অসম: অসমে জেহাদী কার্যক্রম নিয়ে চাপান উতোর চলছে শাসকদল বিজেপি ও বিরোধী এইউডিএফ দলের বিধায়কদের মধ্যে। দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি সহ জ্বলন্ত সমস্যা থেকে জনগণের দৃষ্টি ঘুরিয়ে দিতে বিজেপি পরিকল্পিতভাবে এসব নাটক অবতারণা করছে বলে মন্তব্য করলেন বিডিএফ মুখ্য আহ্বায়ক প্রদীপ দত্তরায়।
এক প্রেস বার্তায় প্রদীপ বাবু বলেন যে মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন যে দু একটি মাদ্রাসায় জেহাদীদের গতিবিধির প্রমাণ পাওয়া গেছে এবং বিডিএফ এর পক্ষ থেকে তিনিও দোষীদের কঠোর শাস্তির দাবি জানাচ্ছেন। কিন্তু আবার সেই মুখ্যমন্ত্রীই বলেছেন যে ৯৯ শতাংশ মুসলিমই এসবের সাথে যুক্ত নন এবং তারাই এই ব্যাপারে সরকারকে সতর্ক করে থাকেন। অথচ এরপরও এই নিয়ে কেন বারবার বিতর্ক তৈরি করা হচ্ছে সেখানেই রয়েছে মূল রহস্য।
তিনি বলেন এসবই পরিকল্পিত। এই প্রসঙ্গে অসমের বরাকের করিম উদ্দিন বরভুঁইয়ার নামোল্লেখ করে বলেন যে এই বিধায়ক বিজেপির এজেন্ট এবং তাঁকে জেহাদী ইস্যুতে বক্তব্য রেখে বাজার গরম রাখার দায়িত্ব দিয়েছে শাসকদল। অন্যথা যে বিধায়কের বিরুদ্ধে নথি জাল করার আইনি অভিযোগ রয়েছে এবং কিছুদিন আগে সেজন্য তিনি মুখ্যমন্ত্রীর শরণাপন্ন হয়েছিলেন, তিনি বিজেপির মন্ত্রীদের এই ইস্যুতে চ্যালেঞ্জ জানাচ্ছেন এর চেয়ে আশ্চর্যের কিছু হতে পারেনা।
বিডিএফ মুখ্য আহ্বায়ক বলেন নিঃসন্দেহে এসবের পিছনে বিজেপির মদত রয়েছে। পরিকল্পিত এসব নাটকের মাধ্যমে হিন্দু মুসলিম উভয় সম্প্রদায়ের আবেগে সুড়সুড়ি দিয়ে মূল সমস্যা থেকে জনগণের দৃষ্টি সরিয়ে রাখাই আসল উদ্দেশ্য।
প্রদীপ দত্তরায় বলেন যখন সমস্ত বিরোধী দল দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি নিয়ে সরব হয়েছে ঠিক তখনই এভাবে জনগণকে বিভ্রান্ত করা হচ্ছে। কারণ কেন্দ্রীয় সরকারের বদান্যতায় চিড়ে মুড়ি থেকে শুরু করে রান্নার গ্যাস অবধি সমস্ত সামগ্রীর যেভাবে মূল্যবৃদ্ধি হয়েছে তাতে আম নাগরিকদের নাভিশ্বাস উঠছে। এছাড়া বরাকের অধিকাংশ সমস্যা নিয়েও সরকারের কোন হেলদোল নেই।
একই সময়ে প্রস্তাবিত হয়ে রাজ্যের বাকি জেলায় নতুন মেডিক্যাল কলেজের কাজ অর্ধেকের বেশি এগিয়ে গেছে অথচ করিমগঞ্জ মেডিক্যাল কলেজের কোন খবর নেই।মহাসড়ক,মাল্টি মডেল লজিস্টিক পার্ক, বিবেকানন্দ সাংস্কৃতিক কেন্দ্র, আই টি পার্ক এসবের কাজ কবে শেষ হবে কেউ জানেনা। বরাকের বেকার সমস্যা ভয়াবহ আকার নিয়েছে। এই ব্যাপারে যে সরকারি বৈষম্য চলছে তাতে কোন সন্দেহ নেই।
আসামের রাজধানী শিলং থাকাকালীন বাঙালি সিভিল সার্ভিস আধিকারিকদের সংখ্যা যা ছিল আজ তার ১৫ শতাংশ বাঙালিও এইসব পদে নিয়োগ পাচ্ছেন না। এছাড়া প্রধানমন্ত্রীর প্রতিশ্রুতি সত্ত্বেও কাগজকল বন্ধ হয়েছে। এককথায় সরকারি চূড়ান্ত অবহেলার শিকার হচ্ছেন অসমের বরাকের আম নাগরিক। তাই তিনি বরাকবাসী বিশেষতঃ মুসলিম জনগোষ্ঠীর প্রতি আহ্বান জানান যে তাঁরা যেন এইউডিএফ,বিজেপির এসব পরিকল্পিত ফাঁদে পা না দিয়ে আগামীতে কি করা উচিত তা নিয়ে সঠিক চিন্তাভাবনা করেন ও উপযুক্ত বিকল্প পথ সন্ধানে ব্রতী হন। বিডিএফ মিডিয়া সেলের পক্ষ থেকে এক প্রেস বার্তায় এই খবর জানিয়েছেন আহ্বায়ক হৃষীকেশ দে ও জয়দীপ ভট্টাচার্য।