বিপুল জনগণের উচ্ছ্বাস-আনন্দের মাঝে অসমের কোকরাঝাড়ে উপস্থিত হয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি।
শুক্রবার লোকপ্রিয় গোপিনাথ বরদলৈ আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে উপস্থিত হতেই তাঁকে উষ্ণ অভ্যর্থনা জানিয়েছেন অসমের মন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মা, মুখ্যমন্ত্রী সর্বানন্দ সনোয়াল প্রমুখ।
উত্তর পূর্বের এই রাজ্যে পা রেখেই কোকরাঝাড়ের গুচ্ছ ছবি টুইট করা হল প্রধানমন্ত্রীর সরকারি টুইটার হ্যান্ডল থেকে।
পৃথক বোড়োল্যান্ডের দাবিতে লড়তে থাকা উগ্রপন্থী সংগঠন এনডিএফবি-র সঙ্গে শান্তি চুক্তি সই করেছে সরকার। অসম সরকার, কেন্দ্র এবং এনডিএফবির মধ্যে হওয়া ত্রিপাক্ষিক চুক্তিকে ঐতিহাসিক আখ্যা দিয়েছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। এদিন সেই চুক্তি উদযাপনের উদ্দেশেই অসমে প্রধানমন্ত্রীর আগমণ।
ঐতিহাসিক বোড়ো চুক্তি সম্পাদনের পর ৭ ফেব্রুয়ারি কোকরাঝাড়ে ভাষণপ্রদানকালে বিটিসি প্রধান হাগ্রামা মহিলারি আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে বলেন, “আমি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে প্রতিশ্রুতি দিতে চাই যে অসমে ২০২১ সালে পুনর্বার বিজেপি সরকার গঠন করতে চলেছে।”
মহিলারি পাশাপাশি তৃতীয় ঐতিহাসিক বোড়ো চুক্তি সম্পাদন করার জন্যে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেছেন।
তিনি বলেন, নরেন্দ্র মোদি নেতৃত্বাধীন বিজেপি সরকার বিটিএডি অঞ্চলে বেশ কয়েকটি উন্নয়নমূলক প্রকল্প উন্মোচন করেছে।
কেন্দ্ৰীয় সরকার এবং বোড়ো জনগোষ্ঠীর বিভিন্ন সমষ্টির মধ্যে শান্তি চুক্তি সম্পাদন হওয়ার পর প্রধানমন্ত্রী মোদি প্রথমবারের জন্যে কোকরাঝাড়ে উপস্থিত হয়েছেন আজ।
এদিন রাজ্যের অর্থমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মা নরেন্দ্র মোদিকে বারংবার ধন্যবাদ জানিয়ে ভাষণে টেনে আনেন ঐতিহাসিক ব্রু চুক্তির প্রসঙ্গ।
তিনি বলেন, উত্তর-পূর্বে স্থায়ী শান্তি ঘুরিয়ে এনেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। ত্রিপুরার বিগত ২০ বছর ধরে অনাহারে, নিরাশ্রয়ী ব্রু লোকেদের জীবনে নতুন সূর্যোদয় ঘটিয়েছেন মোদি।
দেশের প্রধানমন্ত্রী এদিন অত্যন্ত সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন কোকরাঝাড়ে জনগণের উৎসাহ-উদ্দীপনা লক্ষ্য করে।
কোকরাঝাড়ের সভামঞ্চ থেকে প্রধানমন্ত্রী মোদি বলেন, ‘‘১৯৯৩ এবং ২০০৩ সালে দু-দুবার বোড়ো শান্তি চুক্তি স্বাক্ষরিত হওয়ার পরও শান্তি আসেনি। কারণ পূর্বের সরকার শুধুমাত্র চুক্তি স্বাক্ষরিত করেছে, একে রূপায়ন করার জন্যে কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি। এবার বড়ো ভাই-বোনেরা ন্যায় পেয়েছে এবং গুলি বারুদের দিন শেষ হয়েছে।”
তাছাড়া মোদি ভাষণে স্পষ্ট করেন, বোড়ো জনগোষ্ঠীর উন্নয়নের জন্যে ১৫০০ কোটির বিশেষ প্যাকেজ প্রদান করা হবে। এতে বড়োদের ভাষা, সংস্কৃতির বিকাশ সাধন হবে।
৭ ফেব্রুয়ারি, সমগ্র শহর মোদির আগমণ উপলক্ষ্যে সেজে উঠেছিল রঙিন সাজে।
ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব দেব শুক্রবার টুইট করে কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করে ব্রু সমস্যার স্থায়ী সমাধানের কথা উল্লেখ করে বলেনঃ
ত্রিপুরায় আড়াই দশক ধরে ব্রু শরণার্থীদের পূনর্বাসনের একটি বিশাল সমস্যা চলছিল, বর্তমান কেন্দ্রীয় সরকার তার স্থায়ী সমাধান করেছে। ব্রু জনজাতি ভাই বোনেরা তাদের স্থায়ী বাসস্থান পেয়েছে, স্বভিমান ফিরে পেয়েছে ও সরকার তাদের জন্য বিশেষ প্যাকেজ চালু করছে: প্রধানমন্ত্রী @narendramodi pic.twitter.com/zcV4GmSpkG
— Biplab Kumar Deb (@BjpBiplab) February 7, 2020
উল্লেখযোগ্য যে, এর আগে অসমের কোকরাঝাড়, ওদালগুড়ি, বাকসা, বরপেটা, বঙ্গাইগাঁও ও আরও কয়েকটি জেলা নিয়ে তৈরি হয়েছিল বোরো টেরিটোরিয়াল কাউন্সিল। এর মধ্যে ছিল ৪০টি বিধানসভা কেন্দ্র। এবার ৬০টি বিধানসভা কেন্দ্র নিয়ে গঠিত হয়েছে বোরো টেরিটোরিয়াল রিজিয়ন। এখন আর বিটিএডি নয়, বিটিআর হয়েছে। উল্লেখ্য যে, ৬০টির মধ্যে ৪৫টি বিধানসভা সংরক্ষিত থাকবে বোড়োদের জন্য।