অসমের সবকটি গ্রামীণ সড়ক সাইকেলে চড়ে পরিদর্শন করবেন এবৎ গতিতে বিহিত ব্যবস্থা করবেন বলে রাজ্যের পুর্তমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মার ঘোষণাকে সামনে রেখে বরাক উপত্যকার গেটওয়ে হিসেবে কথিত কাটিগড়া কেন্দ্রের গ্রামীণ সড়কসমূহের বাস্তব অবস্থা সাইকেলে চড়ে পরখ করার দাবী জানিয়েছেন সড়ক যন্ত্রণায় নাকাল গ্রাম কাটিগড়ার ভুক্তভোগী জনগণ।
এমজিএনরেগার মাধ্যমে নির্মীয়মান গ্রামাঞ্চলের সড়ক পথগুলোর অবস্থা যেমন কহতব্য নয়,তেমনি পুর্ত সড়কগুলোর অবস্থাও রীতিমত লজ্জাজনক ।
এই পরিস্থিতিতে বর্তমান পরিবর্তনশীল রাজ্য সরকারের সেকেণ্ড-ইন-কমাণ্ড মন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মার দৃষ্টি আকর্ষণ করছেন এবং যে আস্থা ভরসা নিয়ে দরাজহস্তে জনগণ ভোট দিয়েছেন,এর সঠিক মূল্যায়ন যেন হয়। সেদিকে খেয়াল রাখার আর্জি জানিয়েছেন ভুক্তভোগীরা।
একাংশ আস্থাহীন,অদক্ষ ঠিকাদার ও বিভাগীয় খামখেয়ালীপনায় কালাইন-শিলচর রোড,ডিগাবর রোড,গুমড়া-নাতানপুর রোড,বিহাড়া-কাম্বারবাজার সহ প্রধানমন্ত্রী গ্রামীণ সড়ক যোজনার অন্তর্গত অধিকাংশ পুর্ত সড়ক এবং,বিএডিপি, এসওপিডি-জির অর্থনাকূল্যে নির্মীয়মান অধিকাংশ গ্রামীণ সড়কের বেহাল পরিস্থিতি বলে অভিযোগ উঠছে ।
এদিকে, অনেকাংশ সড়কের নির্মাণ কাজ চলছে,তবে কাজের গুণগতমান সহ কাজের মেয়াদ নিয়ে অবশ্যই প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে জনমানষে
। সম্প্রতি বেশ কয়েকটি সড়ক নির্মাণের ক্ষেত্রে সিসিব্লক ব্যবহার করা হচ্ছে। বলতে গেলে সিসিব্লকের মাধ্যমে সড়ক নির্মাণ করা হচ্ছে। এক্ষেত্রেও রয়েছে অভিযোগ । যদিও কাজের টেকনিক্যাল দিক্ নিয়ে সাধারণ মানুষ কিছু বলতে পারছেন না। তবে কাজে গলদ রয়েছে বলে অনেকেরই অভিযোগ ।
অন্যদিকে, সীমান্তবর্তী এলাকার আক্তার উদ্দিন,তাহির উদ্দিন,আব্দুল হালিম,জয়নুল উদ্দিন,প্রেমেন্দ্র রায়,দিপক দাস,হিমাংশু রায় সহ অনেকেই রাজাটিলা-সাদিরখাল সীমান্তবর্তী পুর্তসড়কের প্রায় সাড়ে ৮ কিলোমিটার দীর্ঘ সড়কের রাজাটিলা-হরিনগর অংশের প্রায় সাড়ে ৩ কিলোমিটার সড়কের বেহাল অবস্থা নিয়ে পুর্ত বিভাগের আদ্যশ্রাদ্ধ করেন।
চল্লিশ থেকে পয়তাল্লিশ হাজার মানুষের পথ চলাচলের একমাত্র সড়কপথটি নিয়ে রাজ্য সরকারের চরম উদাসীনতা প্রসঙ্গে রীতিমতো ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন তারা ।
তাদের অভিযোগ, সড়ক সমস্যায় জর্জরিত সীমান্তবাসীর মধ্যে ক্ষোভ চরম আকার ধারণ করলে, ক্ষোভ প্রশমিত করতে সময় সময় কয়েক গাড়ি মাটি ফেলে লেফাফাদুরস্ত ফর্মুলায় কাজ সম্পন্ন করে দায় সারে রাজ্যের পুর্ত দপ্তর । বৃহৎ আকারের দুটি কালভার্টের ক্ষেত্রেও একই সমস্যা ।
কালভার্ট ভাঙ্গনের ফলে একসমর যাতায়াত ব্যবস্থা পুরোপুরি ভেঙে পড়ে। এলাকার যাতায়াত ব্যবস্থা স্তব্ধ হয়ে পড়ায় দল-মতের উর্ধ্বে উঠে একজোট হয়ে ভেঙে পড়া যাতায়াত ব্যবস্থাকে দ্রুত সারিয়ে তুলতে তীব্র প্রতিবাদ গড়ে তুলেন সীমান্তবাসী। তখনই টনক নড়ে বিভাগীয় হর্তাকর্তা সহ শাসকদলীয় বিধায়কের।
শুরু হয় কালভার্ট নির্মাণের কাজ। কিন্তু আশ্চর্যজনকভাবে দুটি কালভার্ট নির্মাণের ক্ষেত্রেও চরম উদাসীনতা পরিলক্ষিত হয় বলে জানান তাহির উদ্দিনরা। দুটি কালভার্টের ক্ষেত্রে দুই ঠিকাদার নিয়োজিত করা হয়। ঠিকাদাররাও নমঃনমঃ করে কাজ সেরে উধাও হয়ে গেছেন বলে তাদের অভিযোগ ।
নবনির্মিত দুটি কালভার্টের নির্মাণকার্য প্রত্যক্ষ করলে অবশ্যই স্পষ্ট হয়ে উঠবে কাজের নমুনা । সাইডবাম নেই,নেই এপ্রোচ। এই পরিস্থিতিতে নবনির্মিত কালভার্ট দুটির মেয়াদ ক‘দিন? তা অবশ্যই ভাবনার বিষয়।
সুতরাং এই সমস্ত আধা-অধরা কাজসমূহের সঠিক তদন্ত সহ কাজের সঠিক মূল্যায়নের প্রতি পরিবর্তনশীল রাজ্য সরকারের আরও বেশি যত্নশীল ও দায়িত্বপূর্ণ হওয়ার প্রয়োজন রয়েছে বলে মনে করেন স্থানীয় নাগরিকবৃন্দ ।
অন্যথায় সেই গতবাঁধা পরিস্থিতিই বহাল থেকে যাবে,পরিবর্তন আর পরিবর্তনশীল সরকারের প্রতি সাধারণ মানুষের আস্থা হারিয়ে যেতে পারে।
আর তা মোটেই অসম্ভব নয় বলে মনে করেন ভুক্তভোগী জনতা ।