আজকের সকালটা এমন না হয়ে ভিন্ন রকম ও হতে পারতো। তাই না?
সুস্হ পৃথিবীর বুকে হাজারো বাঙালির প্রাণের উৎসব এই বাংলা নববর্ষের আনন্দে চারদিক থাকতো মুখরিত। ঘুম ভেঙে ফেসবুকে ঢুকতেই সকলের আনন্দপূর্ণ বার্তায় ভরে উঠতো মেসেঞ্জারটা।
ফ্রেশ হয়ে শাড়ি-ধুতি পাঞ্জাবি পড়ে ভার্সিটি গিয়েই দেখা হয়ে যেতো প্রাণের বন্ধুদের সাথে।
রাত জেগে আলপনা করা ছেলে-মেয়েগুলো চোখ কচলে হাজির থাকতো ক্যাম্পাসে। জমকালো অনুষ্ঠানে সেজে উঠতো শহর।
প্রচুর ভিড়ের মাঝে একজোড়া চোখ খুঁজে বেড়াতো তার বনলতাকে। প্রচুর ভিড়ের মাঝে একজোড়া চোখ খুঁজে বেড়াতো তার উত্তম কুমারকে! বাইরের প্রেমিকেরা-প্রেমিকেরা রিক্সা চড়ে শহর বেড়াতো। কবিরা লিখতেন বৈশাখি কাব্য,কবিতা।
অথচ আজ গম্ভীরমুখে পৃথিবী অপেক্ষা করছে মৃত্যুর।আমরা কেউ জানিনা কবে কার সাথে শেষ দেখা হয়ে গেছে। আর কবেই বা দেখা হবে।
ইতিহাসের সূচনা থেকেই এমন মহামারি মানুষকে বিপদে ফেলেছে।
আমরা যদি ফিরে তাকাই ইতিহাসের দিকে, দেখবো যে পৃথিবীর সবচেয়ে পুরনো মহামারি হয়েছিল ৪৩০ খ্রিস্ট পূর্বাব্দে এথেন্সে। জ্বরের সঙ্গে প্রবল তৃষ্ণা, রক্তাক্ত মুখ, জিভা, লালচে হয়ে উঠত ত্বক। সংক্রামক এই রোগ দ্রুত ছড়িয়ে পড়েছিল।
দ্বিতীয় অধ্যায় যদি দেখি, দেখবো যে, ইজিপ্টে ৫৪১ খ্রিস্টাব্দে জাস্টেনিয়ান প্লেগ। ইঁদুরবাহিত এই রোগে মারা যায় বিশ্বের জনসংখ্যার ৫ কোটির ওপর মানুষ! এই রোগে লিম্ফ্যাটিক গ্রন্থি বড় হয়ে যেতো।
একই রকম ভয়াবহতা নিয়ে যুগে যুগে চরিত্র, আকার-আকৃতি পালটে মহামারি মানুষকে যুদ্ধের মুখে ঠেলে দিয়েছে।
তবে চরম বিষণ্ণতা, হতাশা, অন্ধকারের সঙ্গে লড়াই করেও জয় মানবজাতিরই হয়েছে বারংবার। হ্যাঁ, সে হারিয়েছে পরিবার-পরিজনকে। কিন্তু একটা সুন্দর, আলোময় পৃথিবীর সন্ধান দিয়েছে ঠিকই।
মহামারি কোনকালেই জয়ী হয়নি। এবারও হবে না। করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে সারা বিশ্ববাসী জয়লাভ করবেই! এটি নিশ্চিত।
যন্ত্রণা বক্ষে ধারণ করে আমরা এগিয়ে যাবো একটি সুন্দর, পরিষ্কার, বন্ধুত্বপূর্ণ পৃথিবী তৈরি করার লক্ষ্যে। পয়লা বৈশাখে এই হোক আমাদের সংকল্প।
শুভ_নববর্ষ! ১৪২৭ এর শুভেচ্ছা সকল পাঠককে!