শিলচর: অসমের বরাকের আর্থ সামাজিক উন্নয়ন এবং স্বকীয়তা রক্ষার লক্ষ্যে ২০২২ সালে যাত্রা শুরু করেছিল ‘পূর্বাচল জয়েন্ট এ্যাকশন কমিটি’। ইতিমধ্যে এই উপত্যকা তথা বহির্বরাকের বিভিন্ন বিশিষ্ট, বিদগ্ধ ব্যাক্তিদের যোগদান, পরামর্শ ও সহযোগিতায় সমৃদ্ধ হয়েছে এই সংগঠন।
এবার বরাকের সমস্ত জাতিগোষ্ঠীর প্রতিনিধিদের সমন্বয়ে আগামী ১৪ই মে শিলচর গান্ধী ভবন প্রেক্ষাগৃহে সারাদিন ব্যাপী ‘বরাক সংহতি উৎসব ‘ পালনের সিদ্ধান্ত ঘোষণা করলেন এই সংগঠনের কর্মকর্তারা।
স্থানীয় পেনশনার্স ভবনে আয়োজিত এক সাংবাদিক সম্মেলনে এই ব্যাপারে প্রারম্ভিক বক্তব্য রাখতে গিয়ে ‘ পূর্বাচল জয়েন্ট এ্যাকশন কমিটির ‘ সভাপতি জয়দীপ ভট্টাচার্য বলেন যে বিভিন্ন সময়ে সামাজিক, ঐতিহাসিক ও রাজনৈতিক কারণে বরাক উপত্যকায় বিভিন্ন জনগোষ্ঠী এসেছেন এবং আবহমান কাল ধরে বসবাস করে আসছেন।
এইসব জনগোষ্ঠীর মধ্যে কখনোই তেমন বিভেদ, বিভাজনের প্রসঙ্গ আসেনি বরং পারস্পরিক সৌহার্দ্য ও নির্ভরতার মধ্য দিয়ে সম্প্রীতি আরো নিবিড় হয়েছে। কিন্তু ইদানীং রাজনীতির কারবারিরা নিজেদের ন্যস্ত স্বার্থে সুকৌশলে এই উপত্যকার ভাষিক ও ধর্মীয় গোষ্ঠীর মধ্যে বিভাজনের বীজ বপন করার চেষ্টা করছেন।
এর প্রতিরোধ করতে হলে সবাইকে আবার এক মঞ্চে আসতে হবে,হাতে হাত ধরতে হবে। বরাকের এই ঐক্যের ঐতিহ্যকে আগলে রাখার জন্যই এই ‘ বরাক সংহতি উৎসব’ পালনের সিদ্ধান্ত। সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক সাধন পুরকায়স্থ এদিন বলেন যে জনবিন্যাসের সামুহিক বৈচিত্র্যের নিরিখে বরাক উপত্যকাকে ‘মিনি ভারত’ বলা যেতে পারে।
কুকি,নাগা,কোচ, মনিপুরী,ডিমাসা, বিষ্ণুপ্রিয়া ,খাসি সহ প্রায় ১৮ টি জনগোষ্ঠীর বাসভুমি এই উপত্যকা। এবং এইসব প্রতিটি জনগোষ্ঠীর সমৃদ্ধ কৃষ্টি, সংস্কৃতির সমন্বয়ে এই উপত্যকার স্বকীয় বহুমুখী সংস্কৃতি গড়ে উঠেছে।
সাধন বাবু বলেন আগামী ১৪ মের অনুষ্ঠানে এই সমস্ত জনগোষ্ঠী তাদের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশন করবেন । তাই এদিনের উৎসবকে একটি সাংস্কৃতিক সমারোহ বলা যেতে পারে। তিনি বলেন পারস্পরিক ঐক্য ও সম্প্রীতির যে দীর্ঘ ঐতিহ্য এই উপত্যকাতে রয়েছে, এদিনের উৎসবে তাই আরো সুদৃঢ় হবে বলে তাঁর দৃঢ় বিশ্বাস।