভিযানের অন্তর্গত জন জাগরণ সমাবেশে অংশগ্রহণের জন্যে শিলচর এবং করিমগঞ্জে গিয়েছিলেন।
তিনি কাশ্মীর এবং তিন তালাক প্রসঙ্গ উত্থাপন করে এদিন বলেন, “অনুচ্ছেদ ৩৭০ ও ৩৫এ প্রত্যাহার করা এবং মুসলমান মহিলা (বিবাহের অধিকার সুরক্ষা) বিধেয়ক, ২০১৯ গৃহীত হবার পর বিজেপি সরকার নাগরিকত্ব সংশোধনী বিধেয়ক গ্রহণ করবে কি না, এ বিষয়ে সন্দেহ রাখার কোন প্রয়োজন নেই।” তিনি ফের ঘোষণা করেন, “নভেম্বরেই এই বিল গৃহীত হবার পূর্ণ সম্ভাবনা রয়েছে।”
হিমন্ত বিশ্ব শর্মা আরো যোগ করেন, ‘এটি আমাদের নির্বাচনী ইস্তাহারে ছিল।’ তাছাড়া ২০১৪’র ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত প্রতিবেশি দেশে ধর্মীয় উৎপীড়নের শিকার হওয়া সমস্ত পরিবারকে আশ্রয়, সুরক্ষা সর্বোপরি নাগরিকত্ব প্রদান করার ক্ষেত্রে দায়বদ্ধ বিজেপি।
উল্লেখযোগ্য যে, বাংলাদেশ, পাকিস্তান, আফগানিস্তান থেকে ভারতে চলে আসা ঐসব দেশের নির্যাতিত সংখ্যালঘুদের ভারতীয় নাগরিকত্ব দেওয়ার ক্ষেত্রে আইন সংশোধন করার জন্যে একটি বিল ৮ জানুয়ারি ভারতের পার্লামেন্টের নিম্ন-কক্ষ লোকসভায় পাশ হয়েছিল।
কিন্তু রাজ্যসভায় এসে জোর ধাক্কা খায়। নাগরিকত্ব বিলের বিরোধিতা জানিয়ে প্রথম থেকেই সরব হয়েছে বিরোধীরা। উত্তর-পূর্বাঞ্চলের রাজ্যগুলো বিক্ষোভ শুরু করে নাগরিকত্ব বিলের বিরোধিতায়।
কিন্তু গত ৩১শে আগস্ট প্রকাশিত এনআরসি তালিকা গেম অন্যদিকে ঘুরিয়ে দিয়েছে। ১৯ লক্ষ মানুষ বাদ গেছে তালিকা থেকে। তাদের মধ্যে গোর্খা থেকে শুরু করে হিন্দীভাষী মানুষও রয়েছে। বিজেপির মন্ত্রীদের ভাবনা ছিল, সংখ্যালঘুরাই শুধু বাদ যাবেন নাগরিকপঞ্জি থেকে। কিন্তু তা হয়নি। ফলে ভিতরে ভিতরে আগামি ভোট ব্যাংকে ভাটা পড়বে এই চিন্তায় রাজ্য বিজেপির ঘুম উড়ে গেছে।
অ–অসমিয়াদের প্রতিপদে নাগরিকত্ব প্রমাণে সমস্যার সৃষ্টি হচ্ছে। এত সব সমস্যা থাকলেও আসু কিংবা বিজেপির ‘কোটি–কোটি’ বিদেশি–র মধ্যে মাত্র ১৯ লাখ বিদেশির নাম বের হল! যারা বাদ গেছেন, তাঁদের মধ্যে হিন্দুই বেশি। রয়েছেন পশ্চিমবঙ্গের বাঙালিরাও। বাদ যায়নি পাহাড়ি জনজাতিরাও।
বহু পরিবারে বাবা-মা-দিদির নাম আসছে। অথচ পরিবারের ৬ বছরের আরো একটি সন্তানের নাম নেই! মা-বাবা স্বদেশি, ৬ বছরের সন্তানটি হয়ে গেল বিদেশি?
এতদিন মুখে কুলুপ এঁটেছিলেন সকলে। এবার কুলুপ খুলে ঘোষণা করলেন ক্যাব আসছে!