মহাপঞ্চমীর প্রাক্ সন্ধ্যায় প্রতি বছরের মতই এক অনাড়ম্বর অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ো প্রকাশিত হলো ‘স্ফুরণ’ সাহিত্য পত্রিকার শারদ সংখ্যা।
বৃহস্পতিবার করিমগঞ্জে বদরপুর নবীনচন্দ্র কলেজের প্রাক্তন অধ্যক্ষ,ভাষা সেনানি তথা প্রখ্যাত লেখক,প্রবন্ধকার অধ্যাপক নিশীথরঞ্জন দাসের হাত ধরে আনুষ্ঠানিকভাবে উন্মোচিত হয় স্ফুরণ’ সাহিত্য পত্রিকার শারদ সংখ্যা। উন্মোচন অনুষ্ঠানের প্রাক্ সন্ধ্যায় অধ্যাপক নিশীথরঞ্জন দাস সহ উপস্থিত ছিলেন বিশিষ্ট কবি ও গল্পকার শংকর চক্রবর্তী এবং পত্রিকার সম্পাদক বিশ্বজিৎ দাস ও সাহিত্য জগতের অন্যান্য বিশিষ্ট ব্যাক্তিবর্গ।
উন্মোচন অনুষ্ঠানে প্রাসঙ্গিক বক্তব্য রাখতে গিয়ে অধ্যাপক নিশীথরঞ্জন বলেন, ইন্দো-বাংলা সীমান্তবর্তী করিমগঞ্জের মতো সর্বক্ষেত্রে পিছিয়ে পড়া প্রত্যন্ত জেলায় লিটিলম্যাগ পরিচালনা করা ও ওই পত্রিকার শারদ সংখ্যা প্রকাশ করা অনেক কষ্টসাধ্য ও সাহসী পদক্ষেপ ।
তবে কথায় আছে লক্ষ্যের প্রতি নিষ্ঠাবান থাকলে সফলতা ধরা দিতে বাধ্য। সেইদিক থেকে স্ফুরণ পত্রিকাগোষ্ঠী এক উৎকৃষ্ট উদাহরণ । আসলে সব অসাধ্য ও কষ্ট এবং সমালোচনা উপেক্ষা করে মননশীল পাঠকদের কাছে এই শারদে অন্য রকম শারদ উপহার দেওয়ায় তিনি বিশেষ করে সাহিত্য পত্রিকার সম্পাদক ও স্ফুরণ সাহিত্য পত্রিকার বেড়ে উঠার নেপথ্য কারিগরদের শুভেচ্ছা জ্ঞাপন করেন।
গল্পকার শংকর চক্রবর্তীর কথায় ,স্ফুরণের বরাবরই পাঠকদের কাছে চমৎকার লেখা উপহার দেয়।বঞ্চিত,নিপিড়ীত মানুষের জীবনযাত্রার অদেখা বহু বাস্তব তথ্য সহজ সরল ভাষায় সাহিত্যের মাধ্যমে তুলে ধরার নিরলস প্রয়াস সত্যিকার অর্থে প্রশংসনীয় ।বৃহস্পতিবার উন্মোচিত এবছরের শারদ সংখ্যাও এর ব্যতিক্রম নয়।
আগামীদিনে সাহিত্যের প্রতি দায়বদ্ধতা রক্ষা করবে স্ফুরণ,প্রত্যয় ব্যক্ত করেন শংকর।সম্পাদক বিশ্বজিৎ দাস বলেন, গত বছর প্রথম শারদ সংখ্যা প্রকাশিত হওয়ার পর পাঠক মহলে বিরাট সাড়া পাওয়ায় এবছর দ্বিতীয় শারদ সংখ্যা প্রকাশ করার সাহস জুটিয়েছেন। মূলত পাঠকদের উৎসাহে উৎসাহিত হয়েই এই প্রয়াস।
আর্থিক মন্দা ও দুর্মূল্যের বাজারে লিটিলম্যাগ প্রকাশ করা অত্যন্ত কঠিন ও ব্যয়বহুল। এরপরও সম্মানিত পাঠক মহলের উৎসাহ এবং আবদারের প্রতি খেয়াল রেখে এবছর শারদ সংখ্যা প্রকাশের উদ্যোগ নেওয়া হয়।বরাক উপত্যকার স্বনামধন্য লেখক ছাড়াও ত্রিপুরা, গুয়াহাটি ও পশ্চিমবঙ্গের লেখকরাও এবারের সংখ্যায় মূল্যবান লেখা দিয়েছেন।
মূলত বিকল্প স্বরের সন্ধান ও সেরা কলমচীদের লেখনী প্রকাশ করার ছোট্ট একটা চেষ্টার ফসল স্ফুরণ। দেশে ফ্যাসিবাদি আক্রমণ ও বিভাজনের রাজনীতির বিরুদ্ধে সাহিত্যের বলিষ্ঠ ভূমিকা পালন করবে স্ফুরণ,সেই কাজ সাহিত্যের মাধ্যমে তুলে ধরার প্রয়াস স্ফুরণের শারদ সংখ্যার মূল লক্ষ্য বলে দাবি করেন সম্পাদক ।
উন্মোচনী অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন পত্রিকার প্রকাশক ঝিমলী রায়।