উত্তর পূর্বাঞ্চল, বিশেষত অসমে ‘ডাইনি’ আখ্যা দিয়ে সমাজের মানুষের প্রতি অত্যাচার দিনে দিনে বৃদ্ধি পাচ্ছে। মানুষের রোগ-শোক হলে, ডাক্তার না দেখিয়ে, সে রোগের কারণ ‘ডাইনির নজর’ বলে মনে করা হচ্ছে। এবং গ্রামের কাউকে ‘ডাইনি’ সন্দেহ করে নির্মমভাবে মেরে ফেলা ফেলা হচ্ছে।
এমনই এক ঘটনায় গোয়ালপাড়া জেলা তথা ন্যায়িক দণ্ডাধিশ আদালত বুধবার মোট ৮ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডে দণ্ডিত করেছে।
ন্যায়াধীশ টি কে ভট্টাচাৰ্য এই শাস্তির নির্দেশ দিয়েছেন।
‘ডাইনি’ আখ্যা দিয়ে ধৃত ৮ জন ধূপধরা থানার অন্তর্গত মেধিকোনার ৭০ বছরের মুধেশ্বরী রাভাকে হত্যা করেছিলেন।
৮ অভিযুক্তের মধ্যে ৬ জন পুরুষ ২ জন মহিলা।
তাঁদের নামঃ যোগেশ রাভা, সোবে রাভা, নগেন রাভা, শান্তা রাভা, কানুবালা রাভা, খগেন রাভা, হেন্দেলি রাভা এবং ছুটু রাভা।
৭ বছর পূর্বে ২০১২ সালের ৩ মার্চ ভোর ৩ টার সময় মুধেশ্বরী রাভাকে ৮ জন মিলে আক্রমণ করে প্রচণ্ড প্রহার করে। সেই প্রহারেই জীবন যায় মুধেশ্বরীর।
এর পরই মুধেশ্বরী রাভার পুত্র রাজু রাভা ধূপধরা থানায় অভিযোগ দায়ের করেন।
আদালতের রায়ে বলা হয়েছে,সমস্ত পরিস্থিতি তথা তথ্য বিচার করে অভিযুক্তদের ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩০২/১৪৯ ধারার অধীনে দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছে এবং যাবজ্জীবন কারাদণ্ডে দণ্ডিত করা হয়চ। পাশাপাশি ৫ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। এবং জরিমানা অনাদায়ে আরও অতিরিক্ত ছয় মাস সশ্রম কারাদণ্ডের নির্দেশ দিয়ে মামলার চূড়ান্ত রায়দান করা হয় আদালত পক্ষ থেকে।
প্রসঙ্গত, কোকরাঝার জেলা এই সংক্রান্ত ঘটনায় শীর্ষস্থানে রয়েছে।
গত ১৮ বছরে অসমে ১৬১ টি হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হয়েছে শুধুমাত্র ‘ডাইনি’ সন্দেহে। যার মধ্যে কোকরাঝারে জেলায় সৰ্বাধিক ৪৫ টি এমন মর্মান্তিক ঘটনা ঘটেছে।