শিলচর: অসমের (assam) শিলচর (shilchar) পৌর প্রশাসনের পক্ষ থেকে অস্বাভাবিক কর বাড়ানোর প্রক্রিয়াকে রুখে দিলেন শিলচরবাসী (shilchar)। শহরের গণতান্ত্রিক আন্দোলনে নাগরিকদের সমর্থন দেখে পিছু হটতে বাধ্য হল সরকার।
একে জনগণের ‘নৈতিক জয় ‘ বলে অভিহিত করে এবার সরকারি নিয়োগে বরাক বৈষম্যের অবসানে আবার গণতান্ত্রিক আন্দোলনের হুমকি দিলেন বরাক ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট (BDF) এর মুখ্য আহ্বায়ক প্রদীপ দত্তরায় (pradip dutta roy)।
এক প্রেস বার্তায় প্রদীপ দত্তরায় (pradip dutta roy) বলেন যে ৬১, ৮৩,৮৬ ইত্যাদি সফল গণ আন্দোলনের পর দীর্ঘদিন এই উপত্যকায় (barak valley) তেমন কোন সফল আন্দোলন দেখা যায়নি। সেই কারণেই এবারের অগণতান্ত্রিক পুরকর বৃদ্ধির বিপক্ষে যেভাবে বিভিন্ন সংগঠন ও নাগরিকরা এগিয়ে এসেছেন বা সমর্থন করেছেন তা উল্লেখযোগ্য বলে মন্তব্য করেন তিনি।
বিশেষতঃ নাগরিক স্বার্থরক্ষা সংগ্রাম পরিষদের সভাপতি হরিদাস দত্ত মহাশয় এই বয়সে প্রায় একার চেষ্টায় যেভাবে জনগনকে সংগঠিত করেছেন সেজন্য তাঁকে অকুণ্ঠ অভিনন্দন জানান তিনি।
তিনি বলেন যে এছাড়া এই ইস্যুতে গঠিত ‘নাগরিক অধিকার সুরক্ষা মঞ্চ ‘ থেকে যেভাবে লিফলেট বিতরণ, মাইকিং, জনসংযোগ ইত্যাদি করা হয়েছে, ফোরাম ফর স্যোসাল হারমনির সদস্যরা যেভাবে পথসভা করেছেন এসবও জনগনকে আশ্বস্ত এবং প্রতিবাদী হতে সাহস জুগিয়েছে এবং সেজন্যই নির্ধারিত সময়সীমার মধ্যে মাত্র ৪ শতাংশ নাগরিক ফর্ম জমা দিয়েছেন এবং তারও অধিকাংশ সরকারি আধিকারিক বলে জানা গেছে।
প্রদীপ বাবু (pradip dutta roy) বলেন যে এর মাধ্যমে নাগরিকরা নীরবে তাঁদের প্রতিবাদী অস্তিত্বকে সরব করেছেন এবং তা টের পেয়েই পিছু হটতে বাধ্য হয়েছে সরকার। প্রদীপ বাবু (pradip dutta roy) বলেন যে এর আগে যখন তাঁকে গ্রেফতার করা হয়েছিল তখনও জনগণ প্রচন্ড ক্ষুব্ধ ছিলেন কিন্তু সংগঠিত না থাকায় প্রথমদিকে তাঁরা তেমন কোন প্রতিবাদ করতে পারেননি, এই সরকারের দমন-পীড়ন নীতির জন্য ভয়ভীত হয়ে পড়েছিলেন।
তিনি বলেন যে তখনও সাধন পুরকায়স্থ সহ অসমের (assam) শিলচরের (shilchar) সচেতন নাগরিকদের উদ্যোগে ‘ভাষা আইন সুরক্ষা মঞ্চ বলে একটি যৌথমঞ্চ প্রতিবাদের ডাক দেবার পরই সরকার পিছু হটে তাঁকে মুক্তি দিতে বাধ্য হয়।
এবারও একই ভাবে ঐক্যবদ্ধ প্রতিবাদের জয় হল। তাই তিনি বরাক (barak) বাসীকে আগামীতেও ভয় না পেয়ে অন্যায়ের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ হবার ও প্রতিবাদী হবার আহ্বান জানান।
বিডিএফ (bdf) মুখ্য আহ্বায়ক আরো বলেন যে অনেকদিন ধরে সরকারি চাকরিতে বরাক (barak) বৈষম্য চলছে,যদিও মুখ্যমন্ত্রী নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন যে ক্ষমতায় এলে বরাকের (barak) সব স্থানীয় তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণীর পদ বরাকের প্রার্থীদের জন্য সংরক্ষিত হবে।
এ প্রতিশ্রুতি যেমন পালিত হয়নি তেমনই রাজ্য ভিত্তিক কোন নিয়োগ পরীক্ষার জেলাভিত্তিক উত্তীর্ণদের তালিকাও ইদানীং প্রকাশ করা হয়না। প্রদীপ বাবু (pradip dutta roy) বলেন যে সম্প্রতি ২৮০০০ সরকারি পদে যে নিয়োগ পরীক্ষা নেওয়া হয়েছে তাতে জনসংখ্যার অনুপাতে অন্ততঃ ২৫০০ পদে বরাকের প্রার্থীদের নিয়োজিত হবার কথা।
তিনি বলেন যে তাই আমরা সরকারের কাছে দাবি জানাচ্ছি যে এই পরীক্ষায় উত্তীর্ণদের জেলাভিত্তিক মেধাতালিকা জনসমক্ষে সরকারকে প্রকাশ করতে হবে। তিনি বলেন যে আমরা দেখে নিতে চাই এই উপত্যকা থেকে কজন উত্তীর্ণ হলেন।
কারণ প্রায়ই ব্রহ্মপুত্র উপত্যকার প্রার্থীদের এখানে নিয়োগপত্র দিয়ে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। প্রদীপ বাবু বলেন এই সরকার স্বচ্ছ নিয়োগ প্রক্রিয়া নিয়ে যেহেতু বারবার বিবৃতি দিচ্ছেন তাই এই দাবি মেনে নিতে আপত্তির কিছু থাকতে পারে না।
অন্যথা এই ইস্যুতে আবার গণআন্দোলন হবে বলে মন্তব্য করেন তিনি। বিডিএফ মিডিয়া সেলের পক্ষ থেকে এক প্রেস বার্তায় এই খবর জানিয়েছেন আহ্বায়ক হৃষীকেশ দে।